শেরপুর উত্তরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ড্রাগন ফল
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩৪ পিএম | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম
শেরপুর জেলা (উত্তর)-এ দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিদেশী ড্রাগন ফল। বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। জেলার শ্রীবরদী উপজেলার দহেরপাড় গ্রামে ড্রাগন চাষ করেছেন ৬ বন্ধু মিলে। করোনাকালে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন তারা। এখন তারা লাভের মুখ দেখছেন। ৬ বন্ধু হলেন আজিজুল হাসান, আবু রায়হান, শামসুজ্জামান, শাহাদাত হোসেন, বিল্লাল হোসেন ও জুবায়ের হোসেন। ঝিনাইগাতী উপজেলার কালাকুড়া গ্রামের আল অমিনও ড্রাগন চাষে লাভের মুখ দেখছেন। ড্রাগন ফল মূলত আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল। আশার কথা, সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলায়ও ফলটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দেশে মূলত ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড, ফ্লোরিডা এবং ভিয়েতনাম হতে ফলটির বিভিন্ন জাত আনা হয়। ফলের গাছ ক্যাকটাস জাতীয়। কোনো পাতা নেই। গাছ দেড় থেকে আড়াই মিটার লম্বা হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনসিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত ড্রাগন ফলের নতুন জাত বারি ড্রাগন ফল-১ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়েই জনপ্রিয় ফল। ফলের আকার বড়। পাকলে খোসার রং লাল হয়। শাঁস গাঢ় গোলাপী রঙের। লাল-সাদা ও রসালো ফলের ভেতরের বীজ ছোট ছোট কালো ও নরম। ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। প্রধানত ৩ প্রজাতির লাল বা পিটাইয়া, কোস্টারিকা ও হলুদ রঙের ফল এটি। দেশে উদ্ভাবিত জাত বারি ড্রাগন ফল-১, বাউ ড্রাগন ফল-১ সাদা, বাউ ড্রাগন ফল-২ লাল ও বাউ ড্রাগন ফল-৩। কাটিং হতে চারা রোপণের ১-দেড় বছরেই ফল পাকে। রং লাল হলে সংগ্রহ করতে হয়। ফুল ফোটার ৩০-৪০ দিনেই ফল খাওয়া যায়। বছরে ৫-৭ বার ফল পাওয়া যায়। জুন থেকে অক্টোবর ও ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়।
ঝিনাইগাতী উপজেলার কালাকুড়া গ্রামের ড্রাগন চাষি মো. আল আমিন বলেন, ক’বছর আগে ৫০ শতক জমিতে ৯০ হাজার টাকা খরচে ড্রাগনের আবাদ শুরু করেন। ২ বছর পর থেকেই বছরে ৯০ হাজার থেকে ২ টাকা করে আয় হচ্ছে। যা কিনা অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লাভ। ঝিনাইগাতীর প্রবীন চিকিৎসক শতবর্ষী ডা. আব্দুল বারী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ড্রাগন ফলটি ভিটামিন সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত। ফলে ফিবার, ক্যারোটিন, ফসফরাস, এসকরবিক এসিড, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রন রয়েছে।
শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের খামার বাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচলক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) হুমায়ুন কবির দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, অন্য ফসলের তুলনায় উৎপাদন ব্যয় কম, ফলন বেশি। চড়া দাম পাওয়ায় চাষিরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন।
ফল বিক্রেতা বিল্লাল জানান, দেশি ফলের মতো এ ফলের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেকোন ফলের তুলনায় এ ফল বিক্রিতে লাভ ভাল। ক্রেতা আলহাজ¦. গোলাম মোস্তফা, আলহাজ¦, শরীফ উদ্দিন সরকার, আলহাজ¦, সরোয়ার্দী ( দুদু হাজী) ইনকিলাবকে বলেন, বাচ্চারা লাল টকটকে ড্রাগন ফল পছন্দ করে। বাজারে গেলেই আনতে বলে। দাম বেশি।
ফলের বাণিজ্যিক উৎপাদনে চাহিদার কথা জানতে চাইলে চাষিরা বলেন, মানুষ ড্রাগন ফলের প্রতি বেশ আসক্ত। ফলে এর বাণিজ্যিক চাহিদা ও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ক্রমশই চাষীরা বাণিজ্যিকভাবে চাষে আগ্রহী হচ্ছে। সব বয়সী মানুষের কাছেই এ ফল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ড্রাগন লতানো কাঁটাযুক্ত গাছে, কোনো পাতা নেই। দেখতে অনেকটা সবুজ ক্যাকটাসের মতো। গাছে সাধারণত রাতে স্বপরাগায়ণ হয়ে ফুল ফোটে। মাঝে মাঝে পর-পরাগায়ণ হয়ে থাকে। ফুল লম্বাটে সাদা ও হলুদ। মাছি, মৌমাছি ও পোকা-মাকড় পরাগায়ণ ত্বরান্বিত করে থাকে।’
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির
ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার
রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি
দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়
যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের
রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা
বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে
জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে
৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা
আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি
পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই
তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা
ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের
উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি
২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট
২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের
কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু
১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে
বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো