পরিস্থিতি
৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪০ এএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪০ এএম
পুরো উঠোন জুড়ে যখন বন্যার পানি টলমল করছিল, জাকিয়া বেগমের তখন দুশ্চিন্তার অন্ত রইল না। কিন্তু বন্যার সে পানি যখন বাড়তে বাড়তে ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ল, তখন তার চিৎকারগুলো অসহায়ের মত শোনাচ্ছিল। কিন্তু ক্রমাগত বন্যায় ডুবে যেতে থাকে জাকিয়া বেগমের রাজপ্রাসাদের মত ঘরের দামী দামী আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সবকিছু। এনামুল হক এসব দেখে উপায় না পেয়ে বাড়ির পাশের আশ্রয়নকেন্দ্রে যাবার জন্য একখানা নৌকা এনে দুয়ারে রাখতেই জাকিয়া বেগম ঘর কাঁপিয়ে কাঁপতে লাগলেন। তিনি তার এই সোনার সংসারকে জলে ভাসিয়ে কোথাও যাবেন না। স্ত্রীর এমন পাগলামি দেখে এনামুল হক জানান, পরিস্থিতি ভালো না। বন্যার তলানিতে সব চলে যাচ্ছে। জলদি তৈরী হও।
সত্যি সত্যি পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। বানের পানি বাড়তে থাকে। শেষে স্ত্রীকে নৌকায় বসিয়ে এনামুল হক যখন আশ্রয়নকেন্দ্রের দিকে রওনা দিচ্ছিলেন, তখন আকাশ ধোয়া বৃষ্টির ঝুলুম সয়ে ছোট্ট নৌকাখানি চলতে থাকে সামনের দিকে।
আশ্রয়নকেন্দ্রের তিনতলা ভবনের সবটা ভরে গেছে বানভাসিদের আগমনে। আকস্মিক বন্যায় সবাই দিশাহারা হয়ে এখানে ঠাঁই নিতে এসেছে। জাকিয়া বেগম সবাইকে দেখে নাক সিটকাতে বিলম্ব করলেন না। তার কাছে মনে হচ্ছে বানভাসিদের বেশিরভাগ মানুষই গরীব শ্রেণীর। তাদের চলাফেরা, গায়ের পোশাক, সব নোংরা। এখানে এদের সাথে থাকা তার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। জীবনভর যে গরীবদেরকে ঘৃণা করে এসেছেন, আজ তাদের সাথে তাকে থাকতে হবে? কখনোই না।
স্বামীকে সে কথা জানাতেই এনামুল হক গর্জে উঠে বললেন, এখনো তোমার অহংকারী মনোভাব গেল না? সব দেমাগ ভাসিয়ে দাও বন্যার জলে। শোনো, পরিস্থিতি এমন একটা সমীকরণ, এটা কাকে কখন কোন পর্যায় নিয়ে যায়, কেউ জানে না। বন্যায় সবাই দিশাহারা আর তুমি ধনী গরিবের ভেদাভেদ নিয়ে আছো?
জাকিয়া বেগম কোনো কথা বলার ভাষা খুঁজে পান না। সত্যিই তো বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে। জীবন বাঁচাতে সবাই এখানে চলে এসেছে। জাকিয়া বেগম তাদের হাহাকার আর অসহায় মুখগুলো দেখে ভাবেন, আগে জীবন বাঁচাতে হবে পরে বিবেচনা করা হবে কারা ধনী আর কারা গরীব! কিন্তু আশ্রয়নকেন্দ্রের জানালা দিয়ে বাইরের অনর্গল বৃষ্টি দেখে জাকিয়া বেগমের আরো দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে। এই যে এত পানি বাড়ছে, না জানি বন্যা পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়!
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে কী পরিবর্তন আসছে?
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতদ্বৈততা কাম্য নয়
সচিবালয়ে আগুন সন্দেহজনক
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক