ভারতের পানিতে কি ডুবছে না হিন্দুরা! কোথায় মোদির মায়া কান্না?
২১ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৪১ পিএম | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৪১ পিএম
পানিকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ভারত। দেশটির পানি আগ্রাসনের ভয়াবহ শিকার বাংলাদেশ। সর্বশেষ বন্যার কারণে ডুম্বুর জলবিদ্যৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। এতে ত্রিপুরা থেকে আসা পানিতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ফেনী, কুমিল্লাসহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলা।
ভারতের উজান থেকে দ্রুত বেগে আসা পানির কারণেই হঠাৎ করে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর অঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এতে শতশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা ঢলে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে গেছে এ তিন উপজেলার ৯০টি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ।
ভারতের সর্বশেষ এই পানি আগ্রাসনে এসব অঞ্চলে বসবাস করা হাজার হাজার হিন্দু পরিবারও অবর্ণনীয় ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। ভারতীয় পানিতে বহু মন্দির, দেবদেবী, হিন্দুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ডুবে গেছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারিণী শেখ হাসিনার পতনের পর হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার ও দেশটির গণমাধ্যম বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের ধোয়া তুলে ব্যাপকভাবে মিথা প্রোপাগান্ড ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কিন্তু আজ তাদের ছেড়ে দেওয়া পানিতে হাজার হাজার হিন্দু পরিবার বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও এ নিয়ে টুঁ শব্দ করতে দেখা যাচ্ছে না তাদের। শাহবাগেও নাই কোনো আন্দোলন। কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় নাই ‘হিন্দুকার্ড’ খেলে ক্ষমতায় বসা উগ্রপন্থী মোদির পক্ষ থেকেও।
দৃশ্যত কারণেই হিন্দুদের প্রতি মোদি ও ভারতের মায়াকান্না নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। ভারত কি আসলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের ভালো চাই নাকি এটাকে ব্যবহার করে কেবলই নিজেদের ফায়দা লুটতে চায়!
নদীর সঙ্গে বাংলাদেশের অস্তিত্ব বাঁধা। সেই নদীকেই কাজে লাগিয়ে ভারত এভাবেই বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিনাশী তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। যার থেকে রক্ষা পাচ্ছে না এদেশের লাখ লাখ হিন্দু জনগোষ্ঠী। দু’ দেশের মধ্যে প্রবাহিত নদীর সংখ্যা ৫০টির বেশি। এসব নদীতে ভারত বাঁধ ও প্রতিবন্ধক নির্মাণ করে শুকনো মওসুমে ইচ্ছামতো পানি সরিয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশ ন্যায্য ও প্রাপ্য পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
শুকনো মওসুমে পানি না দিয়ে যেমন ভারত বাংলাদেশকে মারে, তেমনি বর্ষা মওসুমে পানির সয়লাব বা বন্যা সৃষ্টি করেও বাংলাদেশকে মারছে। অভিন্ন নদীর উজানে যেসব বাঁধ ও প্রতিবন্ধক নির্মাণ করেছে ভারত, বর্ষা মওসুমে সেগুলো একযোগে খুলে দিয়ে বিপুল পানি ঠেলে দেয় বাংলাদেশে। এতে দ্রুত বাংলাদেশ অস্বাভাবিক বন্যার কবলে পতিত হয়।
ফসলাদি, ঘরবাড়ি ও সম্পদের অবর্ণনীয় ক্ষতি হয়। বন্যার সঙ্গে দেখা দেয় নদীভাঙন। নদী ভাঙনে অসংখ্য গ্রাম-জনপদ, শস্যক্ষেত্র, বৃক্ষ-বাগান নদীগর্ভ বিলীন হয়ে যায়। সীমান্ত নদীগুলোর ভাঙনে বাংলাদেশ এযাবৎ যে কত ভূমি হারিয়েছে, তার কোনো ইয়াত্তা নেই। বাংলাদেশের হৃত ভূমি ভারতের দখলে চলে গেছে।
নেটিজেনরা বলছেন, ভারতের পানি আগ্রাসন বাংলাদেশকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তার বিবরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না।
জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ ফেসবুকে লিখেছেন, বাংলাদেশে কোথায় কোন হিন্দু আওয়ামী লীগার আক্রান্ত হল তা নিয়ে ভারতের চিন্তার শেষ নেই। অমিত সাহা, গুজরাটের কসাই মোদি সবাই কথা বলছে। ভারতীয় মিডিয়ার তো ডায়রিয়া অবস্থা। কিন্তু এই যে বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে ডুবিয়ে দিল, ভারত কী ভেবেছে এতে কত শত হিন্দুর ঘরবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ফসল ডুবে গেছে। স্বপ্ন ভেঙে কত হিন্দু যুবক নিঃস্ব হয়ে গেছে? কত মন্দির, দেবদেবী ডুবে গেছে? হিন্দুদের নিয়ে যদি তাদের এত মাথাব্যথা থাকতো তাহলে এইভাবে পানি ছাড়ার আগে তাদের কথা চিন্তা করত।
এ নিয়ে ভারতের মিডিয়া বা হিন্দুত্ববাদীরাও কোন কথা বলবে না। কথা বলবে না বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। রানা দাশগুপ্ত, প্রিয়া সাহারা ভারতকে বলবে না, আপনাদের ষড়যন্ত্রে এই দেশের শত সহস্র হিন্দু নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। ভারত হিন্দুদের ডুবিয়ে মারলে তা নিয়ে কেউ কথা বলে না। হিন্দুত্ববাদীরা সারা বিশ্বে গরু হত্যা করে গোস্ত রপ্তানিতে শীর্ষস্থান অর্জন করলে কোন সমস্যা নেই। কেবল সেখানকার মুসলমানরা খেলেই সমস্যা। দেবতা বলে বাংলাদেশে গরু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু গরুর গোশত খারাপ রপ্তানিতে তাদের আগ্রহের শেষ নেই।আসলে তারা যেটা করে তার নাম সংখ্যালঘু রাজনীতি।
ফেসবুকে মাহবুবুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, ফেনী ও কুমিল্লায় অ্যাপ্রক্সিমেটলি সাড়ে ৩ লক্ষ হিন্দু বসবাস করে। হিন্দু ভাইয়েরা শাহবাগে আসুন। ভারতের এই ইনজাস্টিসের বিরুদ্ধে কথা বলুন।বহু হিন্দু ভাইদের খামারের মুরগী ভেসে গেছে। বহু হিন্দু ভাই পথে বসেছে। এর প্রতিবাদ করুন। জাগো হিন্দু, হিন্দু পরিষদ, ঐক্য পরিষদ, হিন্দু মহাজোট আপনারা কোথায়? আসুন! শাহবাগে আসুন! নাকি প্রেয়সীর কাঁটার আঘাতও মধু লাগে?
অপর একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ভারত থেকে আসা পানিতে হিন্দুদের ঘরবাড়ি ডোবে না, কারন পানি স্ক্যান করে করে ঘরে ঢোকে!
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পিলখানায় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তসহ ৩ দফা দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন
জয়পুরহাটে বিডিআরের ৩ দফা দাবিতে সদস্যদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি
প্রতিদিন বাসার খাবার নিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখতে যান তারেক রহমান
ফরিদপুরে দুর্ঘটনায় তিন দিনে নিহত ৯ জন, আহত-৩৫
ডিমলায় মোটরসাইকেলে মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন আহত
মাসের ব্যবধানে বরিশালের বাজারে সবজির মূল্য ৮০ ভাগ হ্রাস
লক্ষ্মীপুরে ৩ দফা দাবিতে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের মানববন্ধন
কলাপাড়ায় জুয়েলার্সের মালিকের বাসায় সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হানা, ৬০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার দুই লাখ টাকা লুটের অভিযোগ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঢাবি উপাচার্যের সাক্ষাৎ
ঢাকার বায়ু দূষণ বন্ধে ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ
কুমিল্লার সাথে নয়, নোয়াখালীর নামে বিভাগ চায় লক্ষ্মীপুরবাসী
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা, নেই লিটন ও হাসান মাহমুদ
সেতু নির্মাণকাজ বন্ধে যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে ২ উপজেলাবাসি
জেলবন্দিদের মুক্তি, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের পূনঃবহালের দাবিতে কুড়িগ্রামে প্রতিবাদ সমাবেশ
যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন- সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে মৃত বেড়ে ১৬, ইরান চায় উদ্ধারকর্মী পাঠাতে
পুলিশকে জনগণের আস্থা অর্জনে ব্রতী হতে হবে সিআইডি প্রধান- মো.মতিউর রহমান শেখ
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা করলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক
নোয়াখালীর হকার্স মার্কেটে আগুন, ব্যবসায়ীদের দাবি পূর্বপরিকল্পিত
দাম কম হওয়ায় লোকসানের মুখে গোয়ালন্দের পেঁয়াজ চাষীরা