নির্বাচন, আসন বণ্টন, আন্তর্জাতিক ও বিএনপির আন্দোলনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা
১৭ জুলাই ২০২৩, ১১:৪০ পিএম | আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৩, ১০:৪১ এএম
জাতীয় নির্বাচনের আগে ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন জোট নেত্রী, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ ১৬ মাস পর জোটের শরিকদের সঙ্গে জোট নেত্রীর এ বৈঠকটি জোটের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে শরিক দলের নেতারা বলছেন, যেহেতু বৈঠকে কোন আলোচ্যসূচি নেই, তাই সমসাময়িক রাজনীতি নির্বাচন, নির্বাচনে জোট শরিকদের আসন বন্টন, বিএনপির আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইস্যু নিয়েই আলোচনা হবে। আলোচনায় স্থান পেতে পারে আন্তর্জাতিক ইস্যুও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সরকারের যা আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে শরিকদের মতামত জানতে চাইবেন জোটের শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনা।
জাতীয় নির্বাচনের ৬ মাস আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে জোটের শরিকদের এই বৈঠকটি এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলো সরকারের পতনের এক দফা আন্দোলন শুরু করেছে। এর বাইরে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর দেশের ভেতরে ও বিদেশে চাপ রয়েছে। এর আগে গত বছরের ১৫ই মার্চ শেখ হাসিনার সঙ্গে জোট শরিকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে ওই বৈঠকে জোটের প্রতিটি শরিক দলের দুজন করে শীর্ষ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দলগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়করা বৈঠকে অংশ নেবেন। তবে শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক কয়েকজন নেতা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ উপদেষ্টা পরিষদ ও সভাপতিম-লীর কয়েকজন নেতা ইতিমধ্যে বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
জোট নেতারা বলছেন, অবশ্যই আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা হবে। আগামী নির্বাচনটি কিভাবে আওয়ামী লীগ করবে এটা নিয়ে সবার মতামত নেবেন জোটের শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনা। এর বাইরে সরকারের ওপর যে বিদেশী কূটণৈতিক চাপ তা কিভাবে আগামীতে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে তা নিয়ে কথা বলবেন শরিকরা। এ ছাড়া সমকালীন রাজনীতি নিয়ে জোট নেতাদের মতামত জানতে চাইবে প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ। এর বাইরে জোট নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আলোচনা হতে পারে। ১৪ দলের শরিক দলের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন বন্টন নিয়ে আলোচনা হবে। ১৪ দলের শরিক নেতারা সংসদীয় আসনে কোন দল কত আসন চায় তা নিয়ে দর কষাকষি হতে পারে।
বৈঠকে কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে জানতে চাইলে গণতন্ত্রি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহদাৎ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচনের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সেখানে জোটের শরিকরা যার যার দলীয় অবস্থান থেকে নিজেদের অবস্থার বর্ণনা করবেন। জোটের নেত্রী হিসেবে তিনিও আমাদের দিক নির্দেশনা দেবেন।
এ বিষয়ে জোটের এক নেতা ইনকিলাবকে বলেন, জোটের অনেক শরিকরা অতীতে অনেক বিষয় নিয়ে অখুশি হয়েছে এটা সত্য। তবে যা হবার তা হয়ে গেছে। কারণ আদর্শিক জোট হিসেবে আমরা ১৪ বছর পর করে দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা মনে করি দেশে মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা তা বাস্তবায়ন হয় নি। দেশে এখনও বেকারত্ব আছে। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন করবো। আমরা আমাদের চাওয়া আমাদের ৫ থেকে ৭টি আসন দিতে হবে আগামী নির্বাচনে। আমরা সেখানে যোগ্যদেরই প্রার্থী করবো।
জোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সাংবাদিকদের বলেন, জোটের শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁদের বৈঠকে আগামী নির্বাচন, বিরোধী দলের আন্দোলনসহ সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডরী ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের জোটের নেত্রী। বৈঠকে অবশ্যই বর্তমান প্রেক্ষাপট, নির্বাচন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এই বৈঠকটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে অবশ্যই আমাদের পরামর্শও থাকবে।
জোটের শরিক এক নেতা বলেন, সামনেই নির্বাচন। নির্বাচনে আসন বন্টন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। যেহেতু বৈঠকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও থাকবেন তাই আলোচনা উঠলে সুবিধাই হবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় উঠলে হয়তো জোট নেত্রী বিষয়টি সুরাহা করে ফেলবে বলতে পারেন। তিনি আরো বলেন, অনেকেই বৈঠকে আসন বন্টন আলোচনা উঠাতে পারেন।
জোট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরেই আওয়ামী লীগের উপর চাঁপা ক্ষোভ রয়েছে শরিকদের। বিভিন্ন সময়ে সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে এসেছেন জোট নেতারা। যদিও সেগুলো খুব একটা প্রকাশ্যে আসে নি। সর্বশেষ গত ৪ জুন ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকেও সরকারের কয়েকটি ‘সিদ্ধান্ত’ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা। একই সঙ্গে কয়েকজন মন্ত্রীর বক্তব্যে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জোটের কয়েকটি শরিক দলের নেতারা। বৈঠকে ১৪ দলীয় জোট নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্রুত বৈঠকের তাগিদ দিয়েছিলেন জোটের কয়েকজন নেতা। এর আগেও চলতি বছরের শুরুতে জাতীয় সংসদের ছয়টি আসনের উপনির্বাচন নিয়ে ১৪ দলীয় জোটে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। তার আগে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করায় ওই আসনগুলো শূণ্য হয়েছিল। সে নির্বাচনে জোটকে আসন ছেড়ে দিলেও নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সক্রিয়তা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল জোটের শরিক জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি। সে সময় ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টি ও বগুড়া-৪ আসনে জাসদ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েচির। কিন্তু সেই প্রার্থীদের পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সক্রিয় ছিল না এমন এমন অভিযোগ করা হয় শরিকদের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া জোটের রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে শরিকদলগুলো থেকে ক্ষোভের কথা জানানো হয়েছিল।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সুনামগঞ্জে নিখোঁজের ৩৩ ঘণ্টা পর গাছের নিচে মিললো যুবকের মরদেহ
নগরকান্দায় সড়কে প্রাণ গেল দুই কলেজ শিক্ষার্থীর
মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৩ রোহিঙ্গাসহ ১০ জন আটক
বগুড়ার দুই সাংবাদিক গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার পর এবার মজুরি ২৫,০০০ টাকা দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
এমডি শূন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো হ য ব র ল
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গোলাগুলি, নিহত ৪
হাসিনা সরকারের ৬ মাসে মেট্রেরেলে ১৮ কোটি, বর্তমানে ১৮ দিনে সাড়ে ২০ কোটি টাকা আয়
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হলেন কুমারা দিসানায়েকে, শপথ আগামীকাল
রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, পরিস্থিতি স্বাভাবিক
রিমান্ড শেষে দীপু, ইনু, মেনন, পলকসহ ৭ জন কারাগারে
ইলিশ যাচ্ছে ভারতের ‘বিশেষ অনুরোধে’: উপদেষ্টা
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ দুই বন্ধুর
ইরানের কয়লা খনিতে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণ, নিহত ৩০, আহত ১৭
'নিরাপদ চাঁদপুর' চাই দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
৩ মাসেরও বেশি সময় পর ঢাবিতে ক্লাস শুরু
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ
৩৫ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক, চলছে সমালোচনা
ইবিতে ভিসির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত, মহাসড়ক অবরোধ
অভিনেত্রী বাঁধনকে নিয়ে যা বললেন পিনাকী ভট্টাচার্য