ছোট কারাগার থেকে বৃহৎ কারাগারে প্রবেশ করেছি
২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১১:২০ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৯ পিএম
দীর্ঘ ১৪০ দিন কারাবন্দী থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। এসময় জেলগেটে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তার সহধর্মিণী আরজুমান আরা বেগমসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের কয়েকশ› নেতাকর্মী।
রুহুল কবির রিজভীর মুক্তির সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের রাজু আহমেদসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
কারামুক্ত হয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, গোটা দেশই এখন কারাগার। বর্তমানে মানুষের কোনো অধিকার নেই। ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। গণতন্ত্রের মুক্তি মিললেই মানুষ সকল অধিকার ফিরে পাবে। তিনি বলেন, ছোট কারাগার থেকে বৃহত্তর কারাগারে প্রবেশ করেছি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। এসময় তিনি আটক যুবদল নেতা আব্দুল মুনায়েম মুন্না, এসএম জাহাঙ্গীর, গোলাম মওলা শাহীনসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দাবি করেন।
পরে প্রাইভেট গাড়িতে করে সরাসরি বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এসময় নেতাকর্মীরা রিজভীর মুক্তিতে অভিনন্দন জানিয়ে এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ নানা স্লোগানে মুখরিত করে তুলেন। রুহুল কবির রিজভী বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে তার আদাবরের বাসায় পৌঁছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাসায় পৌঁছলে সেখানে তার স্ত্রী তাকে স্বাগত জানান। পরে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, মীর শরাফত আলী সপু, আসাদুল করিম শাহীন, মীর নেওয়াজ আলী, খন্দকার আবু আশফাক, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম তেনজিং, মেয়র মজিবুর রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, গাজীপুর মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক এম মঞ্জুরুল করিম রনি, যুগ্ম আহবায়ক সুরুজ আহমেদ, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎসজীবী দলের আবদুর রহিমসহ বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ জানান, রুহুল কবির রিজভী গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ৫০টি মামলায় জামিন পান। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং কুমিল্লার আদালত থেকে এসব মামলায় জামিন পান। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা বেশির ভাগ মামলায় নাশকতার অভিযোগ আনা হয়। সর্বশেষ মানহানির মামলায় গোপালগঞ্জের আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রুহুল কবির রিজভীসহ চার শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করে। পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা করে পুলিশ। পল্টন ও মতিঝিল থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রুহুল কবির রিজভীকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে আরও বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
কারাগারে থাকাকালীন কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল কবির রিজভী। সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল দুপুরে পুরান ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে তাকে প্রিজনভ্যানে করে কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার পথেই অসুস্থ হন। তার অসুস্থতায় চিন্তিত ছিল তার পরিবার। তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে উন্নত ও সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম। অসুস্থতার কথা শুনে কারাগারে ও আদালতে রিজভীর সঙ্গে দেখা করতে বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরেরও দায়িত্বে রয়েছেন। আশির দশকে আন্দোলনের সময় রুহুল কবির রিজভী পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তখন দেশে ও পরে বিদেশে তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়। এর পর থেকেই তার পেটের সমস্যা জটিল হয়ে আছে।
চিকিৎসকের পরামর্শে প্রায় ৩০ বছর ধরে রিজভী হাতের স্পর্শে খাবার খান না। খোলা পানি খেতে পারেন না। বোতলজাত পানি পান করতে হয়। মহামারি করোনাকালেও তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় চার মাস হাসপাতালে ছিলেন। এর আগে তার হার্ট অ্যাটাকও হয়েছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে খুবই সতর্কভাবে জীবনযাপন করতে হয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিজভীকে।####
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তামিমকে টপকে শীর্ষে মুশফিক
শেষ মিনিটের গোলে পয়েন্ট হারাল মায়ামি
ভিনিসিউস-এমবাপ্পে ঝলকে রিয়ালের বড় জয়
ফের বিবর্ণ ইউনাইটেড হারাল পয়েন্ট
দিয়াজের জোড়া গোলে চূড়ায় অলরেডসরা
এবার বুন্দেসলীগায়ও বায়ার্নের গোল উৎসব
দিয়াজের জোড়া গোলে চূড়ায় অলরেডসরা
দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও অজিদের অনায়স জয়
প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত
দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান
ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই
বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪
পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা
মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি
জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী
মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান
বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির
একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১
কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু