৩৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের ভয়াবহ পরিণতি, স্বামীর অপরাধ ফাঁস হওয়ার গল্প

অনলাইন ডেস্ক

১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪০ পিএম

ফ্রান্সের ছোট গ্রাম মাজানে জীবনের অবসর সময় শান্তিতে কাটানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন ৫৮ বছরের গিসেল পেলিকট। তবে ২০২০ সালের এক অভাবনীয় সত্য প্রকাশ তার ৫০ বছরের সংসারজীবনকে ধ্বংস করে দেয়। গিসেল জানতে পারেন, তার স্বামী ডমিনিক পেলিকট এক দশক ধরে তাকে চেতনাহীন করে যৌন নির্যাতন করেছেন এবং আরও বহু অপরিচিত ব্যক্তিকে একই কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন।

২০১১ সালে, গিসেলের শারীরিক দুর্বলতা এবং অতিরিক্ত ঘুমের সমস্যা শুরু হয়। তিনি ভাবেন এটি শারীরিক কোনো রোগের ফল।গিসেলের স্বামী ডমিনিক ইন্টারনেটে বেআইনি ও যৌনতথ্যপূর্ণ চ্যাটরুমে আসক্ত ছিলেন।সেখানে তিনি অন্য একজনের কাছ থেকে শেখেন কীভাবে ঘুমের ওষুধ দিয়ে কাউকে চেতনাহীন করা যায়। এভাবেই গিসেলের খাবারে ওষুধ মিশিয়ে তাকে অচেতন করা শুরু করেন তিনি।

ডমিনিক শুধু নিজে গিসেলকে যৌন নির্যাতন করতেন না; তিনি ইন্টারনেট চ্যাটরুমে "উইদাউট হার নলেজ" নামে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে অপরিচিত পুরুষদের আমন্ত্রণ জানাতেন তার স্ত্রীর ওপর একই কাজ করার জন্য। তিনি এসব ঘটনা ভিডিও করতেন এবং এই অপরাধের মধ্যে ৭১ জন অপরিচিত ব্যক্তিকে যুক্ত করেন।

২০১৪ সালে তারা মাজানে বসবাস শুরু করেন। এই সময়েই ডমিনিক তার অপরাধের কৌশল আরও নিখুঁত করে তোলেন। তিনি গোপনে বিভিন্ন ধরনের ট্র্যাঙ্কুলাইজার মজুত রাখতেন।এতে গিসেলের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ডমিনিক এক সুপারমার্কেটে গোপনে নারীদের পোশাকের নিচের ছবি তুলতে গিয়ে ধরা পড়েন। এরপর পুলিশের তদন্তে তার ফোন ও ল্যাপটপ থেকে ২০,০০০ এর বেশি ভিডিও ও ছবি উদ্ধার করা হয়।গিসেল তখন জানতে পারেন তার স্বামী তাকে বছরের পর বছর ধরে নির্যাতন করেছেন। এই তথ্য জানার পর তার জীবন মুহূর্তে বদলে যায়।

২০২৪ সালে আদালতে বিচার শুরু হয়। গিসেল তার পরিচয় গোপন না রেখে আদালতে উপস্থিত হন। তার মতে, এমন অপরাধ গোপন না রেখে এ নিয়ে কথা বলা উচিত, যাতে অন্য নারীরা সচেতন হতে পারেন।

গিসেলের জীবন এখন অনেকটাই বদলে গেছে। তিনি তার maiden নাম ব্যবহার করছেন এবং মাজান ছেড়ে অন্য গ্রামে বসবাস করছেন।গিসেল তার সাহসিকতা অন্যদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে, বিশেষ করে যারা এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।গিসেলের ভাষায়: "আপনার কখনোই এমন অপরাধ কল্পনা করা উচিত নয়। কিন্তু সত্য জানার পর সেটিকে গ্রহণ করে লড়াই করতে হবে।" তথ্যসূত্র : বিবিসি

বিভাগ : আন্তর্জাতিক