অনানুষ্ঠানিক প্রচারণায় আওয়ামী লীগ ও জাপা প্রার্থীরা
০৪ মে ২০২৩, ১০:১৯ পিএম | আপডেট: ০৫ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
বরিশাল নগর পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে অঘোষিত ও অনুুষ্ঠানিক প্রচারণার মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। এ দুটি দলের প্রার্থীরাই সাংগঠনিক কর্মকাÐে যথেষ্ঠ ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী এখনো বিধি-বিধানকে পাশ কাটিয়ে প্রকাশ্যে বা অনুাষ্ঠানিক প্রচারণায় না থাকলেও নির্বাচন কেন্দ্রীক সাংগঠনিক কর্মকাÐে রয়েছেন। তবে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী বড় ধরনের শোডাউন বা যেকোনো চমক নিয়েই মাঠে আসতে পারেন বলেও আভাষ পাওয়া গেছে।
মহানগরী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বাসিন্দা ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি ফয়জুল হক নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বলেও ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মেয়র নির্বাচিত তার তার সব কর্মকাÐ নগরবাসীর জন্য ও নগরবাসীর দ্বারাই পরিচালিত হবে বলে অঙ্গীকার পূর্ণব্যক্ত করেছেন। নগরবাসীর কষ্ট বৃদ্ধি করে, এমন কোনো পদক্ষেপ তিনি গ্রহণ করবেন না বলেও জানান।
তার মতে, বরিশাল মহানগরবাসীকে দুঃশাষণের হাত থেকে রক্ষা করতেই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। নির্বাচিত হলে, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই আগামী দিনে জনগণের সেবা করতে চান বলেও জানান আবুল খায়ের। প্রেসক্লাবে মতবিনিময়কালে আবুল খায়ের আবদুল্লাহর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কয়েকজন নেতাও তার সাথে ছিলেন। তবে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ কোনো নেতাকে আবুল খায়েরের সাথে দেখা না গেলেও বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর মামা প্রেসক্লাব সদস্য কাজী কামাল উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জাতীয় শ্রমিক পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জাপা প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচন নিয়ে তার নিজের ও দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালটে ভোটগ্রহণসহ বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস।
এ দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও দলের কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস সাংবাদিকদের বলেন, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা না থাকার পাশাপাশি বিগত নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি। এখনো বিগত নির্বাচনকে ঘোষিত ব্যক্তি ছাড়া অন্যান্য প্রার্থী এবং সাধারণ ভোটারগণ একটি প্রহসন বলে আখ্যায়িত করে। তিনি বলেন, এ কারণেই এবার বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। জাতীয় পার্টি কোনো প্রহসনের অংশীদার হতে চায় না বলে দাবি করে ইভিএম বাদ দিয়ে সেনাবাহিনী নিয়োগসহ ভোটাররা যাতে নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্ভয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সে দাবী পুর্ণব্যক্ত করেন তিনি।
প্রকৌশলী তাপস ইভিএম’এর বিষয়ে কারিগড়ি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এ যন্ত্রের মূলত দুটি অংশ। একটি হার্ডওয়ার এবং মাদার বোর্ড, মাইক্রো প্রসেসর ও ভোটগ্রহণের জন্য সংযোজিত অন্যান্য যন্ত্রপাতি। দ্বিতীয় অংশ সফট্ওয়্যার। এতে রয়েছে অপারেটিং সিস্টেম, ডিভাইস ড্রাইভ, বিভিন্ন ফাইল ও কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন। যেহেতু ইভিএম’এ ব্যবহৃত সফটওয়্যারের উপর নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করে, তাই এই অংশের নিয়ন্ত্রণ যার হাতে থাকবে তার পক্ষে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করা অত্যন্ত সহজ বলেও দাবি করেন তিনি। ইভিএম’র সাথে সংযোজিত যেকোনো ইনপুট পোর্টের মাধ্যমে যন্ত্রটির ভেতরে ম্যালওয়্যার (মলিকুলাস কোড) প্রবেশ করিয়ে ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করা সম্ভব বলেও দাবি করেন জাপা প্রার্থী। তার মতে, আমোদের দেশের অধিকাংশ নাগরিকের কম্পিউটার সম্পর্কেই অভিজ্ঞতা নেই। সেখানে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে তাদের সংশয় রয়েছে। তাই ভোট প্রদানে ধীরগতি, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বয়স্ক ভোটাররাসহ অনেকেই ভোট না দিয়ে ফিরে যান। প্রযুক্তিগতভাবে ইভিএম একটি দুর্বল যন্ত্র বলেও দাবি করেন তিনি। এতে ‘ভোটার ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপিএটি)’ নেই। তাই ভোট গ্রহণে কোনো অনিয়ম হলেও নির্বাচন কমিশন যে ফলাফল ঘোষণা করে সকলকে তাই মেনে নিতে হয়। এখানে পুনরায় ভোট গণনারও কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেন জাতীয় পার্টি প্রার্থী প্রকৌশলী তাপস।
তার মতে, প্রযুক্তিগত কারণে ইভিএম ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতিও করা যায়। বায়োমেট্রিক ভিত্তিক ইভিএম অনেক ভোটারকে শনাক্ত করতে পারে না বলে দাবি করে তিনি বলেন, ফলে ‘প্রিসাইডিং অফিসারদেরকে তাদের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে যন্ত্রটি খুলে দেয়াসহ ইভিএমকে ওভাররাইড করার ক্ষমতা রাখে। যেকোন ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মতো প্রোগামিং-এর মাধ্যমে ফলাফল নিয়ে কারসাজি করা যায়। এছাড়া যারা ভোটগ্রহণ করবেন তারাও ফলাফল বদলে দিতে পারেন। চট্টগ্রামের বিগত সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দুবার ফলাফল ঘোষণার অভিযোগ রয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টি প্রার্থী তাপসের মতে, ‘নির্বাচনে স্বচ্ছতা প্রধান শর্ত। তাই ব্যালটে ভোট নিলে ব্যালট বাক্সটি খুলে দেখানোর পর আটকানো হয়ে থাকে। কিন্তু ইভিএম’এ তার কোনো সুযোগ নেই। এটি একটি অন্ধকার প্রকোষ্ঠ। যার ভেতরে কি আছে তা জানা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। জনসাধারণ ইভিএমর উপর কোনো আস্থা রাখে না বলেও দাবি করেন জাতীয় পার্টি প্রার্থী। তাই ‘নির্বাচনে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য ব্যালটেই ভোটগ্রহণের দাবি’ জানান তিনি।
সেনাবাহিনী নিয়োগ প্রসঙ্গে জাপা প্রার্থী ইকবাল বলেন, দেশের মানুষের সেনাবাহিনীর প্রতি গভীর আস্থা রয়েছে। তাই ভোটারদের মনের ভীতি দুর করা এবং নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করাসহ যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী নিয়োগেরও দাবি জানান তিনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়
বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি
পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ
শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক
অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল
‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’
হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী
মার্কিনিদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান
সংঘাতের মধ্যে নতুন অস্ত্র সামনে আনলো ইরান
ভারতকে পারমাণবিক সাবমেরিন আন্ডারওয়াটার ড্রোন দেবে ফ্রান্স