‘তাক বাই গণহত্যা’র বিচার না হওয়ায় উদ্বেগ মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের

৮৫ মুসলিম হত্যার ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন থাই প্রধানমন্ত্রী

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম

 দক্ষিণাঞ্চলীয় থাইল্যান্ডে ২০ বছর আগে ৮৫ জন মুসলিম বিক্ষোভকারীকে হত্যার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী পাইটংটার্ন সিনাওয়াত্রা। গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালে যা ঘটেছে, তার জন্য আমি গভীরভাবে দুঃখিত এবং সরকারের পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাইছি।’
২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর থাইল্যান্ডের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তাক বাইতে এ নৃশংস হত্যাকা- সংঘটিত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার শাসনামলে আন্দোলনরত মুসলিমদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের সময় এ ঘটনা ঘটে। প্রথমে থানার বাইরে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই সাতজন নিহত হন। পরবর্তীতে আটককৃত ৭৮ জনকে হাত-পা বেঁধে সামরিক ট্রাকের পেছনে ঠাসাঠাসি করে নেওয়ার সময় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়। ‘তাক বাই গণহত্যা’ নামে পরিচিত এই ঘটনাটি তৎকালীন সময়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় তুলেছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, বিগত দুই দশকেও এই নৃশংস হত্যাকা-ের জন্য একজন ব্যক্তিকেও দায়ী করা সম্ভব হয়নি। গত দুই মাসে দুই দফায় অভিযুক্তদের বিচারের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করা হলেও তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
আগস্ট মাসে একজন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল এবং ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতাসহ সাতজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে আদালত। কিন্তু অভিযুক্তদের কেউই শুনানিতে হাজির হননি। গত মাসে আরো আটজনের বিরুদ্ধে পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন থাইল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেল। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে। আদালত সকল অভিযুক্তদের আগামী শুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেও দেশটির আইন অনুযায়ী মামলার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকায় বাস্তবে তা অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
ফলে দীর্ঘ সময় পর যখন এই গণহত্যার বিচারের একটি প্রচেষ্টা দৃশ্যমান হয়েছে, ঠিক তখনই আইনের এই জটিলতার কারণে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আশাহত। এ ব্যাপারে থাই প্রধানমন্ত্রী পাইটংটার্ন সিনাওয়াত্রা বলেছেন, ‘বিষয়টিকে রাজনীতিকরণ করা উচিত হবে না। এবং সংবিধানের লঙ্ঘন ঘটিয়ে এর সীমা বাড়ানো ঠিক হবে না’।
অন্যদিকে, ভুক্তভোগীদের পরিবারের আইনজীবী রাতসাদা মনুরতসাদা বলেন, ‘যদিও মামলার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ইতিহাস ও স্মৃতির কোনো শেষ নেই। এই পরিবারগুলো কখনোই ভুলবে না যে, অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি’।
জাতিসংঘও এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ‘এ গণহত্যার তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়ে থাইল্যান্ড স্পষ্টতই মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।’ সূত্র : রয়টার্স।


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বিশাল ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র শহর উন্মোচন করলো ইরানের আইআরজিসি
প্যাসিফিকা ইনস্টিটিউটের বার্ষিক ইফতারে শরিক অন্য ধর্মাবলম্বীরাও
তাকওয়াভিত্তিক সমাজ গঠনে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব
নিজ দেশেই অবাঞ্ছিত নেতানিয়াহু
বিষয়ভিত্তিক কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৭ ইরানি বিশ্ববিদ্যালয়
আরও
X

আরও পড়ুন

গাজায় ইহুদী হামলায় ১০ দিনে ৩২২ শিশু শহীদ

গাজায় ইহুদী হামলায় ১০ দিনে ৩২২ শিশু শহীদ

মিয়ানমারে আবারও ত্রাণ সহায়তা পাঠাল বাংলাদেশ

মিয়ানমারে আবারও ত্রাণ সহায়তা পাঠাল বাংলাদেশ

চলতি মাসে ঢাকায় আসছে আইএমএফের দল

চলতি মাসে ঢাকায় আসছে আইএমএফের দল

গাজার সাথে জড়িত 'সব পক্ষ'কে যুদ্ধ বিষয়ক আইন মানতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র

গাজার সাথে জড়িত 'সব পক্ষ'কে যুদ্ধ বিষয়ক আইন মানতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র

বিএনপি নেতা বাবুল মিয়ার ইন্তেকাল

বিএনপি নেতা বাবুল মিয়ার ইন্তেকাল

স্বৈরাচারমুক্ত বাংলায় স্বস্তির ঈদ উদযাপন, নতুন মাত্রায় পাপেট বিতর্ক

স্বৈরাচারমুক্ত বাংলায় স্বস্তির ঈদ উদযাপন, নতুন মাত্রায় পাপেট বিতর্ক

রহস্যজনক নিখোঁজদ সেই ৩ মার্কিন সেনার সন্ধান

রহস্যজনক নিখোঁজদ সেই ৩ মার্কিন সেনার সন্ধান

ঈদের ছুটিতে ভাষা শহীদ রফিক সেতুতে উপচে পড়া ভিড়

ঈদের ছুটিতে ভাষা শহীদ রফিক সেতুতে উপচে পড়া ভিড়

সাভারে নৈশ প্রহরীকে গুলি করে হত্যা

সাভারে নৈশ প্রহরীকে গুলি করে হত্যা

পুলিশের গুলিতে শহীদ রাসেলের পরিবারের পাশে হাসনাত আব্দুল্লাহ

পুলিশের গুলিতে শহীদ রাসেলের পরিবারের পাশে হাসনাত আব্দুল্লাহ

পশ্চিমবঙ্গে আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণ, শিশুসহ নিহত ৭

পশ্চিমবঙ্গে আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণ, শিশুসহ নিহত ৭

ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশঙ্কা জাপানে, ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে

ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশঙ্কা জাপানে, ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে

চুয়াডাঙ্গায় ডিসকাউন্ট নিয়ে বিরোধ, সিঙ্গার শোরুমে মারধর; ছাত্রদল নেতা মোমিন মালিতার বিরুদ্ধে জিডি

চুয়াডাঙ্গায় ডিসকাউন্ট নিয়ে বিরোধ, সিঙ্গার শোরুমে মারধর; ছাত্রদল নেতা মোমিন মালিতার বিরুদ্ধে জিডি

বন্দরে গণমাধ্যম কর্মীকে কুপিয়ে জখম, বিএনপি অফিস ভাংচুর

বন্দরে গণমাধ্যম কর্মীকে কুপিয়ে জখম, বিএনপি অফিস ভাংচুর

নারায়ণগঞ্জ বন্দরে ৪ ও ৫ এপ্রিল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানোৎসব

নারায়ণগঞ্জ বন্দরে ৪ ও ৫ এপ্রিল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানোৎসব

ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত

ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত

জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক মার্কিন পুরস্কার, যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক মার্কিন পুরস্কার, যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

সাভারে বিএনপি নেতা খোরশেদ আলমকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ, আটক ২

সাভারে বিএনপি নেতা খোরশেদ আলমকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ, আটক ২

শহীদের স্বীকৃতি পেলেন সেই যুবক, পরিবার পেল ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র

শহীদের স্বীকৃতি পেলেন সেই যুবক, পরিবার পেল ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র

দাউদকান্দিতে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি নেতাকে অব্যাহতি

দাউদকান্দিতে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি নেতাকে অব্যাহতি