সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই
০৫ আগস্ট ২০২৩, ০৫:১১ পিএম | আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২৩, ০৫:১১ পিএম
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন বলেছেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দেশের মানুষ আতঙ্কিত-শঙ্কিত। জ্বালাও-পোড়াও এবং জানমালের ক্ষতি সাধারণ জনগণ চায় না। অথচ, কেউ ক্ষমতায় থাকার জন্য ও কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পরস্পর বিরোধী আক্রমণ শুরু করেছে। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। দুই বৃহৎ রাজনৈতিক জোটের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনৈতিক আচরণে দেশবাসী আজ শঙ্কিত। আমরা মনে করি, সহিংস ও সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে আলোচনা সর্বোত্তম পথ। দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থ সমুন্নত রাখা এবং সঙ্কটময় অর্থনীতি যেন আরও হুমকিতে না পড়ে, সেই বিবেচনাকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। সব রাজনৈতিক দলের উচিত একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করতে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি, এ নির্বাচন কমিশন কার্যকর স্বাধীন না হওয়ায় সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে বার বার ব্যর্থ। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের মূল ক্ষমতা ছিল আরপিও এর ৯১(ক) ধারা। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর সংশোধন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন এখন ‘নখদন্তহীন বাঘে’ পরিণত হয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরও সঙ্কুচিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কার্যকর স্বাধীন না হলে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, একদিকে বৈশ্বিক মন্দায় রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি ও রিজার্ভ সঙ্কট অর্থনীতির নাজুক অবস্থা, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে খেটে খাওয়া দরিদ্রপীড়িত মানুষগুলো অনাহারে, অর্ধাহারে কঠিন সময় পার করছে। রূঢ় বাস্তব সত্য হলো, কিছু আমলা ও কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির খাতিরের প্রকল্পে দেশের কোটি কোটি টাকা তছরুপ করা হচ্ছে। এভাবে অসহায় জনতার টাকা আত্মসাৎ, কিছু আমলা ও রাজনীতিবিদরা বিদেশে পাচারকৃত টাকার পাহাড় গড়ার মহোৎসব চলছে। বর্তমানে অর্থনীতিক দুরাবস্থা থেকে মুক্তির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ইসলামের মূলধারা সুফিবাদী শান্তিপ্রিয় জনতা এদেশে রাষ্ট্রীয় ভাবে এখনো অবহেলিত ও চরম বঞ্চনার শিকার। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও ছাত্রসেনার অসংখ্য নেতাকর্মী হত্যাকা-ের কোন বিচার কেউ করেনি। বিচারের বাণী আজো নিভৃতে কাঁদছে। আল্লামা নূরুল ইসলাম ফারুকীর হত্যার বিচার আজো হয়নি। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ মসজিদসমুহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সুন্নী মুসলিম তথা শান্তিপ্রিয় সুফিবাদ জনতার কোন প্রতিনিধিত্ব নেই। সর্বত্রই ইসলামের নামে স্বাধীনতা বিরোধী উগ্রবাদীদের দখলদারিত্ব বিদ্যমান। রাষ্ট্রীয় নিগ্রহের শিকার সুফিবাদী শান্তিপ্রিয় জনতার অধিকার আদায়ের জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকে ভোট দিয়ে অধিকারহারা শান্তিপ্রিয় জনতার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি সর্বস্তরের জনতার প্রতিও আহ্বান জানান।
আজ শনিবার সকারণ ঢাকা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন কথাগুলো বলেন। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব প্রিন্সিপাল স.উ.ম আবদুস সামাদ বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রভাবশালী কিছু দেশের সক্রিয়তা ও তৎপরতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলোর এ দায়িত্বজ্ঞান থাকা প্রয়োজন যে, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি করা যাবে না, যেন বাইরের কোনো শক্তি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে বা প্রভাব খাটাতে না পারে। এমন রাজনীতি চাই না, যাতে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক দলের নেতাকর্মীদের সবার আগে হতে হবে দেশপ্রেমিক ও দায়িত্বশীল। ফলে একটি উদার ও পরমতসহিষ্ণু পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে সবার গণতান্ত্রিক অধিকার অনুযায়ী সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ করার অধিকার থাকবে, মত প্রকাশের অধিকার থাকবে, নিজের পছন্দমত ভোট প্রদানের অধিকার থাকবে। এমন রাজনৈতিক আবহ তৈরি করতে পারলে যে কোনো রকমের সঙ্কট, বিশেষ করে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলা করা অধিকতর সহজ হবে। এতে দেশ-জাতি উপকৃত হবে।
মাসুম বিল্লাহ মিয়াজি ও অ্যাডভোকেট ইসলাম উদ্দিন দুলালের সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশ চেয়ারম্যান শাইখুল হাদীছ আল্লামা কাজী মুঈনুদ্দীন আশরাফী, মহাসচিব আল্লামা সৈয়দ মছিহুদ্দৌলাহ,বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবু নাসের তালুকদার, জাতীয় পার্টির কাজী মামুনুর রশিদ, ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল তৈয়ব আলি, শায়খ আবু সুফিয়ান খান আবেদি, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রিন্সিপাল আবু তালেব বেলাল, এম সোলাইমান ফরিদ, প্রিন্সিপাল আবু জাফর মঈনুদ্দিন, শাহজালাল আহমদ আখঞ্জি, সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদি, পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, ইঞ্জিনিয়ার আমান উল্লাহ, প্রিন্সিপাল আলী মোহাম্মদ চৌধুরী, রেজাউল করিম তালুকদার, অ্যাডভোকেট ইকবাল হাসান, যুবসেনা সভাপতি মোহাম্মদ আখতার হোসেন চৌধুরী, ছাত্রসেনা সভাপতি সাইফুদ্দিন আহমদ।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নোবিপ্রবির সঙ্গে নেদারল্যান্ডের ইউট্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর
৯ দফা দাবীতে নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালরে সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
এলজিইডির এক প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
আবাসিক হোটেলের নামে মাদকের আড্ডা
নোয়াখালীতে মসজিদের ইমাম ও খতিবকে বিদায়ী সংবর্ধনা
খুলনাকে বিদায় করে ফাইনালে মেট্রো
কালিয়াকৈরে চাঁদাবাজের হামলায় চাঁদাবাজ কালামের মৃত্যু
বিরল উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ১
কামালপুর সড়কের ব্রিজ ভেঙ্গে মরণফাঁদ চরম দুর্ভোগে পথচারীরা
মেয়েদের ক্রিকেটে যুক্ত হলো যেসব সুযোগ-সুবিধা
বাড়ছে শীতের প্রকোপ, সাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
জকিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার
খালিশপুরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন
যুব এশিয়া কাপজয়ীরা পাচ্ছেন আর্থিক পুরস্কার
আদমদিঘীতে বিএনপি কার্যালয় উদ্বোধন
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
গোপালগঞ্জে বিএনপির বহিস্কৃত ও আ. লীগ কর্মীদের নিয়ে বিএনপির ২ জেলা কার্যালয়
কালীগঞ্জে ভাইরাল চিতাবাঘ হত্যার ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার বন বিভাগ ও প্রশাসনে তোলপাড়
আশুলিয়ায় স্ট্যান্ডে চাঁদার দাবীতে হামলার অভিযোগ; আহত-১৩