ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১
হাসপাতালে ২৬৬৩ রোগী

ডেঙ্গুতে আরো ১১ জনের মৃত্যু

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩২ পিএম | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম

এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে দেশে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭৮ জনে। এছাড়াও গত একদিনে ডেঙ্গু নিয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৬৬৩ জন। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে মশাবাহী রোগটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৫ জনে। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার একই সময় পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৬৬৩ জন। এরমধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯০০ জন এবং ঢাকার বাইরের বাসিন্দা ১ হাজার ৭৬৩ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১১ জনের মধ্যে ৬ জন ঢাকার এবং বাকি ৫ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭০ হাজার ৬৬০ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৮৯ হাজার ১৭৫ জন। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন এক লাখ ৪৯ হাজার ১৪৪ জন। যাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৬ হাজার ৫১ জন এবং ঢাকার বাইরের ৮৩ হাজার ৯৩ জন। দেশে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় ২০০০ সালে। এরপর থেকে প্রতিবছর বর্ষাকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে, প্রতিদিন এ রোগ নিয়ে সারা দেশের হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন প্রায় ৩ হাজার রোগী, যাদের দুই-তৃতীয়াংশই রাজধানীর বাইরের বাসিন্দা। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ডেঙ্গু আক্রান্তের সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর হারও। সেটি খুবই চিন্তার বিষয়। ভয়াবহ আকারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ায় গত তিন মাসে স্যালাইনের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। এ সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী উৎপাদনকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে স্যালাইনের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছে। এখন ৭৮ টাকার স্যালাইন কিনতে হচ্ছে ৪০০ টাকায়। তাও কোনো কোনো ফার্মেসিতে স্যালাইনই মিলছে না। এতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন ডেঙ্গু রোগীরা। পড়েছেন দুর্ভোগ আর অনিশ্চয়তায়।
অতিরিক্ত দামে স্যালাইন বিক্রির বিষয়টি ধরা পড়েছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরসহ কয়েকটি সরকারি সংস্থার গোপন তদন্তে। ওই তদন্তকারী দলগুলো ক্রেতার বেশে ফার্মেসিতে গিয়ে স্যালাইনের দর করে দেখতে পেয়েছেন ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৮ টাকা দামের এসব স্যালাইন। বিষয়টি নিয়ে গত এক মাস ধরে নানা অভিযোগ ওঠার পর টনক নড়েছে সরকারি কর্তৃপক্ষের। স্যালাইনের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, পাইকারি, খুচরা বিক্রেতা ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সিদ্ধান্ত হয় স্যালাইন সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানোর।
বৈঠকে অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, সারা দেশে ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় মূল্য বৃদ্ধিসহ স্যালাইনের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা হয়েছে। এমনিতে কোনো সঙ্কট নেই। কোম্পানিগুলো ২৪ ঘণ্টা উৎপাদন করছে। সঙ্কট হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে কিছু ব্যক্তির কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। সারা দেশে অভিযান চালানো হবে। কোনও অনিয়ম পাওয়া গেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। স্যালাইনের গায়ে যে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য দেওয়া আছে, তার চেয়ে এক টাকাও বেশি বিক্রি করা যাবে না। আমি স্পষ্টভাবে এটি সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিতে চাই। এরপরও যদি বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব আমরা।
তিনি বলেন, আমরা স্যালাইন সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বসেছি। আপনাদের কথা শুনলাম, তবে কৃত্রিম সঙ্কটের কথা বলে বাড়তি দাম নেওয়া যাবে না। স্যালাইনের সোর্স আমাদের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোই। স্যালাইন তো আর ভ্যানে বিক্রি হয় না। ডিস্ট্রিবিউশন চেইনের মাধ্যমে ফার্মেসিতে বিক্রি হয়। এটি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত। এটা কিন্তু ডাব বা কাঁচামরিচ না। খুচরা মূল্য যা লেখা আছে তাই বিক্রি করতে হবে। যতক্ষণ মজুত আছে ততক্ষণ সেই দামেই বিক্রি করতে হবে। স্যালাইন কম আছে আর চাহিদা বেশি আছে এই সুযোগে দাম বাড়ানো যাবে না। আইন অনুযায়ী ভোক্তা প্রতারিত হলে বা তার কাছ থেকে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের দায়িত্ব।###


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির

দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো