বাড়ানো হচ্ছে গ্যাসের দাম
১৬ মে ২০২৩, ১০:৫১ পিএম | আপডেট: ১৭ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
ভাত দেবার মুরোদ নাই, কিল দেবার গোসাঁই’ ক্ষণার এই বচন যেন রপ্ত করে ফেলেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। গত বছরের জুন মাসে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু রাজধানী ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় চুলা জ্বলছে না। বেশি দাম দিয়েও মানুষ গ্যাস পাচ্ছেন না। এর মধ্যেই ফের গ্যাসের দাম বাড়াতে চায়। ভোক্তাদের গ্যাস দেয়ার মুরোদ না থাকলেও কিল দেয়ার গোসাঁইয়ের মতোই দাম দুই চুলায় ৫১২ টাকা এবং এক চুলায় ৩৯০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
মিটার ছাড়া গ্রাহকদের জন্য মাসে গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে দুই চুলায় ৬০ ঘনমিটার ও এক চুলায় ৫৫ ঘনমিটার ধরা হয়। এতে দুই চুলার মাসিক বিল ১ হাজার ৮০ ও এক চুলার বিল ৯৯০ টাকা ঘোষণা করা হয়। গত জুনে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের এই দাম বাড়িয়েছে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সেই বৃদ্ধির ১০ মাস পরে আপত্তি জানিয়েছে দিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। তারা এখন দুই চুলার মাসিক বিল হবে ১ হাজার ৫৯২ টাকা এবং এক চুলায় বিল হবে এক হাজার ৩৮০ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে তিতাস বিইআরসির কাছে সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়েছে। কমবেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোনো সমীক্ষা বা তথ্য বিশ্লেষণ না করেই ঘনমিটারের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। এতে কারিগরি ক্ষতি বেড়েছে এবং সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তিতাস আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে।
রান্নার বাইরে বিশুদ্ধ করার কাজে পানি ফুটানো, শিল্পকারখানা এলাকায় একই বাসায় একাধিক পরিবারের সাবলেট থেকে বেশি রান্নার ফলে গ্যাসের অপব্যবহার বেশি হচ্ছে। তিতাসের চিঠিতে পোস্টেজ মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে গত অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত বিলের হিসাব দেখানো হয়েছে। দুই চুলায় প্রতি মাসে গড় ব্যবহার হয়েছে ৯৭ ঘনমিটার। মার্চে এমন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার ৭৪৪। তবে তিতাসের প্রিপেইড গ্রাহকদের কোনো তথ্য তারা চিঠিতে উল্লেখ করেনি।
এদিকে তিতাসের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য গ্রহণ করেছে কমিশন। তবে বিধি মোতাবেক এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে প্রক্রিয়া শুরু করবে তার আগে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কাছে কিছু তথ্য যেছে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন। এসব তথ্য আসার পরে দাম বাড়ানো প্রক্রিয়া শুরু হবে,তবে তার আগে নয় বলে জানা গেছে।
বিইআরসির সাবেক সদস্য (গ্যাস) বলেন, এর আগে যাচাই–বাছাই করেই দুই চুলায় ৬০ ঘনমিটার নির্ধারণ করা হয়েছিল। যদিও এটি আরও কমানো চিন্তা ছিল কমিশনের। তিতাসকে সতর্ক করে বেশি কমানো হয়নি। অবৈধ সংযোগ দিয়ে একটি গোষ্ঠী দিনদুপুরে ডাকাতি করছে আর কারিগরি ক্ষতির দায় চাপাচ্ছে মিটার ছাড়া গ্রাহকদের ওপর।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের চেয়ারম্যান মো. নূরুল আমিন ইনকিলাবকে বলেন, তিতাস থেকে একটি প্রস্তাব পাওয়া গেছে। প্রস্তাবটি বিবেচনায় নিয়েছে কমিশন। তবে বিধি মোতাবেক এ নিয়ে করণীয় ঠিক করা হবে। তার আগে তিতাসের কাছ থেকে কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। এসব তথ্য আসমার পরে প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। তার আগে নয়।
পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহারকারী গ্রাহকদের চুলার বিল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। দুই চুলায় মাসিক গ্যাসের বিল ৫১২ টাকা বাড়াতে চায় রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলায় গ্যাস সরবরাহকারী এই বিতরণ সংস্থা। আর এক চুলায় মাসে ৩৯০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। গত জুনে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের দাম বাড়ায় জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এ সময় প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৮ টাকা করা হয়। তবে মিটার ছাড়া গ্রাহকদের জন্য মাসে গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে দুই চুলায় ৬০ ঘনমিটার ও এক চুলায় ৫৫ ঘনমিটার ধরা হয়। এতে দুই চুলার মাসিক বিল ১ হাজার ৮০ ও এক চুলার বিল ৯৯০ টাকা ঘোষণা করা হয়। সেই ঘোষণার ১০ মাস পর এখন আপত্তি জানাচ্ছে তিতাস। তিতাসের নতুন প্রস্তাব কার্যকর হলে দুই চুলার মাসিক বিল হবে ১ হাজার ৫৯২ টাকা। আর এক চুলায় বিল হবে এক হাজার ৩৮০ টাকা। বিইআরসির কাছে সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়েছে তিতাস। এতে বলা হয়, কমবেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোনো সমীক্ষা বা তথ্য বিশ্লেষণ না করেই ঘনমিটারের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। এতে কারিগরি ক্ষতি বেড়েছে এবং সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তিতাস আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
তিতাসের অভিযোগ সঠিক নয়। গত বছর গ্যাসের দাম নিয়ে শুনানির সময় তিতাসের ৩ লাখ ২০ হাজার ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির ৫০ হাজার প্রিপেইড মিটার গ্রাহকের গ্যাস বিল বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে। এতে দেখা যায়, দুই চুলার গ্রাহকেরা গড়ে ৪৫ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন মাসে। কিন্তু এটি কিছুটা বাড়িয়ে ৬০ ঘনমিটার নির্ধারণ করা হয়েছিল মিটার ছাড়া গ্রাহকদের জন্য। একই সময় বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে ঘনমিটারের পরিমাণ কমানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিইআরসির কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের সদস্য (গ্যাস) ড.মো. হেলাল উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, তিতাসের প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছে। আমরা এর কাজ শুরু করেছি।
তিতাসের প্রিপেইড মিটার গ্রাহকদের বিল বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন বলা হয়, প্রতি মাসে মিটার গ্রাহকদের কাছ থেকে গড়ে ১৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা করে আয় করেছে তিতাস। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের বর্তমান দাম ১২ টাকা ৬০ পয়সা হিসাবে তাঁদের মাসিক ব্যবহার দাঁড়ায় প্রায় ৩৪ ঘনমিটার। এরপর গ্যাসের দাম নির্ধারণের সময় বিইআরসির কাছে দুই চুলায় মাসিক ব্যবহার ৪০ ঘনমিটার করার দাবি জানিয়েছিল ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সরকারের জনপ্রিয়তা থাকলেও প্রশাসনিক অসহযোগিতা রয়েছে: তথ্য উপদেষ্টা
সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় ইমামকে চাকরি ছাড়তে বললেন মসজিদের সভাপতি!
সময় টিভির সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি: ওই দিনের প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরলেন হাসনাত
চট্টগ্রামের প্রবীণ আলেম আল্লামা জালাল উদ্দীনের ইন্তেকাল
ইসকন নিয়ে পোস্ট: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
সংস্কার প্রশ্নে পিছপা হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা
সদরপুরে জাসাসের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে র্যালী ও শোভাযাত্রা
বেগমগঞ্জে যুবদল নেতা সুমনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে চরম অচল অবস্থা, সহিংস ঘটনার আশংকা
জকিগঞ্জে জামায়াতের সেক্রেটারিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ
থার্টি ফাস্ট নাইট নিষিদ্ধ করতে হবে আইন করে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান
মেলবোর্নে স্মিথ-কামিন্সের অনন্য কীর্তি
মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
নেত্রকোনায় এ আর খান পাঠান স্মৃতি উন্মুক্ত ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন
এবার তিন অঙ্কে মুর্শিদা
আগুনে পুড়েছে সবচেয়ে বিতর্কিত ফাইলগুলো: রিজভী
সখিপুরে বনবিভাগের বিরুদ্ধে বিএনপি’র বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল
হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ
বিসিএফের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনায় ফ্রান্স প্রবাসীদের প্রাণবন্ত মিলনমেলা
পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থগিত পরিচালক সমিতির নির্বাচন