ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

সরকারের পতন ঠেকাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা দেয়ার পায়তারা চলছে : রিজভী

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৮ জুলাই ২০২৩, ১১:৩৮ পিএম | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৩, ১২:০৫ এএম

সরকারের পতন ঠেকাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা দেয়ার পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, অবৈধ সরকার দেশকে ভয়ানক গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চায়। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাজা দেয়ার মতো ঘৃণ্য চক্রান্ত জনগণ রুখে দেবে। এবার কোন অপচেষ্টায় সরকারের পতনকে ঠেকানো যাবে না। এবার সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবেই। গতকাল শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মূখপাত্র বলেন, আওয়ামীলীগ এমন একটা রাজনৈতিক দল যারা মানবিক পরিবেশের মূল থেকে উৎসারিত হয়নি। এজন্য বহু মত ও পথকে তারা সহ্য করতে পারে না। ক্ষমতায় এসেই চিরদিন ক্ষমতায় থাকার উদগ্র লালসা তাদেরকে হিংস্র ও রক্তপিপাসু করে তোলে। তাই কুয়াশার আস্তরণ ভেদ করে তাদের দৃষ্টি অগ্রগামী সভ্যতার দিকে দিগন্তবিসর্পী পথে প্রসারিত না হয়ে এক নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদের অনুগামী হয়। ক্ষমতায় এসেই বার বার এই দৃষ্টান্ত তারা রেখেছে। ওরা বদ্ধ পানিতে লগি ঠেলে নৌকা বাইতে অভ্যস্ত। এরা সুস্থ সমাজ ও মুক্ত চিন্তার খরস্রোতে প্রবাহমান হওয়া বিশ্বাস করে না। তাই ক্ষমতাক্ষুধার অস্থিরতায় ভিন্ন মত ও দলের অস্তিত্ব ধুলিসাৎ করার পরিকল্পনায় ব্যস্ত থাকে।
তিন আরো বলেন, অবৈধ আওয়ামী সরকার এক সর্বনাশা বিভীষিকা সঞ্চার করার জন্য নতুন অশুভ পরিকল্পনায় মেতে উঠেছে। বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোকে দুর্বল করার জন্যই সরকারের ভিতরে চলছে নানামুখী অপতৎপরতা। স্বেচ্ছাতন্ত্র, উগ্রঅহমসর্বস্বতা, একক কর্তৃত্ব ইত্যাদি দ্বারা গণতন্ত্রের নীতি, আদর্শ ও মূল্যবোধ বিরোধী এমন একটি বিকৃত রাষ্ট্র চরিত্র নির্মান করতে যেয়ে রাষ্ট্রের উপর জনগণের মালিকানা অপহরণ করা হয়েছে। এবারও জনগণকে বঞ্চিত করে একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচন করার জন্য সরকার মনুষ্যত্বহীন ফন্দি এঁটে চলেছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছি, সরকার ২০১৩/২০১৪ সালে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা মিথ্যা ও গায়েবী মামলায় সাজা দিতে জেলা ও মহানগরগুলোর বিচারকদের নির্দেশ প্রদান করেছে। আমরা আরো জানতে পেরেছি যে, সাজা দেয়ার কাজটি সম্পন্ন করা হবে আগামী দুই মাসের মধ্যেই। এ বিষয়ে বিচারকদেরকে সরকারি সিদ্ধান্ত পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেলার পুলিশ সুপারদের। বিরোধী দল নির্মুলে সরকার হাতের মুঠোয় ধ্বংসের শক্তি নিয়ে মাঠে নামছে। জনগণকে পরাজিত করার জন্য পর্দার আড়ালে চলছে নানা শলাপরামর্শ ও গোপন বৈঠক। রিজভী বলেন,ইতোমধ্যে সরকারি অশুভ নীলনকশার কিছু আলামত ফুটে উঠেছে। দলের সিনিয়র নেতারাসহ সকল স্তরের নেতাকর্মীদের বিচারের নামে আদালতে সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে। এই সাক্ষীদের পুলিশেল শেখানো বুলি বলার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। সাক্ষীরা পুলিশের হুমকির ভয়ে সাক্ষী দিতে আসে। কিন্তু এরা এমনই গরিব মানুষ যে, বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নামও শোনেননি ও চেহারা পর্যন্ত দেখেনি। এমনকি অনেক পুলিশ সদস্যদেরকেও চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার ভয় দেখিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে সাক্ষী দিতে নিয়ে আসা হয়। এদের অনেকেই আমাদেরকে বলেছেন ‘আমরা যদি সাক্ষী না দেই তাহলে চাকরি থাকবে না’।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যিনি নিপীড়ণ ও জুলুমের পন্থা অবলম্বন করেছেন তিনি হলেন সরকারের আস্থাভাজন ডিসি প্রসিকিউশন আনিছুর রহমান। তিনি উদ্বুদ্ধ আওয়ামী দলীয় ক্যাডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। কারান্তরীণ সাইফুল ইসলাম নিরব, রফিকুল আলম মজনু, মোনায়েম মুন্না, এস এম জাহাঙ্গীর, ইউসুফ বিন জলিল, গোলাম মাওলা শাহিন ও আজিজুর রহমান মুসাব্বিরসহ অসংখ্য নেতৃবৃন্দ আজ ডিসি প্রসিকিউশনের অন্যায়, অন্যায্য হস্তক্ষেপের কারণে কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। উল্লিখিত নেতৃবৃন্দকে ব্যাকডেট দিয়ে পেন্ডিং মামলায় নাম দিয়ে আটকে রাখার মূল নায়কই হচ্ছেন ডিসি প্রসিকিউশন। এমনও শোনা যায়, বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম শুনলেই ডিসি প্রসিকিউশন নাকি তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন। সরকারের প্রতি দপ্তরেই আওয়ামী গেস্টাপো বাহিনী মনুষ্যত্বহীন এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। বিরোধী দল বিদ্বেষী ডিসি আনিছুর রহমান বিএনপিকে নির্মুল করার মহান ব্রত নিয়ে কাজ করছেন। এই সমস্ত কর্মকর্তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে আগ্রহী নয়। তারা দেশে-দেশে ফ্যাসিবাদের পতনের পরিণাম থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেননি। এরা দুস্কর্ম করেও পার পাচ্ছে বলেই নিজেদের অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন। তাদের আমি নুরেমবার্গ ট্রায়ালের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। জনগণ সবকিছু খেয়াল করছে। জনগণ এখন সব দিক থেকে প্রস্তুত। শেখ হাসিনার একক জবরদস্তি শাসনের আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বিদায়ের বাঁশি বেজে উঠবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা