১৩ মাসে বজ্রপাতে ৩৪০ মৃত্যু
০৪ মে ২০২৩, ১০:২৪ পিএম | আপডেট: ০৫ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
খোলা মাঠে বজ্রপাতের ফলে বেশির ভাগই কৃষক মারা যাচ্ছে
আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে দেশে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে বজ্রপাত ভয়াবহ দুর্যোগ হিসাবে দেখা দিয়েছে। বিগত ২০১৫ সালে বজ্রপাতকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই বছর বজ্রপাতে নিহত হয়েছিলেন ১৮৬ জন। সে অবস্থার এখনো উন্নতি হয়নি। চলতি বছরেই বজ্রপাতে মারা গেছে ৬৬ জন। আর গত ১৩ মাসে দেশে বজ্রপাতে মারা গেছে ৩৪০ জন। এই মৃত্যুদের মধ্যে অধিকাংশই কৃষক। এসব মৃত্যু হয়েছে কৃষি জমিতে কাজ করার সময়, অথবা বৈশাখী ঝড়ে আম কুড়াতে গিয়ে। আবার বাড়ির আঙ্গিনায় খেলা করার সময়, এছাড়া মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা গেছে।
সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএফ) গতকাল এ তথ্য জানায়। সংগঠনটি বজ্রপাতে মৃত্যু নিয়ে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এই পরিসংখ্যান করা হয় জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং টেলিভিশনের তথ্যের ভিত্তিতে। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত মৃত্যুর তথ্য নেওয়া হয় পরিসংখ্যানে।
এতে বলা হয়, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত বজ্রপাতে ৩৪০ জন মারা গেছেন। আর ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতে মারা গেছেন ২৭৪ জন। এরমধ্যে ২৩৯ জন পুরুষ আর ৩৫ জন নারী। নারী ও পুরুষের মধ্যে ১২ জন শিশুও রয়েছে।
এসএসটিএফের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, ২০২৩ সালে বজ্রপাতে প্রথম মৃত্যু হয় ১৫ মার্চ। এরপর থেকে ৩ মে পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৬ জন। এরমধ্যে ৬৩ জন পুরুষ ও তিনজন নারী, আর দুজন শিশু এবং চারজন কিশোর রয়েছে। আহত হয়েছেন আটজন। এরমধ্যে শুধু কৃষি কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের। নৌকায় থাকা অবস্থায় বা মাছ ধরতে গিয়ে মারা গেছেন ১১ জন।
চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারি মাসে বজ্রপাতে হতাহতের কোনো ঘটনা না ঘটলেও মার্চ থেকে মৃত্যুর ঘটনা শুরু হয়। এই মাসে মারা যান ১৫ জন। আর এপ্রিল মাসে মৃত্যু হয় ৫০ জনের। অন্যদিকে চলতি মে মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত মারা গেছেন একজন।
এবছর বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে সিলেটের সুনামগঞ্জে। এ জেলায় মারা গেছে সাতজন। আর সিলেট জেলায় মারা গেছে পাঁচজন।
এসময় সংগঠনের সভাপতি ড. কবিরুল বাশার ও সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে সরকারের কাছে দুই দফা দাবি করেন। এরমধ্যে একটি হলো সচেতনতা বাড়াতে বজ্রপাত বিষয় পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা। আরেকটি হলো মাঠে মাঠে বজ্রনিরোধক টাওয়ার নির্মাণ ও দ্রæত বর্ধনশীল গাছ লাগানো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্ট্যাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন বলেন, বজ্রপাত একটি স্বাভাবিক ঘটনা। যা আগেও হয়েছে। কিন্তু সা¤প্রতিক সময়ে এটা অনেক বেড়ে গেছে। গত দুই-তিন বছরে গড়ে ৩০০-৪০০ লোক মারা গেছে। অতীতে এমন হয়নি। প্রধানত দু›টি কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে আবহাওয়া ও জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এর ফলে বৃষ্টিপাতের ধরন ও সময় পরিবর্তন হয়েছে। কালবৈশাখি বেশি হচ্ছে, আর বজ্রপাতের সংখ্যা বা পরিমাণ বেড়ে গেছে। অন্যদিকে আগে গ্রামাঞ্চলে প্রচুর উঁচু গাছ ছিল। তাল গাছ, বটগাছ প্রভৃতি। সাভাবিক নিয়মে বজ্রপাত হলে এসব উঁচু গাছ তা অ্যাসজর্ব করে নিতো। কিন্তু এখন তা না থাকায় যখন খোলা মাঠে বজ্রপাত হয় তা মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শহরে গাছ না থাকলেও উঁচু উঁচু ভবন আছে। ফলে শহরের মানুষ এই মত্যু থেকে রেহাই পাচ্ছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়
বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি
পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ
শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক
অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল
‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’
হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী
মার্কিনিদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান
সংঘাতের মধ্যে নতুন অস্ত্র সামনে আনলো ইরান
ভারতকে পারমাণবিক সাবমেরিন আন্ডারওয়াটার ড্রোন দেবে ফ্রান্স