বন্যার স্পর্শ
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ এএম | আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল। লালমনিরহাট জেলার তিস্তা নদীর তীরের নিকটবর্তী। নি¤œ চর অঞ্চলের মানুষ আবিদ মিয়া। মাটির মতো যার মন। স্ত্রী ঊর্মি ছেলে শিশির আর মেয়ে ঝর্ণাকে নিয়ে বেশ সুখের সংসার তার। মেয়ে ঝর্ণা বড়। এবছর ঝর্ণা লাল-মনিরহাট কলেজ থেকে বি,এ ফাইনাল দেছে। বেশ বিয়ের উপযুক্ত হয়েছে ঝর্ণা এখন। ছেলে শিশির ছোট। দশ বছর মতো বয়স হবে ছেলে শিশিরের। শিশির স্থানীয় গ্রামের স্কুলে ফাইভে পড়ছে। তিন বিঘা জমির উপর কৃষি কাজ করে আর কিছু গরু ছাগল পুষে আবিদের আগে বেশ সচ্ছলতার সাথে সংসার চলতো। কিন্তু বেশ কয়েকটা বছর পাহাড়ের উজান ঢল নামার কারণে। আর প্রতিটা বছর ভারতীয় তিস্তা নদীর বাঁধ আর ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেওয়ায় বন্যার জলে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়াতে সংসারে এখন অভাব-অনটন দেখা দেছে। এবছর চরের পানি নিচে নদীতে নেমে যাওয়ার পর চর জেগে উঠেছে। আর তাই আবিদ মিয়া দু,চোখে অনেক স্বপ্ন আর এক বুক আশা নিয়ে জমি চাষের উপযোগী করার জন্য নাওয়া-খাওয়া ভুলে উঠে পড়ে লেগেছে। রাতে ঘুমানোর সময় আবিদ বউ ঊর্মিকে বললো। ও বউ, কাল কিন্তু খুব সকালে আমাকে মাঠে যেতে হবে। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো...
দেখি, এবার ফসল করে সংসারের হাল ফিরাতে পারি কিনা। বউ ঊর্মিও দীর্ঘ হাই ছেড়ে বললো... হুম.. দ্যাখো..কয়বছর যেভাবে বন্যায় ডুবে ফসল নষ্ট হলো।এবার যদি একটু সুখের মুখ দ্যাখা যায়।তারপর ঊর্মি আবিদের দিকে তাকিয়ে বললো.... নাও, ঘুমিয়ে পড়ো..আজ কয়দিন খাটাখাটুনি করে তোমার শরীরের উপর যে ধকল যাচ্ছে...।
আবিদ বললো, ঘুম যে আমার চোখে আসে না ঝর্ণার মা। মেয়ে ঝর্ণা যে বিয়ের উপযুক্ত হয়েছে।
যতক্ষণ একটা সৎ কর্মঠ পাত্র, ভালো ঘর দেখে মেয়েটার ব্যবস্থা করতে না পারছি..। বোঝই তো...
সেয়ানা বিয়ের লায়েক মেয়ে ঘরে। দুশ্চিন্তার কি শেষ আছে? ঊর্মি বললো, হুম তা-অবশ্য ঠিক বলেছ। আমি যে মেয়ের মা। চিন্তা আমারও তো
হয়। কিন্তু কি করবো? বিয়েতে তো একটা মোটা খরচ আছে। পরপর কয়বছর বন্যায় ফসল নষ্ট না হলে কি আর এ-তো অভাবে পড়তাম। তারপর দুজন যে-যার মতো পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়লো। শেষ রাতে পাড়ার মসজিদ থেকে মাইকে ফজরের আজানের শব্দ কানে আসতেই আবিরের ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে দ্রুত দাঁত মেজে ওযু করে ফজরের নামাজ পড়ে নিলো। তারপর একটু ভোরের আলো ফুটতেই মাঠে যাওয়ার জন্য গরু লাঙ্গল জোয়াল মই গোছাতে লাগলো। ওদিকে স্ত্রী ঊর্মি নামাজ শেষে কিছুক্ষণ কুরআন পড়ে সকালের বাসী কাজকর্মে মন দিয়েছে। মেয়ে ঝর্ণা উঠে নামাজ পড়ে তার ঘরে বই পড়তে বসেছে। ছেলে শিশির এখনো ঘুম থেকে উঠেনি। আবির বললো ও ঝর্ণার মা? ঊর্মি বললো। হ্যা, বলো শুনছি। আবির বললো, দ্যাখো তো, আমার পান সুপারির কৌটাটা কোথায়?খুঁজে পাচ্ছি না- যে...! তারপর ব্যস্ততার ভাব করে বললো! আমার যে দেরি হয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি মাঠে যেতে হবে। ঊর্মি বললো, হ্যাঁ দেখছি একটু দাঁড়াও। তারপর ঊর্মি হাতের কাজ রেখে বারান্দায় তক্তার উপর কৌটা দেখে বললো। এইতো পানের কৌটা এখানে।
কিভাবে যে খোঁজো না বুঝিনা..। তারপর কৌটায় পান সুপারি চুন জর্দা গুছিয়ে বললো, এই নাও কৌটা। ততক্ষণে ছেলে শিশিরও ঘুম থেকে জেগে উঠেছে। মেয়ে ঝর্ণা ঘর থেকে বেরিয়ে বললো, বাজান তুমি মাঠে যাইতেছো? আবিদ বললো, হ-রে মা, কেন...কিছু বলবি মা ঝর্ণা? ঝর্ণা বললো, না বাজান এমনিতেই জিজ্ঞাইলাম। ছেলে শিশির চোখ কচলাতে কচলাতে এস বললো, বাজান আমি ও তোমার সাথে মাঠে যাবো। আবিদ বললো, এখন না বাপজান। একটু আলো ফুটলে তখন যেইও। তারপর আবিদ মাঠে যাওয়ার সময় বউ ঊর্মিকে বললো, মাঠে কিন্তু আমার অনেক কাজ। যদি পারো একটু বেলা হলে আমার খাবার পানি পাঠিয়ে দিও...? ঊর্মিও বললো, আচ্ছা ঠিক আছে যাও। আবির মাঠে গিয়ে হালচাষ শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর গাঁয়ের পশ্চিম পাড়ার মনু মেম্বার মাঠে ঘুরতে এসেছে। আবিদকে দেখে বললো, কেমন আছো আবিদ মিয়া? আবিদ, জ্বি মেম্বার সাব ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? মেম্বার, এইতো আছি। আল্লাহ নিয়ে যাচ্ছে এক- ভাবে। তা-খুব দেখছি কষ্ট করছো জমিতে আজ কয়দিন। তা-কি লাগাবা জমিতে ভাবছো? আবিদ বললো, কি আর লাগামো মেম্বার সাব...। চিন্তা করছি এই জমিতে পাট, আর ঐ পাশের উঁচু জমিটাই সবজি বুনবো। আর ঐ দূরে যে জমিটা ওটাই বাদাম লাগাবো। মেম্বার তা-বেশ বেশ খুব ভালো লাগাও। তারপর মেম্বার বললো, মেয়ে কি বিয়ে দিবা আবিদ মিয়া? একটা ভালো ঘরের ডাক্তার পাত্র আছে। গতবছর পাশ দিয়ে বেরিয়ে-ছে। দেখতে শুনতেও মাশাআল্লাহ। তোমার মেয়ে মা ঝর্ণার সাথে মানাবে ভালো। আবিদ বললো হ।
মেম্বার সাব, মেয়ে যখন বড় হয়েছে বিয়ে তো দিতেই হবে। ভালো সম্বন্ধ যখন বলছেন...তই আমার একটা কথা আছে। মেম্বার বললো তা- তোমার কি কথা বলো? আবিদ বললো, যদি ছেলে পক্ষের পছন্দ হয়। বিয়ে কিন্তু ফসল উঠার পর হবে। মেম্বার বললো, ও, এই কথা। আচ্ছা ঠিক আছে সেটা আমি দেখবো। আচ্ছা কাজ করো আবিদ ছেলে পক্ষ কবে আসবে আমি তোমাকে জানাবো কেমন। তারপর চলে গেলো। একটু বেলা হলেই ছেলে শিশির মা- ঊর্মিকে বললো মা, বাজানের লাগি ভাত দাও। ঊর্মি বললো, হ বাজান দিচ্ছি। তারপর ভাত বেড়ে গুছিয়ে দিল। শিশির ভাত নিয়ে মাঠে গেলো। দূর থেকে একটু জোরে ডাক দিলো। বাজান...ও বাজান তোমার জন্য খাবার আনছি খেয়ে যাও। আবিদও দূর থেকে একটু জোরে বললো..
হ..আসছি বাজান। শিশির একটা উঁচু জমির আইলের পাশে খাবার রেখে দাঁড়িয়ে রইলো। আবিদ চুমকো দিয়ে গরু দাঁড় করিয়ে গরু লাঙ্গল রেখে ছেলে শিশিরের কাছে এসে খেতে বসলো।
এর বেশ কিছুদিন পর পাটের চারা গুলো একটু বড় হয়েছে। আবিদ সাথে ছেলে শিশির জমির আগাছা পরিস্কার করছে। মেয়ে ঝর্ণা আর ওর মা ঊর্মি খাবার নিয়ে মাঠে গেলো। ঝর্ণা বললো, দেখছো মা আমাদের পাটের চারা কি সুন্দর লকলক করছে? আর ঐ চেয়ে দ্যাখো বাদাম গাছ সবজিও কতো সুন্দর হয়ছে। ঊর্মি বললো, হ-রে মা, খুব সুন্দর হয়ছে। না হলে আমরা বাঁচুক কি খেয়ে। একসময় ঝর্ণা বললো, ও বাজান তোমাদের লাগি খাবার আনছি এসে খেয়ে নাও। আবিদ বললো আসছি মা। তারপর বাপ-বেটা এসে খেতে বসলো। আবিদ বললো কচি ছেলেটা রৌদ্রে পুড়ে আমার সাথে কাজ করছে। আবার এই রৌদ্রে মা-ঝর্ণাকে মাঠে আনলে কেনো? ঊর্মি বলতে যাবে...সেসময় ঝর্ণা বললো, মা নিয়ে আসতে চাইনি বাজান। আমি নিজে আসছি ফসল দেখবো বলে।
কি সুন্দর পাটশ বাদাম গাছ, সবজি হয়েছে দেখে দু,চোখ যেনো জুড়ায় যাচ্ছে বাজান। আবিদ বললো হ-রে মা খুব সুন্দর হয়েছে। ছেলে শিশির বললো, জানো বুবু, এই ফসল উঠলে বাজান তোমার বিয়ে দিবে। মেম্বার কাকা তোমার লাগি একটা ডাক্তার ছেলে দেখেছে। শুনে ঝর্ণা মা-বাবার সামনে বেশ লজ্জা পেলো। ঊর্মি বললো, তাই নাকি শিশিরের বাপ? আবিদ বললো হ, মেম্বার সাব একটু আগে বলছিলো। শিশির বললো বাব্বাহ ডাক্তার দেখলে আমার কি-যে ভয় করে। আমি বড় হলে ডাক্তার হবো না। ঝর্ণা হেসে বললো তুই কি হবি তাহলে ভাই শিশির জর্জ-ব্যারিস্টার? আবিদ বললো, না তাও না।, আমি বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হব দেখে নিও হুম। ওদের দু,ভাই বোনের খুনসুটি কথা বার্তা শুনে আবিদ আর ঊর্মি হাসতে লাগলো। একসময় খাওয়া শেষ হলে সব গুছিয়ে ঊর্মি বললো চল মা ঝর্ণা.. এবার বাড়ি যায়। আবিদ বললো যা- মা ঝর্ণা। আমরা এই কাজটুকু শেষ করে আসছি। তারপর শিশিরকে বললো চল বাজান...। শিশির বললো হ -চলো বাজান। এর বেশকিছু দিন পর মেম্বার মেয়ে ঝর্ণার বিয়ের সম্বন্ধ আনলো। দ্যাখা-শোনা বিয়ের কথাবার্তা পাকা হয়ে গেছে। ফসল ঘরে উঠলেই বিয়ে। এদিকে পাহাড়ের উজানের ঢল একটু একটু করে নামা শুরু করেছে। আবিদ প্রতিদিন মাঠে যায় ক্ষেতের ফসল দেখতে। চারি আইলের কোল ঘুরে ঘুরে ক্ষেতের ফসল দ্যাখে।
কিন্তু, কথায় বলে না.....
একবার ভাগ্য যদি টলে,
তবে তার সুখ আসে না কোনকালে।
তেমনি ঘটলো আবিদ আর তার পরিবারের সবার জীবনে। হঠাৎ এক ঘুমন্ত গভীর রাতে ভারত থেকে তিস্তা আর ফাঁরাক্কার অনেক গুলো বাঁধ একসাথে খুলে দেওয়ায় বন্যায় শেষ হয়ে গেলো তাদের আশা স্বপ্ন সব। বন্যার প্রচন্ড জলের স্রোতে বাড়িঘর ভেঙ্গে ভেসে গেলো। সেই সাথে ভেসে গেলো গোয়ালে বাঁধা হালের গরু। আবিদ আর বউ ঊর্মি চিৎকার করে হাউমাউ করে কাঁদছে আর অথৈ জলের স্রোতের এদিকসেদিক -ছুটা ছুটি করছে আর বলছে।আমার যে সব শেষ হয়ে গেলোরে বউ...আমার যে সব শেষ হয়ে গেলো। কে-কাকে বাঁচাবে চারিদিকে আহাজারি আর কান্নার রোল। হঠাৎ প্রচন্ড স্রোতে ছেলে আবিদের কন্ঠ শুনতে পেলো। আবিদ বলছে মা-
বাজান আমাকে বাঁচাও....আমাকে বাঁচাও..একটু পরে সে শব্দ ম্লান হয়ে গেল। অন্ধকারে বাপজান...শিশির...ও শিশির...শিশিররে...কোথায় বাজান তুই? এভাবে মা- ঊর্মি আর বাবা আবিদ জলের চারিদিকে হাতড়িয়ে খুঁজতে লাগলো ছেলে শিশিরকে।কিন্তু কোথাও খুঁজে পেলো না।
একসময় মেয়ে ঝর্ণার কথা মনে হতেই আবিদ বললো....আমার মেয়ে মা ঝর্ণা...মা ঝর্ণা কই?
ঊর্মি, ঝর্ণা...ও মা ঝর্ণা...মা তুই কই? আবিদও ডাকতে লাগলো...কিন্তু কোথাও খুৃঁজে পেলো না।
একসময় রাতের আঁধার কেটে গেলো। মেয়ে ঝর্ণার লাশ খুঁজে পেলো দূরের একটা বাঁশ ঝাড়ে। স্রোতের সাথে ভেসে গিয়ে বাঁশঝাড়ে বেঁধে গেছে। আর ছেলে শিশিরের লাশের খোঁজ এখনো পাইনি। বন্যার জল কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় পচাগলা লাশ পাওয়া যাচ্ছে। যখনি কোথাও লাশ পাই আবিদ আর ঊর্মি কাঁদতে কাঁদতে পাগলের মতো সেখানে ছুটে যায়। আর বলে কই! আমাদের ছেলে, আমাদের ছেলে শিশির কই? কিন্তু না...শিশিরকে কোথাও পাচ্ছে না কোথাও..না....।
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শিখ নেতা হত্যা, মোদীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ কানাডার
দলীয় ভিত্তিতে প্রশাসন সাজিয়ে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না: এ এম এম বাহাউদ্দীন
আদানির সঙ্গে জড়িত মোদিও: রাহুল গান্ধী
আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি ২৫ নভেম্বর ঢাকায় আসছেন
সোহেল-টুকু-হেলালসহ খালাস পেলেন বিএনপির ২২ নেতাকর্মী
ইরানে উদ্ভাবনে নারীদের অবদান ২৪ শতাংশের বেশি
প্রকাশায় ৯৩ শতাংশ নকল করেও পদোন্নতি পান রাবি অধ্যাপক সাহাল উদ্দিন
বোরহানউদ্দিনে নিখোঁজের দুই ঘন্টা পর লেবু বাগানে মিললো শিশুর লাশ
নাবালক ছাত্রের সঙ্গে জবরদস্তি যৌন সঙ্গম, ৩০ বছরের জেল শিক্ষিকার
সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ
মার্কিন সংসদের নারী শৌচাগার ব্যবহার করতে পারবেন না রূপান্তরকামী এমপি
বাগেরহাটে হত্যা মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
অন্তবর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনা পালনের প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন জিওসি
কুড়িগ্রামের উলিপুরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে শিশুর মৃত্যু
ভারতে পাচারকালে সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে দুই নারী উদ্ধার
কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : চাঁদপুরে হাবিবুল্লাহ মিয়াজী
শাহজাহান ওমরকে জুতা ও ডিম নিক্ষেপ
জীবনে উত্তম কর্ম, জ্ঞান ও উন্নত চরিত্র অর্জন করতে হলে সফল ব্যক্তিদের সান্নিধ্য অবলম্বন আবশ্যক
নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় জেলা আ.লীগ সভাপতি কারাগারে
নোবিপ্রবির সঙ্গে তুরস্কের আনাদোলু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর