গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্য আওয়ামী লীগের গডফাদার মতো:রিজভী

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০৩ পিএম | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০৩ পিএম

 

 

গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্য আওয়ামী লীগের গডফাদারের মতো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে যে বক্তব্য যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতারা রাখছে সেই রকম বক্তব্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও রাখছে। তারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে অপবাদ দিয়ে অনর্গল মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে। গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান যেভাবে বক্তব্য রাখছেন তাতে মনে হচ্ছে তিনি আওয়ামী লীগের গডফাদার, কোন অঞ্চলের আওয়ামী লীগ বা যুবলীগের ভয়ংকর নেতা। এরা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে মিছিলে যেভাবে হামলা করছে এদেরকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী না বিএনপির উপর বল প্রয়োগকারী সংস্থা বলা উচিত। এগুলো করা হচ্ছে কারণ একজন ব্যক্তিকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় রাখা নিশ্চিত করার জন্য। বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন আন্ডার ওয়াচ,বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন পুলিশের নজরদারির মধ্যে বন্দী আছে। বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, এদেশের জনগণ খুবই অভাগা, লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে যে দেশ স্বাধীনতা পেয়েছিল সেই দেশের মানুষ এখন গণতন্ত্র ভোগ করতে পারছে না। এমন একটা শাসক দেশ পরিচালনা করছে যারা জনগণের কথা চিন্তা করে না শুধু নিজেদের নিজের গোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে। এই সরকার সবকিছু হাতের মুঠোয় নিয়ে যখন যা ইচ্ছা তাই করছে।

নাশকতাকারীরা ক্ষমতাসীন দলের লোক দাবি করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সবকিছু ওয়াচডক, সবকিছু আপনারা (সরকার) নজরে রাখছেন। এরমধ্যে বিএনপি নাশকতা করবে? কে নাশকতা করছে সবকিছু প্রমাণিত। নাশকতাকারীকে পুলিশ হাতেনাতে ধরছে যখন দেখছে সে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তখন তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা সাজানো হচ্ছে। এগুলো তো আমরা ১২-১৪,১৫ সালের আন্দোলনগুলোতে দেখেছি। এখন সেটাই চলছে।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ এদেশে বাকশাল কায়েম করার চেষ্টা করেছে। মাঝখানে করতে না পারলেও এখন একদলীয় শাসন একনায়কতন্ত্র করতে চাচ্ছে। এর বিরুদ্ধেই আমাদের এই আন্দোলন এদেশের জনগণ তাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আন্দোলন তাদের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে আন্দোলন করছে তারাই দেশের মালিক সেই মালিকানা ফিরিয়ে নিয়ে আসার আন্দোলন করছে।

বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করার পর অমানবিক নিপীড়ন নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম সোহেল এবং কৃষকদলের যুগ্ম-সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশসহ যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাজানো অভিযোগ করা হয়েছে। এই নীপিড়ন-নির্যাতন করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। আজকে সব ধরনের গুম-খুনের সঙ্গে সরকারের লোকজন জড়িত। সবই হচ্ছে সরকারের নির্দেশে। বগুড়ায় দুজন নেতাকে ইতোমধ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেই আছে। কিন্তু তাদের কোনো সন্ধান দিচ্ছেনা।

‘নির্বাচন ইস্যুতে কোনো বিশৃঙ্খলা করলে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে’- গোয়েন্দা প্রধানের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, আমরাও কিন্তু সংবিধান পড়েছি। ওটাতে হিব্রু ভাষায় লেখা নেই। সুতরাং আপনারা নিজেরাও সংবিধান ভালোভাবে পড়ুন। দেশের ইতিহাস জানুন। এতোই যদি সংবিধান প্রীতি আপনার বা আপনার সরকারের থাকতো তাহলে ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের অধীনে নির্বাচন কেনো করলেন? সেখানে তো সংসদ ভেঙে তিনমাসের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলা ছিলো। কিন্তু তারা কেনো দুই বছর ক্ষমতায় থাকলো? আপনারা তাদের অধীনেই মাস্টারপ্ল্যানের নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছেন। যা পরে সরকারের নিকটজনরাই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা ও নির্যাতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে মোট গ্রেফতার ১২০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট মামলা ৪টি, মোট আসামী ৩৩৭ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট আহত ১৫ জনের অধিক নেতাকর্মী।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার

উন্মুক্ত মঞ্চে তরুণদের উচ্ছ্বাস

উন্মুক্ত মঞ্চে তরুণদের উচ্ছ্বাস