ডেঙ্গু রোগী বাড়লেও চিকিৎসায় আমরা প্রস্তুত
০৭ জুন ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম | আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও চিকিৎসায় পুরোপুরি প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আমরা দেখছি গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণ কিছুটা বাড়ছে। তবে রোগী বাড়লেও চিকিৎসার বিষয়ে আমরা প্রস্তুত। আমাদের হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করে রাখা আছে।
বুধবার (৭ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি মুরসালিন নোমানী। এসময় ডিআরইউ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদফতরের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গুতে আমরা চিকিৎসার বিষয়টি দেখি। মশা নিধন ও নিয়ন্ত্রণের কাজগুলো করে থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন। কোথায় মশা বাড়ছে, কোথায় রোগীর সংখ্যা বেশি, এই তথ্যগুলো আমরা তাদেরকে দিয়ে থাকি। যতটুকু জেনেছি শক্তিশালী স্প্রে আনা হয়েছে। আমরা আশা করি যদি মশা নিধন হয়, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও কমে যাবে। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে আমরা ডেঙ্গু চিকিৎসায় কর্নার করেছি, চিকিৎসক নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি, একসঙ্গে যা ওষুধ লাগে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। কাজেই সেখানে আমি মনে করি কোনো সমস্যা হবে না। সচেতনতায় গুরুত্বারোপ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যতই প্রস্তুতি নেয়া হোক, আমাদের নিজেদেরও একটু সচেতনতার দায়িত্ব আছে। আমাদের আশেপাশে ডোবানালা, ফুলের টব, পরিত্যক্ত জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখা আমাদের দায়িত্ব। এর পাশাপাশি যদি আমরা ঠিকমতো স্প্রে করতে পারি, তাহলে এমনিতেই মশা কমে আসবে।
তিনি বলেন, ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে শুরুতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হলেও বর্তমানে সেখানে কিছু ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে এবং চিকিৎসা নিচ্ছে। যেহেতু ডেঙ্গু সংক্রমণও এখন কম, ডিএনসিসি চাইলে যেকোনো সময় আমরা হাসপাতালটি আবার তাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারি। শুনেছি তারা সেখানে নিজস্ব হাসপাতাল তৈরির বিষয়ে পরিকল্পনা করছে। আমরা যেকোনো সময় হস্তান্তর করতে প্রস্তুত।
স্বাস্থ্যসেবায় বিভিন্ন নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা কোভিডকালীন সময়ে টেলিমেডিসিন ব্যবহার করেছি, এখন সেটিকে ডিজিটাল সিস্টেমে নিয়ে আসা প্রয়োজন। আমাদের পুরো হেলথ সেক্টরকে ডিজিটালাইজড করা হবে। এরইমধ্যে ১৫০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ডিপিইতে পাস হয়েছে। এই সিস্টেমে প্রত্যেকের জন্য একটি হেলথ কার্ড থাকবে। যেকোনো জায়গায় সেই কার্ড নিয়ে চিকিৎসা নিতে পারবে। তার রোগ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য কার্ডে সংরক্ষণ থাকবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আরেক ধাপে ৮টি বিভাগীয় হাসপাতাল করতে যাচ্ছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ হাজার বেডের কার্যক্রম অনেকদূর এগিয়েছে। আপনারা জানেন এটি একটি বড় প্রজেক্ট। তাই এর ডিজাইন ও অর্থায়ন পেতে কিছুটা সময় লেগেছে। আমরা এখন ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ নিয়ে কাজ করছি। আমরা প্রাথমিক সেবাগুলো প্রায় বিনামূল্যে দেয়া হয়। হেলথ কাভারেজের মূল শর্তই হলো বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা। মানুষকে যেন নিজ পকেট থেকে খরচ করতে না হয়।
এদিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গতকাল জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ ভালো। আমাদের গড় মাথা পিছু আয় দুই হাজার ৭০০ ডলারের কিছু বেশি। যেটা বিএনপি সরকারের আমলে ছিল ৬০০ ডলারের মতো। যেহেতু মানুষের আয় বেড়েছে সেহেতু ক্রয় ক্ষমতাও বেড়েছে। মানুষ পুষ্টির নিশ্চয়তা পাচ্ছে।
জাহিদ মালেক বলেন, পুষ্টি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এক সময় আমাদের দেশে খাদ্যাভাব ছিল; দেশে কৃষি, শিল্প, অবকাঠামোর অভাব ছিল; বিদ্যুতের অভাব ছিল। স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল, স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে আমাদের পুষ্টি চাই। পুষ্টি পেতে হলে খাদ্য দরকার। খাদ্যের নিশ্চয়তা না থাকলে পুষ্টি মিলবে না। আমাদের কৃষি বিভাগ খাদ্য উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। তিনি বলেন, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে দেশের মানুষ পুষ্টি পাবে। শুধু তাই নাÑআমরা সবজি, ফল, মাছ উৎপাদনে প্রথম সারিতে আছি। কিন্তু এই খাদ্য মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে, খেতে হবে। তার জন্য মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা প্রয়োজন। সেই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এ সময় মন্ত্রী ফাস্ট ফুড কমিয়ে ব্যালেন্সড ফুড গ্রহণে সচেতনতা তৈরির আহ্বান জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা পুষ্টি নিয়ে কাজ করেন তাদের আহ্বান জানাবোÑসচেতনতা বৃদ্ধি করুন। ফাস্টফুড খেয়ে ছেলেমেয়েরা স্থূলতায় ভুগছে। ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার বাড়ছেÑসেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আলোচনা সভায় আরও ছিলেন– কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক প্রশাসন প্রফেসর সামিউল ইসলাম সাদি প্রমুখ।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আগে স্থানীয় নির্বাচন, পরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ
জুলাই বিপ্লবে ছাত্র আন্দোলনে গুলি করা সেই তৌহিদ গ্রেপ্তার
রমজানে বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
গণ-আন্দোলনে শহীদ পরিবারের অন্তত একজনের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে : সারজিস আলম
অনুমোদিত ৩৫০% নগদ লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের বিতরন করল ওয়ালটন
আমতলীতে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা। আহত -২
শিবালয়ে পরকিয়া প্রেমের বলি নুরজাহান ৪দিন পর পাষ-প্রেমিক আলিফ গ্রেফতার
ভূঞাপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে ময়লা-আবর্জনার ভাগার
শাহজাহান ওমরের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা
ধর্মগ্রন্থের পরে সত্য হিসেবে মানুষ সংবাদপত্রকে মনে করতো - বিটিভি মহা পরিচালক
নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারে ‘প্রস্তুত’ ইউরোপের যে ৭টি দেশ
প্রথম বার চার দরজার বিলাসবহুল গাড়ি আনছে জাগুয়ার
৪ মাস যেতে না যেতেই ভেস্তে গেছে কোটি টাকার সোলার ফেনসিং প্রকল্প!
২৯ বছর পর অবশেষে আলোর মুখ দেখলো শেরপুর আন্তঃজেলা পৌর বাস টার্মিনাল
মোটরসাইকেলের ভয়ংকর নেশা, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল, ৫ মাসে নিহত হয়েছে ১৪ জন
বড় দরপতনের পর সোনার দামে আবার বড় লাফ
রাজবাড়ীতে ছাত্রদল নেতা অপহরণ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
ফার্মগেট মানসী প্লাজায় আগুন, নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৫ ইউনিট
মাদকের টাকা না পেয়ে মাকে কুপিয়ে হত্যা করে থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ
তারেক রহমান ও কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুমকি হিন্দু সম্প্রদায়ের