বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি নয়
২৭ জুলাই ২০২৩, ১১:৩৬ পিএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩, ১২:০১ এএম
নানা নাটকীয়তার পর আওয়ামী লীগের ৩ সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের যৌথভাবে শান্তি সমাবেশ আজ শুক্রবার বায়তুল মোকারামের দক্ষিণ গেটেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের অনুমতিও মিলেছে তাদের। ওই কর্মসূচি নিয়ে গতকাল বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে ওই আওয়ামী লীগে ওই ৩ সংগঠনের নেতারা। সেখানে তারা দাবি করেছেন, বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই তারা এ সমাবেশ ডেকেছেন। তবে কোন ক্রমেই একে বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি বলতে নারাজ তারা। আমরা বিএনপির দেখাদেখি সমাবেশ করছি না। তবে মাঠে আছি, থাকবো।
গতকাল বুধবার বিএনপিকে দলটির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশ না করে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করার পরামর্শ দেয় পুলিশ। পরে বিএনপি সমাবেশ পিছিয়ে শুক্রবার নয়াপল্টনে করার আগামীর সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর আওয়ামী লীগের ওই ৩ সহযোগী সংগঠনও তাদের সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করেন।
আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠনের এই যৌথ শান্তি সমাবেশ নিয়ে ব্যাপক নাটকীয়তা হয়। দুই দিন ধরে চলে সেই নাটকীয়তা। সবশেষ বৃহস্পতিবার জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটেই সমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। গতকালই স্থান পরিবদর্শনে যাবেন আওয়ামী লীগের ওই ৩ ছাত্র সংগগঠনের নেতারা। তবে এর আগে রাজধানীয় পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছিল ওই সংগঠনগুলো। গত বুধবার রাতে তা গণমাধ্যমে জানিয়েও দিয়েছিল তারা। তবে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু ইনকিলাবকে বলেন, রাজধানীয় পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠটি সমাবেশের জন্য প্রস্তুত করতে আরো দুই তিন দিন সময় লাগবে। তাছাড়া রাষ্ট্রপতির বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠান থাকায় ওই মাঠে আমাদের সমাবেশ করতে অনুমতি দেয়া হয়নি। পরে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করার জন্য পুনরায় অনুমতি চেয়ে তা পেয়েও যায় তারা। আওয়ামী লীগের এই ৩ সংগঠনের সমাবেশের নাটকীয়তা শুরু হয় গত বুধবার যখন বায়তুল মোকারামের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের অনুমতি চেয়েও পায় না তারা। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম খেলার মাঠে অনুমতি চেয়েছিল আওয়ামী লীগের ওই ৩ সংগঠন। কিন্তু সেখানে অনুমতি দিতে দেয় নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর বাইরে গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চেও সমাবেশের আবেদন করা হয় ওই সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে। সেখানেও অনুমতি না পাওয়ায় রাজধানীর আগাঁরগাঁওয়ের পুরাতন বানিজ্য মেলার মাঠের জন্য ওই সংগঠনগুলো আবারও আবেদন করে। তবে গত বুধবার রাতে তারা সেখানে সমাবেশ করবে কীনা সে বিষয়টি দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিল সংগঠনগুলো নেতারা। পরে ওই মাঠটিই চূড়ান্ত বলে বুধবার রাতে ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশ নিয়ে গতকাল বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে ওই আওয়ামী লীগে ওই ৩ সংগঠন। এ সময় সমাবেশের এমন নাটকীয় পরিবর্তনের বিষয়টির পক্ষে কিছু কারণ তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তা তুলে ধরেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল। এ সময় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আপনারা কি বিএনপির দেখাদেখি সমাবেশ করেছেন? এ সময় এমন এক প্রশ্নের জবাবে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদককে বলেন, বিএনপি একটি দেশ ধ্বংসকারী, ষড়যন্ত্রকারী দল। বিএনপির দেখাদেখি আমাদের কর্মসূচি করতে হবে এটা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। বিএনপির অন্যায়, অত্যাচার, গুম থেকে জনগণকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। কত সংখ্যাক নেতা-কর্মীর সমাগম হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সারা দেশ থেকে শুধু আওয়ামী লীগ কিংবা তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী নয়। সারা বাংলাদেশ থেকে সাধারণ তরুন-তরুনীরা এসে উপস্থিত হবে। আপনারা দেখবেন। তিনি আরো বলেন, আপনারা দেখবেন, আপনারা হিসাব মিলাতে পারবেন না। লোকে লোকারন্য হবে। সহিংতার কোন আশঙ্ক করছেন কীনা জানতে চাইলে নিখিল বলেন, আমরা বিএনপির কোন পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকছি না। তবে মাঠে থাকছি বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য। কর্মসূচি পালনকে গণতান্ত্রিক অধিকার বলেও উল্লেখ করেন তিনি। নিখিল বলেন, বিএনপির চক্রান্ত করার জন্যই মাঠে নেমেছে। তাদের প্রতিরোধ করার জন্যই আমরা মাঠে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।
সমাবেশের আয়োজক আওয়ামী লীগের ৩ সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, ওই সমাবেশ ঘিরে লোকে লোকারণ্য হবে ঢাকা শহর। অনুমানও করাও যাবে না কত লোক হবে। তবে এর আগে ৩ লাখের মত তরুণদের একত্রিত করার দাবি করেছিলেন ওই ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতারা। যার অধিকাংশ তারা ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসবে। এর বাইরে সারা দেশের অন্য জেলাগুলো থেকেই নেতা-কর্মীদের সমাগম ঘটাতে চায় আওয়ামী লীগের ওই সহযোগীরা। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ওই সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক লোক সমাগম করতে চায় আওয়ামী লীগ। এর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সমাপ্ত। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে মূলত ঢাকা দখলে রাখতে চায় দলটি। কারণ একই দিনে বিএনপিরও মহাসমাবেশ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কুষ্টিয়া চিনিকলসহ দেশের ৬ চিনিকল চালু হওয়ায় ভারতের দম্ভ খতম!
নোবিপ্রবির সঙ্গে নেদারল্যান্ডের ইউট্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর
৯ দফা দাবীতে নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালরে সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
এলজিইডির এক প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
আবাসিক হোটেলের নামে মাদকের আড্ডা
নোয়াখালীতে মসজিদের ইমাম ও খতিবকে বিদায়ী সংবর্ধনা
খুলনাকে বিদায় করে ফাইনালে মেট্রো
কালিয়াকৈরে চাঁদাবাজের হামলায় চাঁদাবাজ কালামের মৃত্যু
বিরল উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ১
কামালপুর সড়কের ব্রিজ ভেঙ্গে মরণফাঁদ চরম দুর্ভোগে পথচারীরা
মেয়েদের ক্রিকেটে যুক্ত হলো যেসব সুযোগ-সুবিধা
বাড়ছে শীতের প্রকোপ, সাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
জকিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার
খালিশপুরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন
যুব এশিয়া কাপজয়ীরা পাচ্ছেন আর্থিক পুরস্কার
আদমদিঘীতে বিএনপি কার্যালয় উদ্বোধন
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
গোপালগঞ্জে বিএনপির বহিস্কৃত ও আ. লীগ কর্মীদের নিয়ে বিএনপির ২ জেলা কার্যালয়
কালীগঞ্জে ভাইরাল চিতাবাঘ হত্যার ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার বন বিভাগ ও প্রশাসনে তোলপাড়