এখনও পরিচয় মেলেনি খুন হওয়া গৃহকর্মীর লাপাত্তা গৃহকর্ত্রী
২৭ আগস্ট ২০২৩, ১০:৫২ পিএম | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের বাসায় প্রায়ই শিশু গৃহকর্মীকে (১০) নির্যাতন করা হতো। গত শুক্রবার ২৫ আগস্ট সকালেও হয়ত ওই শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন করা হয়েছিল। শিশুটি মারা যাওয়ার পর রান্নার সব কিছু আর মোবাইল ফেলে লাপাত্তা হয়ে যান গৃহকর্ত্রী সাথী। গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ গৃহকর্ত্রীকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, মৃত্যুর ২দিন অতিবাহিত হলেও নিহত গৃহকর্মীর নাম, পরিচয়, ঠিকানা, বাবা-মার পরিচয় রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি কলাবাগান থানা পুলিশ। শুধু তাই নয়, লাপাত্তা হওয়া অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রীরও খোঁজ মেলেনি। নিহতের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় এখন পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নিহতের পরিচয় শনাক্তে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।
কলাবাগান থানা পুলিশের দাবি, শুক্রবার রাতে অজ্ঞাত ফোনে গৃহকর্মী মৃত্যুর প্রাথমিক তথ্য পায় কলাবাগান পুলিশ। এরপর রাত দেড়টার দিকে কলাবাগান থানাধীন সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নং ভবনে গিয়ে বেশ কয়েকটি বাসায় খোঁজও নেয় পুলিশ। ওই ভবনটিতে ৪৪টি ফ্ল্যাট। মধ্যরাতে সব ফ্ল্যাটে খোঁজ নেয়া সম্ভব না হওয়ায় ফিরে আসে পুলিশ। পরদিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির মালিক ও সোসাইটির লোকজন নিয়ে ভবনটির দ্বিতীয় তলার ই-১ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতর থেকে অজ্ঞাতনামা শিশু গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পর শনিবার ২৬ আগস্ট সকালে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহালে পুলিশ দেখতে পায়, শরীরে অনেক নতুন ও পুরাতন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখে ফেনা, শরীর ফোলা। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গতকাল কলাবাগান থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবনের অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগ ছিল না অভিযুক্ত নারীর। ওই বাসায় যে গৃহকর্মী আছে তা অনেকে জানলেও দেখেছেন খুব কম। গৃহকর্মীর মৃত্যুর পর ওই নারীও লাপাত্তা হয়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা সব ধরনের চেষ্টা করছি। ওই নারীর গ্রামের বাড়ি পাবনা সদরে। আমরা সেখানকার লোকাল থানায়ও নিহতের সুরতহালকালীন তোলা ছবি পাঠিয়েছি। এখনো পরিচয় শনাক্ত হয়নি।
কলাবাগান থানার ওসি (তদন্ত) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির বলেন, নানাভাবেই পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। কিন্তু সেটা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্ত নারীর নিকটাত্মীয় ও পরিচিতদের মাধ্যমে শুনেছি নিহত গৃহকর্মী এতিম। তবে সেটিও নিশ্চিত নয়। পরিচয় না মিললে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
কলাবাগান থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নং ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফ্ল্যাট ই-১ এ বাসিন্দা সাথী আক্তার পারভীন তার শিশু সন্তান আর ওই গৃহকর্মী নিয়ে বসবাস করতেন। গত তিন বছর ধরে নিহত গৃহকর্মী ওই বাসায় কাজ করছিল।
ওসি সাইফুল বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি অভিযুক্ত সাথী আক্তার পারভীন দুই বিয়ে করেছেন। প্রথম স্বামীর নাম মামুন। তিনি পেশায় গাড়ি চালক। তার ঘরে কন্যা সন্তান রয়েছে। তার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একজন চিকিৎসকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তার সঙ্গেও ডিভোর্স হয় ২০২০ সালে। ওই স্বামীর পরিচয়েই তিনি ফ্ল্যাটটিতে ২০১৬ সাল থেকে থাকেন। ডিভোর্সের পর সাথীর স্বামী ঢাকা থেকে চলে যান এবং তিনি এখন যশোরে থাকেন। সাথীর চিকিৎসক স্বামীর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে জানতে পারি, ডিভোর্স হওয়ার পর থেকে তিনি আর এ বাসায় আসেন না। তার সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার পর ওই গৃহকর্মীকে বাসায় এনেছিলেন সাথী।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই নিহত গৃহকর্মীর ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম নেই পুলিশের কাছে। যদিও গত তিন বছর ধরে ওই বাসায় কাজ করছিল গৃহকর্মী। গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনে ওই গৃহকর্মীর মৃত্যুর পর যে কারণে তার পরিচয় শনাক্তে বিপাকে পড়েছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে কলাবাগান থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে ওই অভিযুক্ত নারীর কোনো তথ্য ছিল না। গৃহকর্মীসহ নিজের পরিবারের সদস্যদের তথ্য ফরম পূরণ করে জমা দেননি গৃহকর্ত্রী সাথী। এটা সংগ্রহ করা পুলিশের দায়িত্ব নয়, নাগরিক দায়িত্ব বটে। আজকে ওই গৃহকর্মীর তথ্য ভাড়াটিয়া তথ্য ফরমে থাকলে পরিচয় শনাক্ত সহজ হতো।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পাংশায় মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে
শফিক রেহমান-রহমান মুরুব্বী এক্সপোজড
রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা
মেহেরপুর জেলা বিএনপির নেতাদের বাগোয়ান বাসীর সংবর্ধনা
জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন
কৃষির সাথে যেমন কৃষকের সম্পর্ক তেমনি দেশের জনগনের সাথে বিএনপির সম্পর্ক : শামীম তালুকদার
৪২ চার ও ১৬ ছক্কায় অপরাজিত ৩৪৬!
কুমারখালীতে টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ
দেশের ৬০ ভাগ মানুষ কৃষির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও কৃষকের স্বার্থে কোনো সংগঠন গড়ে ওঠেনি'
নিজের বিয়ে নিয়ে কি বললেন পড়শী
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সীমান্ত হত্যায় ব্যবহৃত চাকুসহ আরো এক আসামী গ্রেফতার
সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়লো
৪২ মিনিটেই নেইমারের আয় ১০১ মিলিয়ন ইউরো
ফেব্রুয়ারিতে পার্স-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে ইরান
মাগুরায় পিলখানা হত্যাকান্ডে হত্যাকারী ও পরকল্পনাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
কসাই থেকে নদীখেকো জাফর
পাঁচ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঁচ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
ফ্যাসিবাদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে সক্রিয় ছিল ইবি ছাত্রদল
সামনের বর্ষায় ঘাসে ঢাকা হবে রাজধানীর অনাবৃত সড়ক বিভাজন: উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
মাদারীপুরে ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন