কিংবদন্তীর ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর
০৩ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৫২ পিএম | আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২৩, ১২:১০ এএম
ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। মেদিনিপুর জেলার বীর সিং গ্রামে এক ব্রাক্ষণ পরিবারে। বাবার নাম ঠাকুর দাস বন্দোপাধ্যায়। মা ভগবতি দেবী। শৈশব ও বাল্য জীবন তাঁর চরম দারিদ্রের ভিতর দিয়ে অতিবাহিত হয়। প্রাথমিক শিক্ষা জীবনে কৃতিত্বের সঙ্গে সমাপ্ত করার পর উচ্চতর শিক্ষার জন্য তিনি কলকাতায় আসেনন। ১৮২৯ সালের ১লা জুন ভর্তি হন সংস্কৃতি কলেজের ব্যাকরণ বিভাগরে তৃতীয় শ্রেণীতে।
১৮৪১ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর তিনি কৃতিত্বের সাথে তাঁর উচ্চতর শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেন এবং সংস্কৃতি কলেজের তরফ থেকে তাঁর অসাধারণ মেধার স্বীকৃতি স্বরূপ ইংরেজ সরকারের পক্ষ থেকে লাভ করেন বিদ্যাসাগর উপাধী। ১৮৪১ সালের ২রা ডিসেম্বর ফোর্ট উইলিয়াস কলেজের প্রধান পন্ডিতরূপে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৫১ সালে অধিষ্ঠিত হন সংস্কৃতি কলেজের অধ্যক্ষ পদে। অসাধারণ মেধার বলে শুধু সংস্কৃতি নয়, ইরেজী ও হিন্দি ভাষাতেও তিনি অসামান্য ব্যুপত্তি অর্জন করেন। বিদ্যাসাগরকে বলা হয় বাংলা গদ্যের জনক। গদ্যের ও যে একটি নিজশ্ব ছন্দ আছে তিনিই প্রথম তা’আবিষ্কার করেন। গদ্য ভাষার যর্তি চিহ্নাদির যথাযথ প্রয়োগ ও প্রচলনের কৃতিত্ব ও তাঁর। সমাজ সংস্কারক হিসেবে ঈশ্বর চন্দ্রের দৃঢ় ভূমিকার কথা ইতিহাস বিদিত। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিধবা বিবাহের প্রচলন ও বহু বিবাহ প্রথা নিবারণে তাঁর অকুতোভয় ও নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা বাংলা তথা উপমহাদেশের সমাজ সংস্কারের আন্দোলনের ক্ষেত্রে এক উজ্বল দৃষ্টান্ত অবিস্মরনীয় ধটনা। পত্র-পত্রিকা সম্পাদনা ও পরিচলনার ক্ষেত্রে ও তাঁর ভূমিকা সুবিদিত। “সর্ব শুভকরী” পত্রিকা “তত্ত্ববোধনী পত্রিকা”, সোম প্রকাশ” ও উংরেজী “হিন্দু প্যাট্রিয়ট” এর মতো পত্রিকাগুলো তৎকালীন বাংলা ভাষা অঞ্চলের সাংবাদিতার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
বিদ্যাসাগর এ সব পত্রিকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ছোট বড় বহু নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও বিদ্যাসাগরের ছিল অগ্রণী ভূমিকা। এ সবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য “হিন্দু মেট্রোপলিটন” স্কুলের প্রতিষ্ঠা। যা তাঁরই একান্ত উদ্যোগে অচিরেই রূপান্তিরিত হয়েছিল কলেজে। দারিদ্র পীড়িত অসহায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কবি ও শিল্পী-সাহিত্যিক বৃন্দের পৃষ্ঠপোষকতার ক্ষেত্রেও ঈশ্বরচন্দ্র ছিলেন উদার। কবি মাইকেল মধূসুদন দত্তের সঙ্গে তাঁর ছিল নিবিড় আতিœক সম্পর্ক। দানশীলতার জন্য তাঁর খ্যাতি এতখানিই ছিল যে, তাঁকে “দয়ার সাগর” বলে অভিহিত করতো। ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের উল্লেখযোগ্য রচনা- বেতাল পঞ্চ বিংশতি (১৮৪৭ খ্রিঃ), বাংলার ইতিহাস (১৮৪৮ খ্রিঃ), জীবন চরিত্র (১৮৪৯ খ্রিঃ), বোধাদয় (১৮৫১ খ্রিঃ), উপক্রমনিকা (১৮৫১ খ্রিঃ),খৃজুপাঠ (১৮৫১ খ্রিঃ), ব্যাকরণ কৌমুদী (১৮৫১ খ্রিঃ), শকুন্তলা উপাখ্যান (১৮৫৪ খ্রিঃ), বিধবা বিবাহ (১৮৫৫ খ্রিঃ), বর্ণ পরিচয় (১ম ও ২য় ভাগ) (১৮৫৫ খ্রিঃ), আখ্যান মঞ্জুরী ( ১৮৬৩ খ্রিঃ), ও ভ্রান্তি বিলাস (১৮৬৯ খ্রিঃ)। ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই কলকাতায় তাঁর নিজস্ব বাস ভবনে দূরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।বাংলা ভাষার উন্নতি সাধনে, বাঙালির আতœ-মর্যাদাবোধ জাগাতে,দানে,দয়ায় ও মনুষ্যত্বে আজও আমাদের কাছে বিদ্যাসাগর স্মরণীয় হয়ে আছেন।
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সাময়িক বন্ধের পর খুললো যমুনা ফিউচার পার্ক
জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা: জ্বালানি উপদেষ্টা
গৌরনদীতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দোকান ঘরে বাস নিহত-১ আহত-৬
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ২ আ'লীগ নেতা গ্রেপ্তার
লাওসে ভেজাল মদপানে ৬ বিদেশির মৃত্যু
না.গঞ্জে ডেঙ্গু পরীক্ষার টেস্ট কিট সংকট কে কেন্দ্র করে টেস্ট বাণিজ্যের অভিযোগ
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে বড় ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি
‘পতনের’ মুখে ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইন
বিশ্বব্যাংক আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতির প্রদর্শনী
আগামীকাল রোববার নারায়ণগঞ্জের যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
সিলেট সীমান্তে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
২ মার্চকে জাতীয় পতাকা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির আহ্বান জানালেন মঈন খান
সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব নিয়ে যা বললেন বদিউল আলম
সিংগাইরে সাংবাদিক মামুনের বাবার ইন্তেকাল
বিরামপুরে ধান-ক্ষেত থেকে হাত বাধা আদিবাসী দিনমজুর মহিলার লাশ উদ্ধার!
আওয়ামী শুধু ফ্যাসিস্ট নয়, তাদের আরেকটা নাম দিয়েছি স্যাডিস্ট: মিয়া গোলাম পরওয়ার
খুবিকে ইমপ্যাক্টফুল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা
লাল পাহাড়ের দেশকে বিদায় জানিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন অরুণ চক্রবর্তী
বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান
আগামী রোববার-সোমবারও বন্ধ থাকবে ঢাকা সিটি কলেজ