ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারিক সন্ত্রাস শুরু হয়েছে

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৬ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৬ পিএম | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম

দ্রুত বিচার করে বিএনপি সহ-বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাঁজা দেয়া সরকারের গভীর মাস্টারপ্লানের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আমরা কোন কালো বিচার মেনে নিবো না, আমরা ডার্ক জাস্টিস মেনে নিবো না। বিচারিক সন্ত্রাস শুরু হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। দ্রুত বিচার করে সাঁজা দেয়া এটা একটি সরকারের গভীর মাস্টার প্লানের অংশ। গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণ সেই মালিকানা কেড়ে নিয়েছেন এই অবৈধ আওয়ামী সরকার। এই আওয়ামী লীগ এখন রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলছেন যারা বাক-স্বাধীনতার পক্ষে উচ্চকণ্ঠে কথা বলছেন তাদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন নির্যাতন চালাচ্ছেন। আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করে আদালতকে প্রভাবিত করে বিচারিক সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বিরোধীদলকে স্তব্ধ করার জন্য এদের সমস্ত কার্যক্রমকে স্তব্ধ করার জন্য নিষ্ক্রিয় করার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনী ইতোপূর্বে ক্রসফায়ার, গুম বেআইনীভাবে মামলা এত নিপীড়ন নির্যাতনের পরে এখন শুরু হয়েছে সাঁজা দিয়ে তাদেরকে বছরের পর বছর অথবা চিরদিনের জন্য আটকে রাখার একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনের যে নমুনা সেই ধারা শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, এদেশের মানুষ হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষ। এদেশের মানুষ তাদের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। আমাদের সেই ঐতিহ্য আছে। আমরা কোন ডার্ক জাস্টিস, কোন অন্ধকার বিচার মেনে নিবো না। এটা দলের পক্ষ থেকে আমি আপনাদেরকে সুস্পষ্ট বলে দিলাম। কারন এদেশের জনগণ কখনই অনায্য, অন্যায় কেউ মেনে নেয়নি। তারা ন্যায় বিচার ও সুশাসনের জন্য সুদীর্ঘ সময় ধরে তারা লড়াই করে আসছে।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের যে বহুবিধ মাত্রা আপনারা দেখেছেন সেই নির্যাতনের মাত্রা একের পর এক প্রয়োগ করা হচ্ছে বিএনপিসহ বিরোধী দলের উপর। হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থাকলে কত কিছু করা যায় পাহাড়ের উপর দিয়ে নৌকা চালানো যায়, সেটা এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদে পদে প্রমাণিত করছেন। ২০১৪’র নির্বাচনের প্রাক্কালে ব্যাপকহারে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার মিথ্যা মামলা দিয়ে একতরফা নির্বাচন করেছেন ২০১৮ সালে দিনের বেলায় ভোট করার সাহস পাননি রাত্রে ভোট করেছেন। তখন আমরা একটি নতুন কবিতা শুনতে পেয়েছিলাম সেটি হল গায়েবী মামলা। সেই গায়েবি মামলার প্রকৃতি এবং সংজ্ঞা কি হবে এটা মনে হয় আইনজীবীরা বলতে পারবেন। এর পরিণামে আমরা দেখেছি লাশের নামে মামলা প্যারালাইজড রোগীর নামে মামলা পবিত্র হজ করতে গেছেন সেই ব্যক্তির নামে মামলা। তখন আমরা এই সমস্ত বৈশিষ্ট্য দেখতে পেয়েছি।

তিনি আরো বলেন, এইবারে নির্বাচনের প্রাক্কালে আমরা দেখতে পাচ্ছি শেখ হাসিনার আরেকটি অভিনব রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ ওই যে ২০১৩-১৪ সালের মামলায় এখন তারা সাক্ষী খুঁজে নিয়ে এসে সাক্ষী কে শিখিয়ে পরিয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দের নামে তাদেরকে দিয়ে বলিয়ে সাজা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে ইতোমধ্যে অনেকেই দেয়া হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজা দেওয়ার পরে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে যিনি ঐক্যবদ্ধ করেছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিনীকেও মিথ্যা সাজা দেওয়া হয়েছে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন।
তিনি বলেন, আমাদের দলের দুইজন তরুণ নেতা আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল এবং হাবিবুর রশিদ হাবিব ওদের নামে সেই ২০১৩ সালের মিথ্যা মামলায় সাফাই সাক্ষী নেয়া হয়েছিল। এই দুই ছাত্রনেতার সাফাই সাক্ষী ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহন করেন। তখন তারা রিভিশন করেছেন দায়রা জজের কাছে জজ সাহেব সেটিকে আমলে নিয়ে গতকাল প্রকাশ্যে আদালতে ঘোষণা করেছেন সেই রিভিশনটা মঞ্জুর করেছেন। রাত্রে বেলায় বিশেষভাবে মঞ্জুর করার যে আদেশ ক্যানসেল করে দিয়েছে। তারমানে জজ সাহেবের উপর গায়েবী নির্দেশ আছে। এটা একটি নজিরবিহীন ঘটনা।

রিজভী বলেন, এই সরকার নিশি রাতের ভোট করতে যেমন পছন্দ করে এখন নিশিরাতের রায় দিতে তারা পছন্দ করছেন। দেশের ন্যায় বিচারের উপর দিয়ে কি পরিমান আঘাত ন্যায়বিচারকে যে কিভাবে পদদলিত করা হচ্ছে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু সহ-আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা