প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি সামাদের অপসারণের দাবি কর্মচারীদের
২৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে নানা রকম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবি করে মানববন্ধন করেছেন অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে অধিদপ্তরের সামনে এই মানববন্ধনের বক্তব্য রাখেন, রেজ্জাক সিদ্দিকী, রফিকুল ইসলাম রুমি, আলমগীর হোসেন, সিদ্দিক, সমন্বয়কসহ আরো বক্তব্য দেন জিন্নাত আলী বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রাথমিক শিক্ষা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তারা বর্তমান স্বৈরাচারী মহাপরিচালক এর এ মুহূর্তে অপসারণ চান! ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে বিগত ৫ আগষ্ট পতন ঘটেছে স্বৈরাচারী সরকারের। গঠিত হয়েছে ছাত্র-জনতার সমর্থনে অন্তর্র্বতী বিপ্লবী সরকার। বিগত স্বৈরাচার সরকারের ১৫ বছরের অধিককালের শাসনামলের নানা দুর্নীতি-অনিয়ম ও জঞ্জাল অপসারনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে এই অন্তর্র্বতী সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অপসারণ করে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু পরিবর্তনের এই বিপ্লবী ধারা অদ্যাবধি ছুঁতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগকে।
বিগত সরকারের আমলে জুলাই মাসে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগদান করেন বর্তমান মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ। যোগদানের পর থেকেই তার কর্তৃত্ববাদী আচরণ ও আওয়ামীপ্রীতি প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনকে ক্ষত-বিক্ষত করছে প্রতিনিয়ত। তাঁর নানাবিধ বিতর্কিত কর্মকান্ডে প্রাথমিক শিক্ষা-অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাঝে ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠেছে। সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহাপরিচালকের দ্রুত অপসারণ দাবি করেছেন। তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে, যোগদানের পরেই তিনি ঘোষণা করেন যে, তার কক্ষে পরিচালক পদমর্যাদার নিচের কোন কর্মকর্তা প্রবেশ করতে পারবেন না। অধিদপ্তরের পরিচালকের ৯টি পদের মধ্যে ৭টিতেই বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রেষণে পদায়িত আছেন। তিনি প্রশাসন ক্যাডারের এই সকল কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার স্থায়ী ও নিজস্ব পদধারী কর্মকর্তাদের নিপীড়নে লিপ্ত আছেন। তিনি সর্বদা কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সাথে খারাপ আচরণ করেন ও কক্ষ থেকে বের করে দেন যা নজিরবিহীন। এ পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার স্থায়ী ২ পদ হতে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ২ জন পরিচালক, ৩ জন উপপরিচালকসহ তদনি¤œ ২০ জন কর্মকর্তা তার দুর্ব্যবহারের স্বীকার হয়েছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিগত ২০ আগষ্ট প্রথম বারের মত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আগমন করেন। তাঁর এই শুভাগমন উপলক্ষ্যে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়ে একটি মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু উক্ত মত বিনিময় সভায় মহাপরিচালক তাঁর নির্বাচিত কিছু চিহ্নিত ব্যক্তিকে নিয়ে গোপনে সকল আয়োজন সম্পন্ন করেন। অংশগ্রহণকারীদের তালিকা গোপনে প্রনয়ণ করে এ সংক্রান্ত পত্রটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মেইলে পূর্ববর্তী দিন অর্থাৎ ১৯ আগষ্ট রাত ৮টায় মেইলে প্রেরণ করেন। সভায় মাত্র ৪ জন কর্মচারি প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকার সুযোগ প্রদান করা হয়। এছাড়া উক্ত সভায় তিনি তাঁর পছন্দের মাত্র ৬ জন ব্যক্তিকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেন যাদের সকলের কাছ থেকেই সভার দিন সকাল বেলা বক্তব্যের স্ক্রিপ্ট জমা নেন। এছাড়া উপদেষ্টার সামনে কোন দাবী-দাওয়া ও সমস্যার উল্লেখ না করার নির্দেশ দেন। ফলে উক্ত অনুষ্ঠানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কোন বক্তব্য প্রদান করতে আগ্রহী হন নাই। সারা দেশের মাঠ প্রশাসনে যেখানে সংস্কারের দাবি উঠেছে, সেখানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে উপদেষ্টার উপস্থিতিতে কোন সমস্যা বা সংস্কারের কথা না বলতে দেয়া বাক-স্বাধীনতা রোধের শামিল। তাঁর এহেন কর্মকান্ডে কর্মকর্তা-কর্মচারিরা প্রচন্ডভাবে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত হয়েছে। স্থানীয় বিতর্কিত সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাইনুল হোসেন খান (নিখিল) এর বিগত ১৩ মের ডিও লেটারের সুপারিশের প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক বিগত ১৫ আগষ্ট মাঠ পর্যায় হতে একজন কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে পদায়ন করেন যাতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে তাঁর আওয়ামীপ্রীতি প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। বদলি-বাণিজ্যের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে এই কর্মকর্তার একান্ত সহকারী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনেকবার পত্র-পত্রিকায় নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গত সপ্তাহে চাপের মুখে উক্ত কর্মকর্তাকে ওই শাখা থেকে বদলি করে এমন জায়গায় পদায়ন করা হয়েছে যেখান থেকে আমেরিকায় ৩ মাসের একটি প্রশিক্ষণে যাওয়াসহ আরো অনেক সুযোগ রয়েছে। এছাড়া তাঁর পরিবর্তে একজন জুনিয়র কর্মকর্তাকে একান্ত সচিব পদে নিয়োগ করা হয়েছে যিনি ইতোপূর্বে অনলাইন বদলি বাণিজ্যের সাথে সরাসরি জড়িত ছিল মর্মে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মহাপরিচালকের কার্যকাল প্রায় ৩ মাস হতে চললেও তিনি অদ্যাবধি ৬-৭ বছর ধরে একই শাখায় কাজ করা এবং বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সুবিধাভোগীদের অদ্যাবধি বদলি করেন নাই। উপরন্তু এ সকল বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ ও পদলেহী কিছু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি তাঁর মহাপরিচালক পদ ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে ন্যূনতম কোন ধারণা না থাকা এই কর্মকর্তা বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের বোঝা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছেন। তিনি আসলে বিগত স্বৈরাচারের প্রতিভূ হিসেবে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের অন্তরায় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। এ কারণে তাকে প্রাথমিক শিক্ষার মহাপরিচালকের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ হতে অনতিবিলম্বে অপসারণ করে তাঁর পরিবর্তে একজন শিক্ষাবান্ধব ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে পদায়নের দাবী জোরদার হয়েছে।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত
অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে
দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১
নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন
ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ
মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি
রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী
বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের
আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া
ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী
সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির
রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার
উন্মুক্ত মঞ্চে তরুণদের উচ্ছ্বাস