বিদেশিরা বাংলাদেশের কাছে গণতন্ত্র চর্চা শিখতে পারে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১০ মে ২০২৩, ১১:০২ পিএম | আপডেট: ১১ মে ২০২৩, ১২:০৩ এএম
বিদেশীরা বাংলাদেশের কাছে গণতন্ত্র চর্চা শিখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের সূতিকাগার। বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা ৩০ লাখ লোক প্রাণ দিয়েছি। গণতন্ত্র নিয়ে অন্যদের (বিদেশী) কাছ থেকে আমাদের শেখার কিছু নেই। বরং অন্যরা আমাদের থেকে শিক্ষা নেবে। গতকাল বধুবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারত মহাসগরীয় আঞ্চলিক সম্মেলন-২০২৩ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ইউরোপে কোনো কোনো দেশে ৩০ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেয় না। আমেরিকাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছাড়া ২৬ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেয়ার নজির খুব কম। তিনি জানান, আগামী ১২ ও ১৩ মে ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যারা ভোট দিতে চায়, তারা ভোট দিতে পারে। আমাদের দল আর ভোট যার যার। যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে। দেশের প্রতিটি নির্বাচনে এ সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার সরকার অঙ্গীকার করেছে, দেশে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন করবে। এটি করতে যা যা দরকার তা আমরা করেছি। আমরা একটা স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন করব। বিদেশীরা কী ভাবল তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে কর্মসংস্থান, জলবায়ু, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিসহ অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচনও একটি চ্যালেঞ্জ। ইউরোপে কোনো কোনো দেশে ৩০ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেয় না। আমেরিকাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছাড়া ২৬ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেয়ার নজির খুব কম। অথচ বাংলাদেশের নির্বাচনে ৭২ শতাংশের বেশি লোক ভোট দেয়। আর ভুয়া ভোট যাতে না হয় তার জন্য ছবিসহ ভোটার তালিকা করেছি, বায়োমেট্রিক সুবিধা করেছি। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রীর জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা যখন ওয়াশিংটনে পৌঁছাই সেখানে কোনো বিক্ষোভকারী খুঁজে পাইনি। এমনকি লন্ডনে থাকা অবস্থায় কোনো বিক্ষোভকারীকে দেখতে পাইনি। কোনো মুন্ডুও খুঁজে পাইনি। এগুলো ফেসবুকেই দেখি। ঘরের কোনায় বসে বানায়। যার কোনো সত্যতা নাই। তিনি আরো বলেন, আমি হোটেল থেকে বের হয়ে বহুত খুঁজেছি কোনো একটা লোককে পাই কিনা। কোনো একজন বিরোধী দলের লোক পাইলে তাকে জিজ্ঞেস করব, আপনারা এত অসন্তুষ্ট কেন? অথচ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন লাইন ধরে ছিল।
ড. মোমেন বলেন, স্বচ্ছ, সুন্দর নির্বাচনের জন্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সব দলের কমিটমেন্ট থাকতে হবে। সবাই মিলে কমিটমেন্টটা নিশ্চিত করতে পারলেই স্বচ্ছ, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়েও কথা বলেন। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য সফরের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাক্ষাতের বিষয়টি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ করেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন তিনি এবং তার পরিবার শেখ হাসিনাকে ডেভেলপমেন্ট প্রাইম মিনিস্টার হিসেবে অনেক দিন ধরে অনুসরণ করেন। আওয়ামী লীগের গত ১৪ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার জন্য এটি সম্ভব হয়েছে।
দেশের দারিদ্র হার নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা দারিদ্র্যের হার ৪২ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে নিয়ে এসেছি। আর অতি দারিদ্র্যের হার ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি দারিদ্র্যমুক্ত দেশে রূপান্তরিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স আয়োজন করতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মেলন আয়োজনের ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি এবং অংশীদারত্ব’। সম্মেলনে মরিশাসের প্রেসিডেন্ট, মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আনুমানিক আরো ২৫টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিসহ আরো প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন। এতে ভারত, নেপাল, ভুটান ও সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রী যোগ দেবেন।
ড. মোমেন জানান, কোভিড এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এই প্রতিপাদ্যটি খুবই যুক্তিযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা আশা করছি যে, এই সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অনেক সুপারিশ ও মতামত উঠে আসবে, যা এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ কর্ম-পরিকল্পনা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এর আগে পাঁচটি সম্মেলন যথাক্রমে ২০১৬ সালে সিঙ্গাপুরে, ২০১৭ সালে শ্রীলংকায়, ২০১৮ সালে ভিয়েতনামে, ২০১৯ সালে মালদ্বীপে এবং ২০১১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের ৬ষ্ঠ সম্মেলন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম ও ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর মাশফি বিনতে শামস প্রমূখ। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মধ্যরাতে রাজধানীর সড়কে সড়কে সেনা চেকপোস্ট
বিপন্ন মেরু ভালুককে গুলি করে হত্যা, তোপের মুখে আইসল্যান্ডের পুলিশ
বাড়িতে ঢুকে আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
নদীতে মেহেদী রাঙা হাতে ‘আই লাভ ইউ’ লেখা যুবতীর লাশ উদ্ধার
গান গেয়ে উল্লাস করে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, সমালোচনার ঝড়
বড় জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল দ. আফ্রিকা
গোল উৎসবে বার্সার ছয়ে ছয়
রোনালদোর দ্রততম শত গোলের রেকর্ড ছুঁলেন হল্যান্ড
ঘটনাবহুল ড্রয়ে শেষ আর্সনাল-সিটি মহারণ
বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়
বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি