ঢাকা   মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১

ঈদের দিনে দেখতে চাই ইসলামী ভ্রাতৃত্বের চেহারা

Daily Inqilab আবু তাশরীফ

২১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৭ পিএম

মুসলমানদের ঈদ দু’টি। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। রমজানুল মুবারকের পরেই আসে শাওয়াল মাস। শাওয়ালের পয়লা তারিখেই ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়। ২৯ তম রমজানের সন্ধ্যায় নতুন চাঁদ দেখা গেলে পরের দিনই অনুষ্ঠিত হয় ঈদুল ফিতর। তা না হলে রমজানের ৩০ তম দিন পার করেই আসে ঈদুল ফিতর। ঈদ আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। এটা যেমন দ্বীনিভাবে, তেমনি পার্থিব ও জাগতিক দিক থেকেও। যারা হক আদায় করে, যথার্থ সুনিয়ত ও সদাচারের সঙ্গে গুনাহমুক্ত থেকে সারা মাস রোজা রেখেছেন ঈদের দিনটি তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও পুরস্কারপ্রাপ্তির দিন। অপর দিকে টানা এক মাস দিনের বেলায় ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত ও সংযত থেকে রোজা রাখার পর প্রথম এ দিনটিতে দিনের বেলায় খানাপিনার সুন্দর সুযোগ থাকে। অনুমোদিত পর্যায় পর্যন্ত আনন্দ করা, ভালো পোশাক পরা, সুগন্ধির ব্যবহার, ভালো খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকে।

এ ছাড়া এদিনটির সামাজিক আবেদনের একটি বিরাট দিগন্তও বিদ্যমান। এদিনে প্রতিটি মুসলিম দেশ ও সমাজেই উৎসবের একটি আমেজ বিরাজ করে। বাচ্চা-কাচ্চারা নতুন পোশাক ও ভালো খাবারের বিষয়টি উপভোগ করে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু বিত্তহীনতা, দারিদ্র, সংকট ও অভাব অন্য বহু সময় ও পরিস্থিতির মতো এ দিনেও একটি বেদনাঘন চিত্রের জন্ম দেয়। গরিব মানুষেরা ঈদের আনন্দে নিজেরাও শরীক হতে পারে না, শরীক করতে পারে না নিজেদের শিশু সন্তানদেরও।

এ কারণে আনন্দের এ দিনটিতেও বিরাট সংখ্যক মানুষের জীবন কেটে যায় কিছুটা নিরানন্দে। অথচ সচ্ছল, বিত্তবান প্রতিবেশী মুসলমানরা তাদের দিকে খেয়াল রাখলে পরিস্থিতি এমন হতো না। সদকাতুল ফিতর, জাকাতসহ সাধারণ দান, হাদিয়া ও উপহারের চর্চা দরিদ্র মুসলমানদের প্রতি ব্যাপক হলে ঈদের দিনের আনন্দের চিত্রটি অনেক বেশি সুন্দর হতো, সুখের হতো, ছওয়াবেরও হতো।

একথা সত্য যে, এদেশে বিত্তবান ব্যবসায়ী, রাজনীতিকসহ সচ্ছল মানুষের বিরাট একটি সংখ্যা যথার্থ কিংবা অযথার্থ নিয়তে হলেও গরিব মানুষদের হাতে ঈদ উপলক্ষে কিছু উপহার কিংবা অর্থকড়ি তুলে দিয়ে থাকেন। বাহ্যিকভাবে এর কিছু সুফলও লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অর্থকড়ির নগদ প্রবাহে ভাটা, সংকোচন, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি এবং রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের সমস্যাপূর্ণ পরিস্থিতি গরিবদের প্রতি এ ধরনের দান-খয়রাতের ব্যাপকতা ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে।

এতে গরিব মানুষেরা অনেক বিপন্ন ও নিঃসঙ্গ বোধ করেছেন। আমাদের সামনে আবারো ঈদুল ফিতর। এ সময়ে এ দিকটির প্রতি সামর্থ্য ও স্বচ্ছলতা অনুযায়ী প্রত্যেকেরই খেয়াল রাখা উচিত। এ ক্ষেত্রে কেবল অধিক বিত্তবানদের কিছু করার জন্য অপেক্ষা না করে বিত্তবান, মধ্যবিত্ত ও স্বল্পবিত্ত সবারই কিছু না কিছু পদক্ষেপ থাকলে ইসলামী ভ্রাতৃত্বের একটি উজ্জ্বল চেহারা আমরা দেখতে পাব।

সংযম ও তাকওয়ার দীক্ষা গ্রহণের মাসের শেষে আনন্দের দিনটিতে একটি মুসলিম সমাজ ও দেশে ইসলামী ভ্রাতৃত্বের উজ্জ্বল একটি চেহারা প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনাটিকেই আমরা বড় করে দেখতে চাই। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন।


বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা