ঢাকা   মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১
ঢাকা-ভাঙ্গা রেল চলাচল উদ্বোধনের পর সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী মিলিটারি ডিকটেটর জিয়া-এরশাদ-খালেদার শাসনামলে ভোট ছিল ‘১০টা হোন্ডা ২০টা গু-া, নির্বাচন ঠান্ডা’ :: ব্যাংকের এমডি হতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্রের হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল :: দেশের মানুষের জন্য আমি ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টার নির্মাণ করে দিচ্ছি :: আমি আমার সব জমি চাষ করি এখন গণভবন একটা খামার হয়ে গেছে, সেখানে যা পারি উৎপাদন করি

নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হচ্ছে

Daily Inqilab একলাছ হক, আনোয়ার জাহিদ, আবুল হাসান সোহেল, ওবায়দুল আলম সম্রাট, ভাঙ্গা (ফরিদপুর) থেকে

১১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম

আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাইলেন। তিনি বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, অনেক চক্রান্ত চলছে। কিন্তু আমার ভরসা একমাত্র বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের মানুষ পাশে থাকলে অসাধ্য সাধন করা যায় সেটাই আমরা করেছি। আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। আজকে সেখানে রেলসেতু চালু করে দিলাম।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রেল যোগাযোগ উদ্বোধন উপলক্ষে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস করে দেবে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এই ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য একমাত্র নৌকা মার্কাই আপনাদের সব রকম সহায়তা দেবে। আপনাদের কাছে আমার আহ্বান, নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও সেবা করার সুযোগ করে দেবেন।

এর আগে পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন করেন। স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রেল চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেনে পদ্মা সেতু পাড়ি দেন। সঙ্গে ছিলেন বোন শেখ রেহানা ও অন্যান্য স্বজনরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নতুন এই রেলপথের উদ্বোধনের পর কাউন্টার থেকে টিকিট কাটেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি নিজেই হুইসেল (বাঁশি) বাজান এবং সংকেত দেন ট্রেন ছাড়ার। পরে মাওয়া প্রান্ত থেকে ছেড়ে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে ট্রেনটি ভাঙ্গায় পৌঁছায়।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নৌকাই এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন আনে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই লুটেরা বিএনপি। যে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছে। দুর্নীতি করে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। যে পলাতক আসামি, মুচলেকা দিয়ে দেশে ছেড়ে ভেগেছে। অর্থ আত্মসাৎ করেছে। অস্ত্র চোরাকারবারি। এই হলো বিএনপির নেতা। আর জামায়াতে ইসলামী হচ্ছে যুদ্ধাপরাধী। যুদ্ধাপরাধের দায়ে শাস্তি দিয়েছি। এরা দেশকে ধ্বংস করে দেবে। এই ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য একমাত্র নৌকা মার্কাই আপনাদের সব রকম সহায়তা দেবে। নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন, আওয়ামী লীগ সরকার যাতে আপনাদের সেবা করতে পারে। আপনাদের কাছে আমার সেই আবেদন থাকলো। আপনাদের কাছে আমার এই আহ্বান। আজকে পদ্মা সেতুতে রেললাইন আপনাদের উপহার দিয়ে গেলাম। আপনারা ফরিদপুরবাসী নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও সেবা করার সুযোগ করে দেবেন। এই আহ্বান জানাই।

ধ্বংস করাই বিএনপির চরিত্র অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এসে কী করেছে? সকলের ওপর অত্যাচার। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা। কাউকে ছাড়েনি তারা। কিন্তু আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ দেশকে গড়তে চায়। আজকে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য এ দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। বিএনপির আমলে একটা মোবাইল ফোনের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর ফোন করলে প্রতি মিনিট ১০ টাকা, ধরলেও (রিসিভ করা) ১০ টাকা। তাও মাত্র একটা কোম্পানি ঢাকা আর চট্টগ্রামে। বিএনপির এক মন্ত্রীর ব্যবসা। আওয়ামী লীগ আসার পর এটা সর্বজনীন করে গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছি।

ড. ইউনূসকে ইংগিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তি সামান্য ব্যাংকের এমডি পদের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে হেরে গেলো। আর সেই ক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা বন্ধ করে আমাদের ওপর দুর্নীতির দুর্নাম দিতে চেয়েছিল। পদ্মা সেতুর টাকায় দুর্নীতি হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। বলেছিলাম দুর্নীতি করতে আসিনি। মানুষের সেবা করতে এসেছি। শেখ মুজিবের মেয়ে দুর্নীতি করে না। আমি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ নিলে অনেকে বলেছিলেন এটা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের টাকায় এই খরস্রোতা নদীতে সেতু করা সম্ভব নয়। আমি জানি অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষ আমার সাথে নেই। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আছে। বাংলাদেশের মানুষ পাশে থাকলে অসাধ্য সাধন করা যায় সেটাই আমরা করেছি। আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। আজকে সেখানে রেল সেতু চালু করে দিলাম। বঙ্গবন্ধুর সুরে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষকে আর কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।

পদ্মা রেল সেতু চালুর প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এসেছি একটি উপহার নিয়ে। সেটি হচ্ছে রেল। আমি রেলে করে ভাঙ্গায় এসেছি। এটা কেউ কখনও চিন্তাও করতে পারিনি। আমি আপনাদের পদ্মা সেতুর সাথে সাথে রেললাইনও উপহার দিয়ে গেলাম। তিি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্খা ছিল প্রতিটি গ্রাম সুন্দরভাবে সাজাবেন। প্রতিটি মানুষের ঘরে আলো জ্বালাবেন। শিক্ষার আলোয় আলোকিত করবেন। চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবেন। যে কারণে তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। তার সুফল বাংলাদেশের মানুষ পেতেও শুরু করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমার মা-তিন ভাইসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়।

’৭৫ এর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দুই বোনের বিদেশে থাকা প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, দুই বোনকে ৬ বছর রিফিউজি হিসেবে বিদেশে থাকতে হয়েছে। স্বজন হারিয়ে এদেশে ফিরে এসেছিলাম ৬ বছর পর। একটা প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছিলাম এই দেশের মানুষের ভাতের কষ্ট থাকবে না, কেউ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকের দোরগোড়ায় চিকিৎসা পৌঁছবো, উন্নত জীবন দেবো। এই লক্ষ্য নিয়ে আমার দেশে ফেরা। এমন একটি দেশে ফিরলাম যেখানে আমার বিচার চাওয়ার অধিকার নেই। তবে আমি পিছিয়ে যাইনি। বোমা, হামলা, গ্রেনেড, গুলি অনেক কিছুর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু দেশের মানুষের জন্য কাজ করবো এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। আমার বাবা-মা ভাই কেউ নেই। আমার আছে বাংলাদেশের জনগণ। তারাই আমার পরিবার। তারাই আমার সব। তাদের জন্যই আমার কাজ। তিনি বলেন, জনগণের কোনও ভোটের অধিকার ছিল না। অকথ্য অত্যাচার নির্যাতন করেছিল। আমরা ভোট ও ভাতের অধিকারে সংগ্রাম করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি। মিলিটারি ডিকটেটর জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া। এদের শাসনামলে কেউ ভোট দিতে পারতো না। কথা চালু হয়ে গিয়েছিল, ১০টা হোন্ডা ২০টা গু-া, নির্বাচন ঠান্ডা। এখন আর সেই অবস্থা নেই। একটানা ১৪ বছর আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে। স্থিতিশীলতা আছে। যে কারণে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। সমগ্র বাংলাদেশে ওয়াইফাই সংযোগ আছে। আমাদের লক্ষ্য মানুষের কল্যাণ করা। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ মানুষের জন্য কাজ করে। দেশের কল্যাণে কাজ করে। আমরা দেশকে আরও উন্নত করতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমার মুক্তিযোদ্ধারা আছেন। জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন। আজকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমি ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টার নির্মাণ করে দিচ্ছি। যেন আমাদের ধর্মটা সম্পর্কে মানুষ জানে। সব ধর্মের সব মানুষ তার ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করবে। স্বাধীনভাবে তারা ধর্ম পালন করবে। এটাই আমাদের নীতি। ইসলাম ধর্ম সেটা শেখায়। যার যার ধর্ম সে পালন করবে। আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।

দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে সকলের প্রতি সেই আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমার সব জমি এখন চাষ করি। এখন গণভবন একটা খামার হয়ে গেছে। সেখানে যা যা পারি উৎপাদন করি। সবাইকে উৎপাদন বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিজেদের ঠিক করতে হবে। বরং আমরা অনেক দেশকে সাহায্য করতে পারবো। এসময় বিদ্যুৎ, পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। বঙ্গবন্ধুর দেশে একটি মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, এত দিন-রাত পরিশ্রম করে এ দেশের উন্নতি করেছি। হাজার হাজার মাইল রাস্তাঘাট। গ্রামে কাঁচা রাস্তা খুব কমই আছে। যা আছে আগামীতে সেটাও পাকা করে দেবো। রেল সম্প্রসারণ করে দিচ্ছি। নৌপথ ড্রেজিং করে সম্প্রসারণ করছি। বিমান কিনে বিমানপথ চালু করে দিচ্ছি। বাংলাদেশকে সার্বিকভাবে উন্নয়ন করে সারা বিশ্বে আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। নৌকা আপনাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা পদ্মা সেতু, রেল সেতু করে দিয়েছে। রাস্তাঘাটের উন্নতি করেছে। নৌকা আপনাদের কলেজ স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় দিচ্ছে।

পরে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রেললাইন ভাঙ্গা থেকে যশোরে সংযোগ হবে, যশোর থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত সংযোগ হচ্ছে। আরেকটি প্রকল্প আমাদের মাথায় আছে, অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করেছি, সেটা হচ্ছে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে ঝালকাঠি, পটুয়াখালী হয়ে একেবারে পায়রা পর্যন্ত নেয়ার পরিকল্পনা আছে। ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। তবে এটা কঠিন কাজ, আমাদের মাটির সক্ষমতা একটু কম। তবুও আমাদের প্রচেষ্টা আছে। আমাদের লক্ষ্য ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করা। সেভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই এদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। আর যারা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ধুয়া তোলে আর প্রতিদিন আমাদের ক্ষমতা থেকে হটায়, তারা কখনও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না। কারণ তাদের প্রতিষ্ঠা হয়েছে অবৈধভাবে এবং ভোট চুরি করা ছাড়া কোনো দিন ক্ষমতায় আসেনি। এ কারণে ২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ২০ দলীয় ভোট ৩০০ সিটের মধ্যে মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল। তার পর থেকে তারা নির্বাচন বয়কট ও নির্বাচন নিয়ে খেলা, অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ হত্যা করা, মানুষের জীবন নিয়ে খেলা এ ধ্বংসযজ্ঞেই তারা মেতে আছে। তিনি বলেন, বাঙালি জাতিকে আমি আহ্বান করবো, বাঙালি জাতির ভাগ্য নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে। আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি, বাংলাদেশ জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই এগিয়ে যাবে, মাথা তুলে দাঁড়াবে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি আমরা গড়ে তুলবো, এটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর আমরা সরকার গঠন করি। তখন থেকেই জনগণের সেবা করতে আমরা শুরু করি। আমার প্রশ্ন, ৭৫ সাল থেকে ৯৬ আর ২০০১ থেকে ২০০৮ এই ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল কেন পারেনি বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন করতে। আসলে তারা স্বাধীনতায়, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেনি। এদেশের মানুষের দিকে তারা ফিরে তাকায়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে আমরা যে কর্মসূচি নিই তার সুফল এদেশের মানুষ পাচ্ছে। ১৯৯৮ সালে ২৩ জুন আমরা যমুনা নদীর ওপর প্রথম সড়ক ও রেলসহ বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন করি। পরে ২০০৮ নির্বাচনে আমরা ক্ষমতায় আসি ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি রেলকে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় হিসেবে ঘোষণা দেই, এ রেল যোগাযোগ যাতে আরও ব্যাপকভাবে গড়ে ওঠে তার পদক্ষেপ গ্রহণ করি। আমরা এ সাড়ে ১৪ বছরে ৮২৩ কিলোমিটার নতুন রেললাইন, ২৮০ কিলোমিটার মিটারগেজ রেল ডুয়েলগেজ, ১ হাজার ১৯০ কিলোমিটার লাইন পুনর্গঠন, পুননির্মাণ এবং একই সময় ১ হাজার ১২৬টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ, ৪৯৪টি রেলসেতু পুননির্মাণ, ১৪৬টি নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ, ২৩৭টি স্টেশন ভবন পুননির্মাণ করেছি। তিনি বলেন, রেলের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এ পর্যন্ত ১০০ লোকোমোটিভ, ৬৯৮ যাত্রীবাহী ক্যারেজ, ৫১৬টি মালবাহী ওয়াগন, ৫০টি লাগেজ ভ্যানসহ রেলওয়েতে সংযুক্ত হয়েছে। আর বিভিন্ন রুটে ১৪৩ নতুন ট্রেন চালু হয়েছে, ১৩৪টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থা উন্নত এবং আধুনিক করা হয়েছে। আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রেল যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। আমরা আশা করি বাংলাদেশে রেল যোগাযোগ ব্যাপকভাবে বাড়বে। মানুষের জীবন মান আরও উন্নত হবে।

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান প্রমুখ। ##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা