বরিশাল সিটি নির্বাচনে কঠিন সমীকরণ
১০ জুন ২০২৩, ১০:৫৬ পিএম | আপডেট: ১১ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
ভোটের মাঠের প্রচারণায় গতকাল শনিববার থেকে শেষ হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। জয়ের ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত কঠিন সমীকারণ থাকবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটারা। অর্থ্যাৎ চারটি মেয়র প্রতিদ্বন্দির মধ্যে তুমুল ভোট লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা। স্থানীয় ভোটাররা বলছেন বরিশালে ভোটের সমীকারণে সেই প্রার্থীই এগিয়ে থাকবেন যিনি নারী ভোট বেশি পাবেন।
আগামী ১২জুন হতে যাচ্ছে এ মহানগরের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র আছে ১২৬টি। সাধারণ ওয়ার্ড মোট ৩০টি আর সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১০টি। ভোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫জন। গতকাল শনিবার শেষ দিন সকল প্রার্থীর ব্যাপক প্রচারণায় মুখর ছিল বরিশাল শহর। প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। বরিশালের বিভিন্ন এলাকা তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করেও ছুটে গিয়েছেন।
স্থানীয় ভোটাররা জানিয়েছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনে এবার ফল নির্ধারক হতে পারে নারী ভোটাররা। কারণ এবার বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার পুরুষের তুলনায় বেশি। নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন। এ জন্য গত কয়েকদিনে নির্বাচনী প্রচারণায় নারী ভোট টানতে আলোচনায় থাকা মেয়র প্রার্থীরা বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।
এবার বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ৭জন প্রতিদ্বন্দিতা করলেও আলোচনায় আছেন ৪জন। এর মধ্যে নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্øাহ বাদে আলোচনায় থাকা অন্য তিন প্রার্থী হলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি ফয়জুল করিম, জাতীয় পার্টির (জাপা) ইকবাল হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাত্রদলের সাবেক নেতা কামরুল আহসান।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় সূত্র ও কেন্দ্রীয় কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, বরিশালে দলীয় প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরিনিয়াবাতের) জললাভের আশা আওয়ামী লীগে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর দিনের চেয়ে কয়েকগুন বেড়েছে। তবুও আওয়ামী লীগের ঐক্যে জোর দিচ্ছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, গত ৫ জুন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালক কমিটি প্রচারণা শুরু করার পর নৌকার ঐক্যে ওপর জোর দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে নৌকা তার মাঠ ফিরে পেতে শুরু করে। আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, বরিশালে সিটি নির্বাচেন জন্য গত কয়েকদিন ভোটের মাঠে থেকে নিঘুম রাত কাটিয়েছেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে দলের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আফজাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলের কর্মীরা বলছেন, নৌকার প্রার্থীর জয়লাভে দলের ঐক্য বদ্ধ থাকা জরুরি। বরিশালের বর্তমান মেয়র ও এবারের নৌকার প্রার্থীর ভাতিজা সেরিনিয়াবাত সাদেক আব্দুল্লাহর কিছু কর্মী সমর্থন শেষ পর্যন্ত ভোটে মাঠে নৌকার প্রার্থীরা বিরোধীতা করে যেতে পারেন বলেই তারা মনে করছেন। তারপরও জয়ে আশাবাদী দলটির কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতারাও। কারণ ইতিমধ্যে সাদেকপন্থী একজন কাউন্সিরসহ কয়েকজনকে বিভিন্ন কৌশলে কোণঠানা করা হয়েছে। এর পরও দলে একট্টা ভোট ব্যাংকের উপরই জোর দিচ্ছেন তারা।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, অনেকে মহানগরের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদেক আবদুল্লাহর প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে নৌকার ভোট দেবেন। তিনি যাতে এলাকায় না আসতে পারেন। কারণ খোকন সেরিনিয়াত হারলে সাদেক সাহেবের এলাকায় ঢুুকতে সুবিধা হবে। কারণ তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা। কিন্তু তিনি মেয়র থাকা অবস্থায় কোন কাজ এলাকায় করেন নি। এ জন্য হলেও অনেকে নৌকায় ভোট দেবেন। আর নৌকার প্রার্থীর ইতিমধ্যে একটি ইমেজ দাঁড়িয়ে গেছে।
স্থানীয় ভোটাররা মনে করেন,এ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত বরিশালের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব খান কামালের ছেলে ও সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসানের জয়লাভের আশা প্রচারণা শুরুর চেয়ে কমে গেছে। তারা বলছেন, তার জয় আশা করা যেত যদি বিএনপির তিনি ভোটারদের পূর্ণ সমর্থন আদায় করতে পারতেন। তবে বিএনপির একটি অংশ এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টিল লাঙ্গলের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসের পক্ষে কাজ করছেন। ফলে তার জয়লাভের সম্ভাবনা কম। স্থানীয় ভোটরা জানিয়েছেন, প্রচার শুরুর দিন যত গড়িয়েছে ততই কামরুল আহসানের পক্ষ ছেড়ে বিএনপির একটি বড় অংশ জাতীয় পার্টি প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বন করেছে।
স্থানীয় ভোটাররা জানিয়েছেন, এবার নির্বাচনী প্রচারণায় শেষ পর্যন্ত এগিয়ে ছিলো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ও দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম। তার কর্মী ও সমর্থকরা ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালিয়েছেন। তার পক্ষে প্রচারণা নেমেছেন কয়েক হাজার নেতা-কর্মী। নির্বাচনী প্রচারের প্রথম দিন থেকেই নারী ভোটাররা বাড়ি বাড়ি গিয়েছে বলে স্থানীয় ভোটাররা জানাচ্ছেন।
দলটির সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে দলটি কোন কাউন্সিলর প্রার্থী দেয় নি। ফলে বরিশালে পুরো দল এখন দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে মরিয়া। নগরীর মোড়ে মোড়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন হাতপাখা মার্কার সমর্থকরা।
দলটির কর্মীরা আরো বলছেন, হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী দলটির দ্বিতীয় সেের্ব্বাচ্চ ব্যক্তি হওয়ায় দলটির ইমেজের ক্ষেত্রে এটি প্রভাব ফেলতে পারে। এ চিন্তা থেকে এবার দলটি মাঠে মরিয়া হয়ে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় রয়েছেন। তবে স্থানীয়ভাবে এ অতীতে এ দলটির ভোট সংখ্যা জয়লাভ করার মত নয় বলেই মনে করেন স্থানীয় ভোটাররা। স্থানীয় ভোটাররা জানিয়েছেন, মহিলা ভোটা টানতে মরিয়া হাতপাখা মার্কার প্রার্থী। কারণ তারা মনে করছেন, নারী ভোটার ও বিএনপির প্রার্থীদের ভোট পেলে শতভাগ নিশ্চিত জয় তাদের ঘরেই আসবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আনচেলত্তির মাইলফলক ম্যাচ জয়ে রাঙাল রিয়াল
৩০ পেরোনোর আগেই ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন জিদানপুত্র
ব্রুকের সেঞ্চুরিতে অজিদের জয়রথ থামিয়ে টিকে থাকল ইংল্যান্ড
বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন বাইডেনের
পাবর্ত্য চট্টগ্রামে দুর্গম পাহাড়ি সেনা ক্যাম্প পরিদর্শন সেনা প্রধানের
নিউইয়র্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
আম্মু তোমাকেও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে
দেশের মাজার রক্ষা করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য চীন খুবই গুরুত্বপূর্ণ: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
ক্ষোভ বাড়ছে ভারতে
ভারতীয় সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেলেন ড. ইউনূস
সোনারগাঁওয়ে তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা, আহত ৮
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য চায় পবিপ্রবির গ্রাজুয়েটবৃন্দ
হামজাকে পাওয়ার আরও কাছে বাংলাদেশ
বান্দরবানে জামাতুল আনসারের ৩১ সদস্য কে ৪ মামলায় জামিন
সাগরে লঘুচাপ, চার সমুদ্রবন্দরে বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত
সকল অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে -চকরিয়ায় নারী সমাবেশে বক্তারা
সেনা কর্মকর্তা হত্যাকারীদের অবিলম্বে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি পঞ্চগড়ে
আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার