মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে কেন এত আলোচনা? যা বলছেন নেটিজেনরা

Daily Inqilab সোশাল মিডিয়া ডেস্ক

২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ এএম

 


রাস্তার পাশে প্রতিবন্ধি, ভবঘুরে ও অসুস্থ বৃদ্ধদের খোঁজ পেলেই সেখানে ছুটে যান মিল্টন সমাদ্দার ও তার দল। ফেসবুকে এ রকম ভিডিও দিয়ে মানুষের কাছে অর্থ সহায়তা চান তিনি। মিল্টনের হিসাবে প্রতি মাসে সহায়তা হিসেবে জমা পড়ে গড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

এসব টাকায় রাজধানীর দক্ষিণ পাইকপাড়ায় গড়ে তুলেছেন চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার। বর্তমানে সেখানে ২০ জনের মতো বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আশ্রিত রয়েছেন বলে জানান মিল্টন সমাদ্দার। আর সাভারে কেনা জমিতে নির্মাণ করেছেন ছয়তলা ভবন। যেখানে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ পুরুষদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে থাকছেন দুইশত পয়তাচল্লিশ জনের মতো।

মানবতার সেবক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে এমন একটি প্রতিবেদন জাতীয় একটি দৈনিকে প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। গত কয়েকদিন ধরে হট টপিকসে পরিণত হয়েছে বিষয়টি। এনিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। অনেকেই মিল্টনের পক্ষে মন্তব্য করেছেন আবার অনেকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং দোষী সাব্যস্ত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।

ফেসবুক ব্যবহারকারী আলী আশরাফ লিখেছেন, মিলটন সমাদ্দার সাহেবের ব্যক্তিগত সম্পদ কত? এটা প্রকাশ পেলেই বুঝা যাবে যে তিনি কতটা সৎ? অসহায় মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। এখানে মানুষের সেন্টিমেন্ট কাজ করতেছে। কিন্তু সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে কেউ যদি প্রতারণা করে তাহলে খুব দুঃখজনক। কাজেই উনার ব্যক্তিগত সম্পদ দ্রুত প্রকাশ করা হোক।

ইডেন কলেজ ছাত্রী লিলি ফেসবুকে লিখেছেন, মিডিয়া সন্ত্রাসের স্বীকার মিলটন সমদ্দার।
মিল্টন সমাদ্দার রাস্তার পঁচা গলা মানুষদের হাগু মুতু পরিস্কার করে কোটিপতি হলে আমি এ নিয়ে বেজার না। দেশে অনেক ব্যক্তি অপকর্ম করে আলাদীনের চেরাগের মতো শত কোটি টাকার মালিক বনে যায়। বিলাতে বাড়ি বানায়। ছেলেমেয়েদের বিদেশে পড়ায়।

মিল্টন যদি কোনো মানুষের অর্গান বিক্রি করে থাকলে তাহলে কালবেলা সুস্পষ্ট অনুসন্ধান রিপোর্ট করে জাতিকে জানাক এই অর্গান কোথায় কার কাছে বিক্রি করেছে।
গড়পড়তা নিউজ করে একটি ভালো কাজ খারাপভাবে উপস্থাপন করার কি আছে? আপনি যে রাস্তায় পঁচা গলা লোককে দেখে দম বন্ধ করে পালাই চলে যান, গায়ে গা লাগাতে ভয় পান, আঁড়চোঁকে দেখেন। মিল্টন তাদের আলিঙ্গন করে, হোক সেটি স্বার্থের জন্য। আমি আপনিতো স্বার্থের জন্য ফেলে দেই।মিল্টন যে কাজ করছে এতে তাঁকে আরও বাড়ি গাড়ি করে দেয়ার দরকার।এটি আমার একান্ত বক্তিগত মতামত।

এস এম শাহজাহান লিখেছেন, মিল্টন সমাদ্দার (Milton Samadder) বর্তমানে একটা ভাইরাল টপিকে পরিনত হয়েছে। আমরা সাধারণ তাকে চিনি একজন সেচ্ছাসেবী হিসেবে। কিন্তু বর্তমানে মিডিয়া+কিছু মানুষ যথেষ্ট প্রামাণ ছাড়াই এনাকে যেভাবে নিকৃষ্ট ভাবে উপস্থাপন করছেন আমার মনে হয় এরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি।(যদি ঘটে তাহলে তার এমন বিচার ও শাস্তি আমিও চাই)সমাজটা বর্তমানে এমন হয়ে গেছে কেউ ভালো কাজ করলে আমরা তাকে বেঁধে ফেলার জন্য হাত ধুয়ে লেগে পড়ি।
এভাবে চলতে থাকলে এরপর থেকে কোনো সেচ্ছাসেবী আর মানুষের উপকারে হাত বাড়াবে না।ভয়ে থাকবে যে, কারো উপকার করে আবার অপরাধী হয়ে যেতে হয় যদি।যথাযোগ্য তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে এভাবে দোষারোপ করা ঠিক না।
এই ঘটনার যথাযোগ্য তদন্ত চাই, সে দোষী হলে আর সাজা হোক আর নাহলে সেই সব সাংবাদিকতার আড়ালে থাকা সাংঘাতিকের বিচার হোক।

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মোঃ তারেক রহমান কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে লিখেছেন, কয়েকটি প্রশ্ন: ১. নিজের বাবারে মা'রপিট, কিন্তু অন্যের বাবার কেন সেবা করতে চায় মিল্টন সমাদ্দার। ২. মিল্টন তার আশ্রমে অপারেশন এর বিষয়টি লুকাতে চাচ্ছে কেন?৩. কেন কোটি টাকা থাকতেও চিকিৎসা না দিয়েই মে' রে ফেলা হচ্ছে? ৪.একজন খ্রিস্টান ধর্মের কেউ জাকাত এর কোটি কোটি টাকার অর্থ কালেকশন করতে পারে কি না।

আয়েশা খাতুন লিখেছেন, কাকে আমরা বিশ্বাস করবো যে মানুষটাকে এত ভালো মনে করতাম অসহায় হতদরিদ্র মানুষকে অসুস্থ মানুষকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আইসা তাদেরকে সেবা যত্ন করত কত সুন্দর সুন্দর কথা বলতো সেই মানুষটা নাকি আজ এরকম ধরনের কাজ করে। প্রশাসনের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করব সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।

মোঃ রবিউল ইসলাম সুহেল লিখেছেন, অভিযোগ সত্যি হলেও তার কোনো দোষ নাই। কারন, আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতাম তাহলে ওই মানুষগুলো তার কাছে কখনো পোঁছাতেই পারতো না।এবং এই কাজ যদি সঠিক হয় তাহলে তদন্ত টা আরো ভালোভাবে করা দরকার।কিডনি এবং শরিলের ভিন্ন অঙ্গপতজ্ঞ আলো কিংবা বাজারি পণ্য নয় যেভাবে ইচ্ছা কেটে বাজারে বিক্রি করা হলো.? তাই এই কাজের সাথে দেশের বড় বড় ডাক্তার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ও আসবে হয়তো, এজন্যে আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার হোক।

ফারুক হোসাইন লিখেছেন, সত্য মিথ্যা দেখার অপেক্ষায়। বিশ্বাসের জায়গা কি তাহলে নষ্ট হচ্ছে-?নাকি লেখনীর কলম মিথ্যা বলতেছে, যদি লেখনীর কলম মিথ্যাচার প্রচারের জন্য মগ্ন হয়ে তাকে তাহলে আমি বিনীত অনুরোধ করছি- সকল শ্রেণির মানবিক মানুষদের মিল্টন ভাইয়ের পাশে থাকার জন্য। আর যদি লেখনীর কলম সত্যি হয় অসম্ভব থেকে অসম্ভব নোংরা ভাবেই স্বেচ্ছাসেবী মানবিক মানুষদের মন থেকে উঠে যাবে লাখো মানুষের ভরসার নাম মিল্টন সমাদ্দার-!!

এসএন সাব্বির লিখেছেন, মনে হচ্ছে মিল্টন খুবি ভয়ানক টাইপের একজন প্রতারক।তার অপরাধের ধরন দেখে মনে হচ্ছে এর শেকড় অনেক গভীরে। আমরা চাই এর সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত হউক।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গৌরনদীতে তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে শুরু প্রচার-প্রচারণা

গৌরনদীতে তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে শুরু প্রচার-প্রচারণা

ভোটারদের হুমকি : ওবায়দুল কাদেরের ভাই মেয়র কাদের মির্জার বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদলের

ভোটারদের হুমকি : ওবায়দুল কাদেরের ভাই মেয়র কাদের মির্জার বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদলের

পাবনায় জটিল রোগে আক্রান্তদের মাঝে চেক বিতরণ সমাজ সেবা অধিদপ্তরের

পাবনায় জটিল রোগে আক্রান্তদের মাঝে চেক বিতরণ সমাজ সেবা অধিদপ্তরের

সৈয়দপুর বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা স্বাভাবিক

সৈয়দপুর বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা স্বাভাবিক

প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ তৈরিতে প্রকৌশলীদের এগিয়ে আসতে হবে : নজরুল হামিদ

প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ তৈরিতে প্রকৌশলীদের এগিয়ে আসতে হবে : নজরুল হামিদ

বেগমগঞ্জে দুহাজার টাকা নিয়ে স্বামী সাথে ঝগড়া করে গৃহবধূর আত্মহত্যা

বেগমগঞ্জে দুহাজার টাকা নিয়ে স্বামী সাথে ঝগড়া করে গৃহবধূর আত্মহত্যা

১১ জন গর্ভধারিণী মাকে ‘স্বপ্নজয়ী মা’ সম্মাননা প্রদান করেছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর

১১ জন গর্ভধারিণী মাকে ‘স্বপ্নজয়ী মা’ সম্মাননা প্রদান করেছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর

ডিএনসিসির উন্নয়ন কাজে নতুনভাবে যুক্ত হচ্ছে ১৮টি ওয়ার্ডের রাস্তা ও ড্রেনেজ : মেয়র

ডিএনসিসির উন্নয়ন কাজে নতুনভাবে যুক্ত হচ্ছে ১৮টি ওয়ার্ডের রাস্তা ও ড্রেনেজ : মেয়র

ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩

ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩

সমাজ পরিবর্তনে পোশাক শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী

সমাজ পরিবর্তনে পোশাক শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী

এলএএনপিএসি’র সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাবাহিনী প্রধান

এলএএনপিএসি’র সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাবাহিনী প্রধান

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে কুইক রেসপন্স টিম চান সিটি মেয়র

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে কুইক রেসপন্স টিম চান সিটি মেয়র

দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক গণজাগরণ দরকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক গণজাগরণ দরকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দক্ষ নারী কর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে কাজ করবে মন্ত্রণালয় : শফিকুর রহমান চৌধুরী

দক্ষ নারী কর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে কাজ করবে মন্ত্রণালয় : শফিকুর রহমান চৌধুরী

হায়দার আকবর খান রনোর দাফন সম্পন্ন

হায়দার আকবর খান রনোর দাফন সম্পন্ন

সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ও ভুয়া খবর ছড়ানো রোধে বৈশ্বিক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি : তারার

সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ও ভুয়া খবর ছড়ানো রোধে বৈশ্বিক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি : তারার

মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল

মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল

গাজীপুরে লিফটে আটকে রোগীর মৃত্যু, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

গাজীপুরে লিফটে আটকে রোগীর মৃত্যু, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

স্যাটেলাইট প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনে সহযোগিতা করতে চায় ফ্রান্স : প্রতিমন্ত্রী পলক

স্যাটেলাইট প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনে সহযোগিতা করতে চায় ফ্রান্স : প্রতিমন্ত্রী পলক