ফিলিস্তিনের গাজায় পবিত্র মাহে রমজান মাসে ও মুসলমান নারী পুরুষ ও শিশুদের উপর নজিরবিহীন ইসরায়েলি নির্যাতনের প্রতিবাদ ও ভারতে মুসলমানদের উপর আগ্রাসন, সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপরে অত্যাচার, ইসরায়েলি গণহত্যা ও ভারতে মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে আজ উত্তরা জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরাসহ আপামর জনগণ।
জুলাই-২৪ গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিমানবন্দর মহাসড়ক উত্তরা আজমপুর, বিএনএস সেন্টার ও হাউজবিল্ডিং এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় ছাত্র- জনতা। এ সময় প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে আজমপুর ও বিএনএস সেন্টারের সামনের সড়কে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
এ সময় তারা বলেন, খুনি হাসিনা এ দেশের মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছে। মানুষ জীবন নিয়ে খেলা করেছে,তারা খুনি। খুনিদের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই। শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে বিমানবন্দর মহাসড়ক জুড়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিলো অনেক বেশি। সরেজমিনে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সামনেই শিক্ষার্থীরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
অপরদিকে আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে উত্তরখান ইত্তেহাদুল ওলামার পক্ষ থেকে হযরত শাহ কবির (রহ.) মাজার ওয়াকফ স্টেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ইজরাইল ও ভারতীয় পণ্য বর্জনের অনুরোধ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন মুসুল্লিরা। তারা বলেন ভারত ও ইজরাইল আমাদের মা বোনদের উপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করছে। তাদের বিরুদ্ধে সারাবিশ্বের মুসলমানদের এক হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। তারা এ হত্যা কান্ড বন্ধের অনুরোধ জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, জুম্মার নামাজ শেষে উত্তরখান মাজার এলাকার আশপাশের কয়েকটি মসজিদ থেকে ইসরাইলকে সন্রাসী রাষ্ট্র আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে মুসুল্লীরা মাজার মসজিদের সামনে এসে জড়ো হয়। এ সময় তারা স্লোগানে স্লোগানে বলেন, ফিলিস্তিনি জিন্দাবাদ-ইজরাইল নিপাত যাক। ফিলিস্তিনে হামলা কেন ইসরাইল জবাব চাই, ইজরায়েলের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান। নেতানিয়াহুর দুই গালে জুতা মারো তালে তালে। মোদির দুই গালে জুতা মারো তালে তালে। ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান। দালালের কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও।
এছাড়াও উত্তরার বিভিন্ন সেক্টর মসজিদ থেকে আজ জুম্মার নামাজ শেষে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করেন মুসুল্লিরা। দুপুরে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজিতে শিক্ষার্থীরা জুম্মার নামাজ শেষে ১.৪৫ মিনিটে ইজরাইল ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলি পতাকা পদদলিত কর্মসূচি ও পালন করেন উত্তরার দিয়াবাড়ীতে অবস্থিত শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটির সামনে। জুলাই-২৪ এর গণহত্যার বিচার ও গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগ যুবলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠে উত্তরার রাজপথ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন,
আমার সোনার বাংলায়-আওয়ামী লীগ এর ঠাই নাই।
দফা এক দাবি এক-ওয়াকারের পদত্যাগ।
বয়কট বয়কট- আওয়ামী লীগ বয়কট।
জুলায়ের হাতিয়ার-গর্জে ওঠো আরেকবার,
২৪ এর হাতিয়ার- গর্জে ওঠো আরেকবার।
ফাঁসি ফাসি ফাঁসি চাই,
শেখ হাসিনার ফাসি চাই। চুপ্পু-ওয়াকার, এই মুহুর্তে বাংলা ছাড়।
আছিস যত স্বৈরাচার,এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়।
দিল্লি না ঢাকা- ঢাকা ঢাকা, আপোষ না সংগ্রাম- সংগ্রাম সংগ্রাম। আবু সাঈদ মুগ্ধ- শেষ হয়নি যুদ্ধ, দিয়েছিতো রক্ত- আরো দিবো রক্ত। এ সময় তারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না হলে তারা আরো বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে। অনেকে বলেন,আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে তাদের লাশের উপর দিয়ে রাজনীতিতে আসতে হবে। শিক্ষার্থীরা আরো বলেন সারা দেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তরায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্রজনতা প্রয়োজনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করবে।