রাজধানীকে যানজট মুক্ত ও যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমনে সরকারের নানামুখি প্রকল্পের মধ্যে বিআরটি প্রকল্প অন্যতম।
এ প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলায় কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরা হাউজবিল্ডিং এলাকায় উড়ালসড়কের উপর ঝুঁকি পূর্ণ অবস্থায় গণপরিবহন গুলো যাত্রী উঠা নামা করছে। এসময় টঙ্গী গাজীপুর থেকে ছুটে আসা প্রতিটি গাড়ি থেকে ৮/১০ জন করে যাত্রী নামছে। বিকল্প ব্যাবস্থা না থাকায় যাত্রীরা দ্রুত গতিতে ছুটে আসা গাড়ির সামনে পরিবার ও শিশু বাচ্চাদেরকে নিয়ে ঝুঁকি পূর্ণ সড়ক পাড়াপাড় হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে। আবার একই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে চলন্তগাড়ীর সামনে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দৌড়ে গিয়ে গাড়ীতে উঠতে দেখা যায়। এ সময় কয়েকজন যাত্রীর সাথে আলাপ কালে তারা বলেন, আমরা নিরুপায়, যানজটের ভয়ে আমরা ঝুঁকি জেনেও এখান দিয়ে যাতায়াত করি। বিআরটি প্রকল্পের উত্তরা আজমপুর বিএনএস সেন্টার এলাকায় উড়াল সড়কের ব্রিজের গোড়ায় যাত্রীবাহি গণপরিবহন দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানোর কারণে আজমপুর এলাকায় যানজট লেগেই থাকে।
অপরদিকে উত্তরবঙ্গের নামিদামি এসি নন এসি বাস ও গাজীপুর টঙ্গী ফায়ার স্টেশন হয়ে উড়ালসেতু দিয়ে আসা গণপরিবহন ঢাকার প্রবেশ পথ বিএনএস সেন্টার আজমপুর ব্রিজের গোড়ায় থামিয়ে যাত্রী নামানোর কারণে ব্রিজের ওপর যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে চাকুরীজীবিদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়ে বিপাকে পড়েন অফিসগামীরা। এ ছাড়াও পন্যবাহী ট্রাক যানজটে আটকা পড়ার কারণে পচে গলে নষ্ট হওয়ায় বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস শাখ সবজি ও মাছ মাংসের দাম বাড়ছে হু হু করে।
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, উড়ালসেতুর উপর গড়ে উঠেছে পান সিগারেটের দোকান। এ ছাড়াও ব্রিজের উপর পরে আছে ময়লার স্তুপ। বালি ও ময়লা আবর্জনায় একাকার উড়ালসড়ক গুলো।
জানা যায়, উড়াল সড়ক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে রয়েছে বড় ধরনের সরকারী বাজেট।এখানকার স্থানীয়রা জানান, উড়াল সড়ক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বড় ধরণের বাজেট থাকা সত্ত্বেও বিআরটি প্রকল্পের অসাধু কর্মকর্তারা এ কাজে কোন জনবল না রেখে উক্ত বাজেট আত্মসাৎ করছে।
বিআরটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে রাজধানীর প্রবেশপথ টঙ্গী আব্দুল্লাহপুর হয়ে আজমপুর এলাকার উড়ালসেতু ময়লা আবর্জনায় একাকার হয়ে উঠেছে।
এদিকে উড়াল সড়কের মাঝ পথে গণপরিবহন গুলো স্ট্যান্ড বানিয়ে যাত্রী উঠা নামা করার কারণে প্রায়ই সেখানে যানজট সৃষ্টি হয়। এসময় পরিবহন যাত্রীরা বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে উত্তরা আজমপুর- টঙ্গী উড়াল সড়কে পরিবহন সেবা থেকে বঞ্চিত লাখো মানুষ।
গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকার প্রবেশপথ আবদুল্লাহপুর এলাকার বেইলি ব্রিজ ভেঙে পরার কারণে গাড়ির প্রচন্ডচাপে উড়াল সড়কের নিচে যানজট লেগেই আছে। তার উপর নতুন যন্ত্রণা দিনে- রাতে উত্তরা আজমপুর উড়ালসেতুর উপর যানজট।
এ সময় পরিবহন যাত্রীরা আরো বলেন, একদিকে বিমানবন্দর মহাসড়ক কাওলা ও আব্দুল্লাহপুর এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ি অপরদিকে সড়কের উপর যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও ফুটপাত দখল করে দোকান পাট বসানোর কারণে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়কের যানজটে নাকাল পরিবহন যাত্রীরা। অপরদিকে গত কয়েক মাস যাবত নতুন ভাবে যুক্ত হয়েছে উড়ালসেতুর উপর স্ট্যান্ড বানিয়ে যাত্রী উঠা নামা করতে গিয়ে যানজট সৃষ্টি করা।
পরিবহন চালকদের অতি লোভের কারণে যানজট মুক্ত হচ্ছে না উড়ালসড়ক। উড়ালসড়কের উপর অব্যবস্থাপনার কারণে বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। জানাযায়,রাজধানীর উড়ালসেতু গুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পর্যাপ্ত বাজেট থাকার পরও তারা এ কাজে জনবল নিয়োগ না করে উক্ত টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। উড়ালসড়কে উঠার সময় দাড়িয়ে যাত্রী উঠানো বিষয়ে আজমপুর এলাকার টিআই রমজান আলী ইনকিলাবকে বলেন,তারা যথা সাধ্য চেষ্টা করছেন এই এলাকায় যেন যাত্রীবাহী গণপরিবহন না দাঁড়ায়। ট্রাফিক নির্দেশনা না মানায় তারা নিয়মিত মামলা দিচ্ছেন। এ বিষয়ে তিনি বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন। তিনি আরো বলেন, বিমানবন্দর মহাসড়কের বিএনএস সেন্টার অংশে রোড ব্যারিয়ার লাগানোর ব্যপারে বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সাথে তাদের সিনিয়ররা দফায় দফায় আলোচনা করছেন।
পথচারীরা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,ফুটওভার ব্রিজের পাশ খোলা থাকায় পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পাড়াপাড় হচ্ছে। বিআরটি প্রকল্প এ অংশে ব্যারিকেড বসালেই এটি বন্ধ হয়ে যাবে। উড়ালসড়কে ঝুঁকি পূর্ণ অবস্থায় যাত্রী উঠা নামা ও তদারকিসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে বিআরটি প্রকল্পের পিডি ও প্রজেক্ট ম্যানেজারকে মুঠোফোনে বার বার ফোন করে ও পাওয়া যায়নি।