ইসরাইলের নৃশংসতার প্রমাণ প্রকাশ্যে
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ এএম
আন্তর্জাতিক সমর্থন না থাকলেও যুদ্ধ চালিয়ে যাবে ইসরাইল
গাজায় ইসরাইলের অফিসারসহ আরো ১০ সেনা নিহত
ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় আরো দুর্ভোগে গাজাবাসী
৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসকে সমর্থন করে, নতুন জরিপে প্রকাশ
ইনকিলাব ডেস্ক
আল জাজিরা দ্বারা প্রাপ্ত ভিডিও এবং স্থির চিত্রগুলো দেখায় যে, উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের পশ্চিমে আল-ফালুজা এলাকায় শাদিয়া আবু গাজালা স্কুলের ভিতরে লাশের স্তুপ জমে আছে। বুধবার উত্তর গাজা উপত্যকার ওই স্কুলে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে নিহত এক ডজনেরও বেশি ফিলিস্তিনির লাশ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ইসরাইলি বাহিনী তাদের আত্মীয়দের ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে, যারা ভিতরে আশ্রয় নিচ্ছিল।
স্কুলটি ইসরাইলের বোমাবর্ষণে বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেখানে অন্তত ১৫টি গুলিবিদ্ধ ও পচা লাশ পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী এবং নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন, ইসরাইলের সেনারা তাদের ফাঁকা জায়গায় গুলি করেছে। মঙ্গলবার-বুধবার রাতে নিহতদের হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে, তবে এটি নিশ্চিত করা যায়নি। মৃতদেহের মর্মান্তিক ফুটেজ আল জাজিরা প্রাপ্ত করেছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে। এর আগে বুধবার, ইসরাইল জাবালিয়ায় জাতিসংঘ পরিচালিত আবু হুসেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গোলাবর্ষণ করে, এতে কয়েক ডজন লোক নিহত ও আহত হয়। ইসরাইল ক্রমাগত স্কুল এবং হাসপাতালগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যেখানে নৃশংস ইসরাইলি বিমান ও স্থল অভিযানে বাস্তুচ্যুত কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে।
মধ্য ও দক্ষিণ গাজার কিছু অংশে, পাশাপাশি গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সেখানে কমপক্ষে ১৯৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনেও তাদের সামরিক অভিযান সম্প্রসারিত করেছে। ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ১৮,৬০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরাইলে সংশোধিত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,১৪৭ জনে।
আন্তর্জাতিক সমর্থন না থাকলেও যুদ্ধ চালিয়ে যাবে ইসরাইল : গাজায় বিপুল সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং চরম মানবিক সংকট তৈরি হবার কারণে ইসরাইল ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে। তবে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক সমর্থন থাকুক কিংবা না থাকুক তারা গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে একটি সামরিক ঘাটিতে সৈন্যদের উদ্দেশে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও বলেছেন, বিজয় অর্জন এবং হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত ইসরাইল যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। ‘কোন কিছুই আমাদের থামাতে পারবে না। আমরা শেষ পর্যন্ত যাব, বিজয় পর্যন্ত। এর চেয়ে কম হবেনা,’ বলেন তিনি।
গাজায় যুদ্ধ বিরতির আহবান জানিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেছেন যে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামালার কারণে ইসরাইল আন্তর্জাতিক সমর্থন হারাচ্ছে। গাজায় চলমান ইসরাইলের হামলা নিয়ে জাতিসংঘের সাথে দেশটির সম্পর্ক সর্বকালের সবচেয়ে তলানিতে এসে ঠেকেছে। অন্যদিকে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ে একটি টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধের জন্য তিনি যে কোন উদ্যোগে রাজি আছেন। কবে হামাসকে বাদ দিয়ে কোন আয়োজন করা যাবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে ইসরাইল হামাসকে নির্মূল করতে চায়।
জাতিসংঘ এবং অনেক দেশ মনে করে যে পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপন করা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। কিন্তু পশ্চিমতীরে তীরে বসবাসরত ইসরাইলিরা সেটির চরম বিরোধিতা করে। পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ করা নেতানিয়াহু সরকারের প্রধান এজেন্ডা। কিন্তু এ বিষয়টি ইসরাইলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিরোধের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজায় ইসরাইলের অফিসারসহ আরও ১০ সেনা নিহত : ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে সংঘর্ষের সময় তাদের ১০ সেনা নিহত হয়েছে। গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে ইসরাইলি বাহিনীর জন্য এটি ছিল সবয়ে ভয়ঙ্কর দিন। নিহত ইসরাইলি সেনাদের মধ্যে একজন লেফট্যানেন্ট কর্নেল রয়েছেন, যার শেষকৃত্য বৃহস্পতিবার জেরুসালেমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল।
হামাসের হাতে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব নাগরিক জিম্মি হিসেবে আটক রয়েছেন তাদের পরিবারের সাথে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৈঠক করেছেন। জিম্মিদের পরিবারের সাথে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এটাই সরাসরি বৈঠক। হোয়াইট হাউজে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও উপস্থিত ছিলেন। পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী যেসব চরমপন্থি ইহুদি ফিলিস্তিনিদের উপর আক্রমণ করেছে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেবার আহবান জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন।
ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় আরও দুর্ভোগে গাজাবাসী : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলা বন্ধ হয়নি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শীতকালীন বৃষ্টি। ভারী বৃষ্টিতে ভেসে গেছে অনেক অস্থায়ী তাঁবু। এসব তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাস্তুহারা গাজাবাসী। জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মবিষয়ক সংস্থা বলছে, একদিকে চলছে হামলা, অন্যদিকে বৃষ্টি; দুর্দশা এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে গাজা যেন ‘নরকে’ পরিণত হয়েছে।
ইসরাইলের টানা হামলায় গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। উপত্যকাজুড়ে দেখা দিয়েছে খাবারের তীব্র সংকট। ছড়িয়ে পড়ছে রোগব্যাধি। ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছেন গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ। তাদের অনেকেই বিভিন্ন বিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তাঁবু গেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে ভারী বৃষ্টিতে প্লাস্টিকের তৈরি সেসব তাঁবুর অনেকগুলো ভেসে গেছে। শরণার্থীশিবিরগুলোর অনেক জায়গায় পানি জমেছে।
ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ঘর হারিয়ে মধ্য গাজার একটি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পরিবারসহ আশ্রয় নিয়েছেন আমেন এদওয়ান। সেখানে তার মতো আরও হাজারো মানুষ মাথা গোঁজার জায়গা খুঁজে নিয়েছেন। আমেন জানান, বৃষ্টিতে পরিবারের সদস্যেরা কেউ ঘুমাতে পারছেন না। সংবাদমাধ্যমকে আমেন বলেন, ‘তাঁবুর ভেতরে ও চারপাশে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। আমরা কেউ ঘুমাতে পারছি না। আমরা নাইলনের তাঁবু খোঁজার চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাইনি। এখন পাথর ও বালু দিয়ে শুকনা রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
একই দৃশ্য দেখা গেছে রাফাহর শিবিরগুলোতেও। অনেকে তাঁবুর ভেতরে ও চারপাশে আবর্জনা ও বালু ফেলে বৃষ্টির পানির স্রোত আটকানোর চেষ্টা করছেন। ভেজা কাপড় শুকাতে দিয়েছেন অনেকেই। কিছু পরিবারের তাঁবু ঠিক আছে। কিন্তু অনেকেরই অবস্থা বেগতিক। অনেকেরই তাঁবুর মেঝেতে বিছানোর মতো কিছু নেই। তাদের ভেজা বালুর ওপরই রাত কাটাতে হচ্ছে। প্লাইউড আর পাতলা প্লাস্টিক দিয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই বানানোর চেষ্টা করছিলেন মধ্যবয়সী রমজান মোহাদাদ। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির পানি যাতে না ঢোকে, সে জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এই পাতলা প্লাস্টিক আমাদের বাঁচাতে পারেনি।’
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মবিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ্পে লাজ্জারিনি গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনেভায় জাতিসংঘের বৈশ্বিক শরণার্থীবিষয়ক ফোরামের বৈঠকে বলেছেন, গাজা এখন পৃথিবীর বুকে একটি ‘নরকে’ পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি তৃতীয়বারের মতো ফিলিস্তিন ঘুরে এসে ফিলিপ্পে লাজ্জারিনি আরও বলেছেন, ফিলিস্তিনের মানুষেরা ১৯৪৮ সালের পর তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি হয়েছে। এটা খুবই বেদনাদায়ক এক ইতিহাস।
৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসকে সমর্থন করে : গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের মাত্র ১০ শতাংশ বিশ্বাস করে যে ৭ অক্টোবর হামাস যুদ্ধাপরাধ করেছিল যখন তারা ইসরাইল আক্রমণ করেছিল, সাম্প্রতিক একটি জরিপে এ তথ্য জানা গেছে।
নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের শুরুতে চালানো ওই জরিপে ৯৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি উত্তরদাতা সম্মত হয়েছেন যে, ইসরাইল নৃশংসতা চালিয়েছে, ৮৫ শতাংশ বলেছেন যে তারা হামাসের নৃশংসতার বিষয়ে ‘আন্তর্জাতিক সংবাদ আউটলেট’ থেকে কোনো ফুটেজ দেখেননি। পশ্চিম তীরের বাসিন্দাদের মাত্র ১ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চের খলিল শিকাকির নেতৃত্বে এ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, জরিপে অংশ নেয়া ১,২০০ ফিলিস্তিনির মধ্যে বেশিরভাগই ইসরাইলে হামাসের হামলাকে সমর্থন করেছেন। হামাসের প্রতি ক্রমবর্ধমান সমর্থন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের প্রতি আস্থা হ্রাসের সাথে মিলেছে। শিকাকির গবেষণা অনুসারে, হামাসের নেতা হানিয়ার সঙ্গে দ্বিমুখী নির্বাচনে, আবব্বাস ১৬ শতাংশেরও নিচে সমর্থন পাবেন। সূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি, ন্যাশনাল রিভিউ।
বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সংস্কার প্রশ্নে পিছপা হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা
সদরপুরে জাসাসের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে র্যালী ও শোভাযাত্রা
বেগমগঞ্জে যুবদল নেতা সুমনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে চরম অচল অবস্থা, সহিংস ঘটনার আশংকা
জকিগঞ্জে জামায়াতের সেক্রেটারিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ
থার্টি ফাস্ট নাইট নিষিদ্ধ করতে হবে আইন করে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান
মেলবোর্নে স্মিথ-কামিন্সের অনন্য কীর্তি
মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
নেত্রকোনায় এ আর খান পাঠান স্মৃতি উন্মুক্ত ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন
এবার তিন অঙ্কে মুর্শিদা
আগুনে পুড়েছে সবচেয়ে বিতর্কিত ফাইলগুলো: রিজভী
সখিপুরে বনবিভাগের বিরুদ্ধে বিএনপি’র বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল
হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ
বিসিএফের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনায় ফ্রান্স প্রবাসীদের প্রাণবন্ত মিলনমেলা
পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থগিত পরিচালক সমিতির নির্বাচন
সিলেটে আজহারীর তাফসির মাহফিল আলিয়া মাঠের পরিবর্তে এমসি কলেজ মাঠে
সচিবালয়ে আগুন টঙ্গী হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের আস্ফালন একই সূত্রে গাঁথা: মাওলানা মামুনুল হক
শেখ হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের প্রমাণ পেয়েছে এফবিআই
আত্মসমর্পণ করবেন না: মিয়ানমার সেনাদেরকে জান্তা প্রধান
উইলিয়ামসের পর তিন অঙ্কে আরভিন ও বেনেট, জিম্বাবুয়ের রেকর্ড