নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষোভ ঝাড়লেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২৪ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৫ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩৯ পিএম
চলতি মাসের ১০ তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক করে দেশে ফিরেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। দেশে ফিরে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো কথা বলেনি। তবে তিনি স্বীকার করেছেন ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্ব বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানের মডেল নির্বাচন দেখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে তিনি যখন এমন স্বভাবসুলভ বক্তব্য দেন তখন ঢাকায় কর্মরত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন , প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে। যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। এ অবস্থায় রটে যায় নির্বাচন নিয়ে পর্দার অন্তরালে কিছু একটা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাপান সফরে যাচ্ছেন এটা পুরনো খরব। পরে জানানো হয় প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরের পর সেখান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পরে যুক্তরাজ্য সফর করবেন। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে নির্বাচন ইস্যুতে কৌতুহল বেড়ে যায়। এ অবস্থায় গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দেশ সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র আট মাস বাকি। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন প্রসঙ্গ প্রশ্ন করতেই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) নিজেরা বকবক করেন, বিদেশিগুলারে দিয়ে বকবক করান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আট মাস পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এগুলো নিয়ে হইচই। দেশে আর কোনো কাজ নাই? অনেক কিছু দেশে আছে। জলবায়ু, এমপ্লয়মেন্ট চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জের শেষ নেই। আপনারা এগুলো না বলে শুধু নির্বাচন নিয়ে বকবক করেন। শুধু নির্বাচন নিয়ে বকবক। এটা খুব দুঃখজনক। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এমন কথাবার্তা আমার কাছে খুব দুঃখজনক মনে হয়। আপনারা নিজেরা বকবক করেন, বিদেশিগুলারে দিয়ে বকবক করান কেন।
সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায় উল্লেখ করে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা চাই, একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য যে ধরনের ইনস্টিটিউশন করার দরকার সেগুলো প্রতিষ্ঠিত করেছি। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন রয়েছে। ভোটার আইডি কার্ড করা হয়েছে। স্বচ্ছ ব্যালট পেপার রয়েছে। তবে সরকার শুধু চাইলে, নির্বাচন কমিশন চাইলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এটা গ্যারান্টি দেওয়া যাবে না।
ড. মোমেন উল্টো বিরোধী দল বিএনপি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় কি না, সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনি বিএনপিকে জিজ্ঞেস করেন তারা কমিটেড কিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে। সব দল যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কমিটমেন্ট দেয় তবেই সুন্দর ও স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। কারণ সরকার ব্যর্থ। নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ নির্বাচন দিতে প্রস্তুত। বাকিদের (রাজনৈতিক দলগুলো) দলে আনেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে বিরোধীসহ সব দলের আন্তরিকতা ও ঐকান্তিকতা থাকতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য সব দলকে নির্বাচনে আসতে হবে।
নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং নির্বাচনের সময় কমিশনের হাতে সব ক্ষমতা ন্যস্ত থাকার কথা দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। শুধু স্বাধীন বললে ভুল হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওদের (নির্বাচন কমিশন) নিয়োগ দেন নাই। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কমিটি তাদের নিয়োগ দিয়েছে। তারা খুব স্বাধীন। তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় সব দায়দায়িত্ব কমিশনের। তারা (নির্বাচন কমিশন) চাইলে প্রশাসনে কর্মরত যে কোনো অফিসার নির্বাচনের সময় সিভিল হোক আর সিকিউরিটি হোক সাসপেন্ড করতে পারে, টারমিনেট করতে পারে, ট্রান্সফার করতে পারে। দেশের মানুষ বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ফের ভোট দেবে বলে প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ দিনের জাপান সফরে আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, সফরের অংশ হিসেবে বুধবার বিকেলে জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিন সন্ধ্যায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার কার্যালয়ে দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষি, মেট্রোরেল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডেশন, শিপ রিসাইক্লিং, কাস্টমস ম্যাটারস, ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি, ডিফেন্স কো-অপারেশন, আইসিটি ও সাইবার সিকিউরিটি কো-অপারেশন ইত্যাদি সেক্টরে প্রায় আটটি চুক্তি বা সহযোগিতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সফরসঙ্গী হবেন শেখ রেহানা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুল রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলক প্রমূখ।
ড. মোমেন জানান, আগামী ২৭ এপ্রিল টোকিওর একটি হোটেলে বিএসইসি, বিডা ও জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের যৌথ আয়োজনের একটি বিনিয়োগ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিন মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখায় চার জাপানি নাগরিককে বিশেষ সম্মাননা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেসির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সেই সাংবাদিক
দেশের মানুষ হাসিনার ফাঁসি চায় :ভোলায় সারজিস আলম
জীবনযাত্রা ব্যয় আরো বাড়তে পারে
সাবেক ওসি শাহ আলমকে ধরতে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট
মনে হচ্ছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ভালোভাবেই হচ্ছে
চাল ও মুরগির বাজার অস্থিতিশীল
সামরিক খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় তুরস্ক
মানুষ জবাই করা আর হাত-পা ভেঙে দেয়ার নাম তাবলিগ নয় :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান
মুজিব কোট এখন ‘বাচ্চাদের পটি’
সীমান্তে প্রতিরোধ ব্যূহ
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আরও ৬ জনের লাশ ঢামেক মর্গে
মালয়েশিয়ায় এনআইডি ও স্মার্ট কার্ড সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার
ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ্
মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ : আহত ২৫
ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগী মনে করে তালেবান
মাইনাস টু ফর্মুলার আশা কখনো পূরণ হবে না : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
গাজীপুর কারাগারে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে শীর্ষ পর্যায়ের দূত পাঠাবে চীন