শতাব্দীর দূরবীণ
২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৩ এএম | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৩ এএম
মায়াবী ঠোঁট
মুসাফির নজরুল
রক্তজবা লজ্জায় নূয়ে পড়ে লজ্জাবতী লতার মতন
আত্মহারা মেঘনার জল করে জল ছলাকলা,
ঈশা খাঁ’র রাজধানী শতবর্ষ চেয়ে দেখে অপলক
কারুকার্যখচিত ওই ওষ্ঠযুগল।
একি অপরূপ রূপ হায় মুর্ছা যায় রানী পদ্মাবতী
বর্ণ-বিবর্ণেরা তীক্ষ্ম দৃষ্টি করে প্রক্ষেপণ ক্ষুরধার ছুরির মতন,
রোদ্রের ঝলকানিতে মুক্তার ন্যায় জাজ্বল্যমান
ওই মুখশ্রী দেখে দুলে ওঠে তীতুমীরের বাঁশের কেল্লা।
উম্মাতাল ষোড়শীর এলাকেশ বেণী বাঁধে
প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ফুসে ওঠে হৃদয় সাগর,
অন্দরের আলোকমালা নিস্তব্দ নিথর
ভরা যৌবনা পূর্ণিমার চাঁদ বাসন্তী বেলায় এক নিদারুণ।
সাইবেরিয়ার নীল সায়রের পাখনা মেলা পাখিগুলো
ওড়ে ও ঠোঁটের জ্যোতি চোখের তারায় দিক-বেদিক
বিক্ষিপ্ত আকাশের মোহনীয় তারার মতন
উড়ে যায় দুস্তর পারাবার বিশ্বব্রহ্মা ব্যাপে।
বিরহের রোজনামচা
মমতা মজুমদার
কেন জানি,
আজকাল বিষাদ ছুয়ে পড়ে আমার আঙিনায়
মনের ঘরে নিত্য নাচে এক অব্যক্ত সুরের খেলা
ভায়োলিন–টার তার ছিঁড়ে ফেলেছে জাগতিক বাস্তবতা
সুর তোলে না, সে তো আর আমার প্রতিটি জীবন্ত ভাবনায়।
খতিয়ে দেখি আমিও এক বহুকালের পরিত্যক্ত যন্ত্রণা;
বয়ে চলি এখনো রোজ নীরব স্মৃতিকথা
আমার নেই প্রয়োজন তোমাদের আনন্দ পাড়ায়
যেখানে সুখের আনন্দে ভাসে রোজনামচা
কাব্যের ঝংকারে ফুটে ওঠে বসন্ত বেলা।
সুরের কল্লোলে ঝলমল করে নিশিতা রাতের তারা
আমি আর এখন, ক্ষয়ে পড়া চাঁদের জোছনা
পোহাই না; বিলাসিতা করে করে অজস্র শব্দের মালা গাঁথি না
সাত রঙা ওই বেঁকে থাকা রংধনুটার প্রেমে মজি না
এখন আমার সময় হয়েছে কেবল যাবার পালা
বিদায় দাও বন্ধু ভালোবেসে এবার তোমরা;
কেউ আমার নাম ধরে পিছু ডেকো না।
আগুন ও পিপীলিকার কাব্য
রফিকুল নাজিম
এমন বিধ্বংসী ঝড় কে কবে দেখেছে?
যেই ঝড় আমার দিকে প্রবল প্রতাপে এগিয়ে আসছে
বাতাসে ছড়িয়েছে বিষের ফণা,
বাঘের হুংকারের মত তার তর্জন-গর্জন
সেই ঝড় দেখেও আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত নই
সামান্যতম ভয়ে তটস্থ নই আমি
কেমন যেন মন্ত্রমুগ্ধের মত আমি অবিচল
সেই ঝড়কে আলিঙ্গন করার ব্রত নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি
তুমুলভাবে ল-ভ- হতে বুকে পেতে দাঁড়িয়েই আছি!
হে প্রলয়ঙ্কারী ঝড়, আমার ভেতরটা তুমি নাড়িয়ে দাও
নিকষ কালো রাতে আমাকে ভেঙেচুরে নিঃশেষ করে দাও
তোমার আগুন ঠোঁট, প্রগাঢ় শ্বাস-প্রশ্বাসের ছান্দসিক ধ্বনি
জলোচ্ছ্বাসে আমায় ভাসিয়ে নাও অন্য কোথাও!
আমি বিনাশ হতেও রাজি; তোমার মায়ার টানে।
ভালোবাসার অনুগল্প
গোলাম সরোয়ার
ভালোবাসার উষ্ণতার স্পর্শে, বারবার ফিরে আসি
মিষ্টি প্রেমের মোহনায়, লাল গোলাপ পাপড়িতে
ঠোঁটে তোমার গভীর মায়া
তুমি হাসলেই মুগ্ধতার গান
রঙিন চাদরে আলো ছড়ায়।
মেঘলা হাওয়ায় বাদলা দিনে
ঝড়ো সন্ধ্যায় এসো প্রিয়তমা
লাল সবুজের শাড়ি পড়ে
রিনিঝিনি চুড়ি হাতে দিয়ে
হরিণ ডাগর চোখে
অপূর্ব রূপের রহস্য হবে উদঘাটন।
তোমার অপেক্ষায় আমার শহর
সেজেছে নতুন সাজে
রজনীগন্ধা ফুলের মালা হাতে
সবুজ ঘাসের গালিচায়
স্নিগ্ধতার পরশ
চুমুকেই তুমি পাবে নতুন সজীবতা।
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
স্বর্ণ ভবিষ্যত / মিলা জামান
জঙ্গল থেকে বাহির অইয়া
এই মোবাইলের যুগে আইতে কত হাজার চোখ
অঘুমে কাটাইছে গবেষণাগারে
আজ পর্যন্ত ইতা কেউ জানেনা, কিছুকিছু বাদে।
সিলেট থাকি হাইটা ঢাকা গেছে না যে
হে কি আর মুড়ির টিনের গল্প জানে বল দেখি?
পাছায় বান্দা গাছের বাকল থইয়া-
যে শাড়ি লুঙ্গি পরে তাতে শতলক্ষ চেতনার
নতুন গাঁথুনি মুড়ানো আছে,নতুন চিন্তা-চেতনা
যুগে যুগে সমৃদ্ধ করেছে মানবসভ্যতা।
যেখানো নতুন আশা উদ্যোগ নাই
এখানে পড়ে থাকে সিলেটি নাগরি লিপি!
বুড়া বয়সে পোলা / উত্তম কুমার দাস
জুমানারে কই প্রেমে পড়া বারণ
মা, চাচি, খালা বিয়ের গাজন করে
আর মেয়ে দেখতে গিয়ে, মাইয়া কয়
এত বুড়া বয়সে পোলা
সব শুইনা দোস্তরা কয় বিয়া তোমার হবে
আরে আমরা তো আছি
বুঝিনা... এ কেমন তর কথা...
রাতের ক্যানভাস / আবু বাকার
রাতের অন্ধকার অচৈতন্যদের প্লেটো রাজ্য...
বনেদী আহ্লাদের মোক্ষম ক্যানভাস !
ফুলে বিষাক্ত হুল ফোটানোর উল্লাস !
ডানকিনে মাছেরা ম্যালথাসের থিওরি খুঁজে
লোহার আংটিও ছদ্ম প্রেমিকের অপেক্ষায় থাকে !
ইচ্ছেরা ঘুমিয়ে পড়ে অরুচির কালো বাজারে !
প্রেমও ক্রমশ বেড়ে চলে কৌণিক দূরত্বের সূচকে!
নন্দিত শব্দেরা হারিয়ে ফেলে মাটি স্পর্শ জৌলুস।
যাপিত জীবনবোধ নাকাল হয়ে উঠে অজানা শঙ্কায়।
হিসেব মিলানোর আগেই যোগফল ভাগাড়ে !
তবু প্রেম বেঁচে রয় মোনালিসার এক ঝলক হাসিতে...
বিরহ চাষ / হাফিজ মুহাম্মদ
তোর বিরহে আজও কান্দে আমার অবুঝ মন
যত গভীর রাইত হয়-
কোত্থেকে বা একটা সুজন নাইয়া বৈঠা বায়
আর বুকের মধ্যেই শুধু খলখল করে
মাঝে মাঝে পারুল আইসে মাটির কলসি নিয়া
জল ভরায়, আর কয়-
বড় মিয়া, তোমার গাঙ্গে জল শুকায় না
ক্যান?
তখন শুধু চিন্তার ভাঁজে আটকাইয়া যাই
কোনো উপায় খুঁইজা পাইনা!
থাক ওসব, আর কিচ্ছু বলতে চাইনা
সেই বারো বছর বয়া গেইল, কত দিন...কত রাইত...
তাও হিসাব গুনবার পাচ্ছিনা
জানি, পোড়া কপালে বারবার দাগ লাগে!
আর কোথাও কোনো নালিশ করবার পথ নাই
শুধু আনমনে চেয়ে দেখি-
বুকের নদীত একবারও জোয়ার ভাটা শুকাইল না...
নিষ্ফল চেষ্টা / আরজাত হোসেন
কে শুনে কার কথা!
গাছ তলায় বসে কর্তন দাঁতে কুটকুট করতে থাকে -নিজস্ব ধান্দায়। হে নাকি আবার সফল হইবে।
আচ্ছা আপনি কনতো বাকের ভাই - সফল কারে কয়?
শুধু কি ডাক্তার, উকিল হইলে সফল বলে ?!
নিজে সৎ হয়ে - লোকমুখে নিজেকে উত্তম বানাইতে পারলেই তো সফল।
ঠিক কইছি না কলিম কাকা ?
ভিতরে ভিতরে আকাম করে - ইঞ্জিনিয়ার হলেও সেই সাফল্যের কোনো মূল্য আছে ?
সামনা-সামনি বাহ্বা শুনে কী লাভ ?
যদি আপনারে আড়ালে কেউ ভালা না কয় !
তাই বলি - উকিল, ডাক্তার হওয়ার আগে নিজেকে সৎ বানাইয়া লও।
নয়লে তো সে সাফল্য ফলপ্রসু হইবে না।
সমাপ্ত
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
এবার ভারতের মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া বন্ধ ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের হাওর-অর্থনীতি বেগবান করতে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প
প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম
দেশের ৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক
পায়রার রাজস্ব আয় বাড়বে তিনগুণ, দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা
মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
কুড়িগ্রামে সাবেক এমপি পুত্র সবুজ গ্রেফতার
ভারতে ৫.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরে পাঞ্জাবের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদালের ওপর গুলিবর্ষণ
খুলনায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু
বাড়তি মেদ কমাতে ‘খাওয়া কমানো’ কতটা কার্যকর
কিশোরগঞ্জে সড়ক সংস্কার দাবিতে মানববন্ধন
আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গভীর রাতে বিক্ষোভ
নগর ভবনের দায়িত্বশীলদের অবহেলায় নগরবাসীর দূর্ভোগসহ ঝুঁকিও ক্রমশ বাড়ছে
গ্যাস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টা থাকবে না যেসব এলাকায়
চিন্ময় দাস ইস্যুতে উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্নে মামলার তথ্য নেই বলে জানালো যুক্তরাষ্ট্র
রাজশাহীর পুঠিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়োলের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব
মুন্নী সাহার অ্যাকাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা, নেটদুনিয়ায় আলোড়ন