ঐতিহাসিক নেতৃত্বের তৃতীয় দশকের পথে এরদোগান
২১ মে ২০২৩, ১১:২৪ পিএম | আপডেট: ২২ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান দেশটির সাধারণ নির্বাচনের আগের শেষ সপ্তাহ টিতে তার তার ইসলামিক শাসনের দুই দশককে ঐতিহাসিকভাবে ২০২৮ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করতে যাচ্ছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ধর্মনিরপেক্ষ নেতা কেমাল কিলিচদারোগ্লু প্রায় ৪৫ শতাংশ ভোট নিয়ে লড়াইয়ে টিকে রয়েছেন। তবে রবিবার এরদোগান প্রথম রাউন্ডে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট জয় করে নিয়েছেন। ইউরেশিয়া গ্রুপ কনসালটেন্সি বলেছে যে, পরের রবিবারে এরদোগানের জয়ের সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ। পরামর্শক সংস্থা ভেরিস্ক ম্যাপলক্রফ্ট’র হামিশ কিনার মতে, ‘দ্বিতীয় রাউন্ডে এটি কিলিচদারোগ্লুর জন্য চরম কঠিন হবে।
তুরস্কের সাম্প্রতিক বছরগুলি অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, যা এরদোগানের আরও সমৃদ্ধ প্রাথমিক শাসনের অর্জনগুলিকে কিছুটা হালকা করে দিয়েছে। বেশিরভাগ সমস্যাই সুদের হারের বিরুদ্ধে এরদোগানের তীব্র লড়াই থেকে উদ্ভূত। কিছু বিশ্লেষক তুরস্কের অর্থনৈতিক মন্দার জন্য সুদের বিরুদ্ধে এরদোগানের ইসলামিক নিয়ম মেনে চলাকে দায়ী করেন। পরামর্শক সংস্থা ক্যাপিটাল ইকোনমিক সতর্ক করেছে যে, এরদোগানের বিজয় তুরস্কের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে, যার মধ্যে একটি গুরুতর মুদ্রা সংকটের হুমকি রয়েছে। তবে, এরদোগান শুরু থেকেই নিজের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর আত্মবিশ^াসী। তিনি এই সপ্তাহে সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমার কাছে একটি গবেষণায় আছে যে, সুদের হার এবং মুদ্রাস্ফীতি ইতিবাচকভাবে সম্পর্কযুক্ত। সুদের হার যত কম হবে, মুদ্রাস্ফীতিও কম হবে।’
এরদোগান তার প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারোগ্লুর জাতীয়তাবাদী পদক্ষেপকে সমালোচনা করে বলেছেন যে, রাশিয়ার দিকে এরদোগানের মোড় তুরস্কের বিশাল জ্বালানি বিলের জন্য শত কোটি ডলারের ত্রাণ সুরক্ষিত করতে সাহায্য করেছে। তিনি সিএনএনকে বলেন, ‘রাশিয়া এবং তুরস্ককে সম্ভাব্য প্রতিটি ক্ষেত্রে একে অপরের প্রয়োজন।’ এরদোগান আরও যুক্তি দিয়েছেন যে, পুতিনের প্রতি তার আরও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান তাকে রাশিয়ার সাথে জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি চুক্তিতে আলোচনায় সহায়তা করেছে, যার অধীনে ইউক্রেনকে শস্য রপ্তানি পুনরায় শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এরদোগান বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আমাদের বিশেষ সম্পর্কের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এরদোগানকে স্বৈরাচারী বলে অভিহিত করে ২০১৯ সালে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার জবাবে এরদোগান প্রশ্ন করেছেন, ‹একজন স্বৈরশাসক কি কখনও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে অংশ নেবেন?› সূত্র:ডন।
দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে প্রবাসী তুর্কিদের ভোটদান শুরু
বিদেশে বসবাসকারী তুর্কি নাগরিকরা গত শনিবার দেশের বিদেশী মিশন এবং শুল্ক গেটে ২৮ মে নির্ধারিত তুর্কিয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় তাদের ভোট দেয়া শুরু করেন। বিদেশে ভোটিং চলবে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত। যারা কাস্টমস গেটে ভোট দিতে চান তারা ২৮ মে পর্যন্ত ব্যালট দিতে পারবেন। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে বাকুর তুর্কি দূতাবাস এবং নাখচিভান ও গাঞ্জায় তুর্কি কনস্যুলেটে স্থাপিত ব্যালট বাক্সে ভোটাররা তাদের ভোট দিতে শুরু করে। এছাড়াও, তুর্কি ভোটাররা শনিবার উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, কাজাখস্তান এবং কিরগিজস্তানে ভোটের দিকে যেতে শুরু করে। এছাড়াও ইউরোপ, পশ্চিম বলকান, মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বসবাসরত তুর্কি নাগরিকরা শনিবার থেকে তাদের ভোটদান শুরু করেছেন।
গত ১৪ মে প্রথম ধাপের নির্বাচন হয়। তবে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় সর্বাধিক ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। প্রবাসীদের ভোট আগেই শুরু হলো। প্রবাসে থাকা ৩৪ লাখ ভোটার ভোট দিতে পারবেন। প্রথম ধাপের নির্বাচনেও আগে ভোট দিয়েছিলেন দেশের বাইরে থাকা তুরস্কের নাগরিকেরা। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ও বিরোধী জোটের প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগ্লুর মধ্যে একজনকে বেছে নেবেন ভোটাররা। প্রথম ধাপের নির্বাচনে এরদোগান পেয়েছিলেন ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট এবং কিলিচদারোগ্লু পান ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট।
এরদোগানকে হারাতে বিরোধী দলগুলো একজোট হলেও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনেও এরদোগান ব্যাপক ভোটে জয়ী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। দুই দশক ধরে তুরস্কের ক্ষমতা এরদোগানের হাতে। কিন্তু প্রথম ধাপের ভোটে জয় নিশ্চিত করতে পারেননি এরদোগান। এ অবস্থায় তাকে হারাতে জোটের পাঁচ শীর্ষ নেতাকে নিয়ে গত বুধবার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন কেমাল কিলিচদারোগ্লু। তবে প্রথম দফার নির্বাচনে জিততে না পেরে প্রচারণা টিমকে বাদ দিয়েছেন কিলিচদারোগ্লু। ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামগলুকে এবার নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্ব দিতে চাইছেন তিনি। সূত্র : এএফপি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
গায়িকা রুকসানার রহস্যজনক মৃত্যু!
যে কোনো মূল্যে লাহোর কর্মসূচি সফল করুন: ইমরান খান
চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় সিএনজি চালকসহ নিহত ২
যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ভবনে বিচারককে গুলি করে হত্যা
ডিবির সাবেক ডিসি ৭ দিনের রিমান্ডে দলীয় বিবেচনায় শুদ্ধাচার পুরস্কার পান মশিউর
খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সংঘর্ষ: তিন জেলার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের
গরমে যেন শেষ সিলেট !
গল টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা
প্রেতাত্মাদের উসকে দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন হাসিনা
ময়মনসিংহে অস্ত্রসহ ডাকাত দলের ছয় সদস্য গ্রেপ্তার
খাগড়াছড়িতে হামলা, প্রতিবাদে ইবির আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নানকে জেলহাজতে প্রেরণ
কালীগঞ্জে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেন আটক
হাবিপ্রবিতে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ভিসি নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
ফ্যাসিবাদী দোসর মিডিয়া লীগে সংস্কার জরুরী
যৌথবাহিনীর হাতে সিলেট আটক বিপুল পরিমান ভারতীয় পণ্য
পরাজিত শক্তি এবং সুবিধাবাদীরা সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে লিপ্ত- বিমানবন্দরে সংবর্ধনা কালে যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা মুশাহীদ
নোয়াখালীতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ‘জুলুম-নির্যাতন করে আস্তাকুঁড়ে চলে গেছেন কাদের মির্জা’
পুলিশের সামনে হামলা বিএনপি ও যুবদল নেতা আহত
গাজীপুরে ছুটির দিনেও ২৫ শতাংশ কারখানা খোলা ছিল