ঢাকা   মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১

ইসরাইলকে দুই-রাষ্ট্র সমাধানই বেছে নিতে হবে

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম | আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সাম্প্রতিক সংঘাতের পর ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) সীমান্তে তার বাহিনীকে পুনর্গঠন করছে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি ভ‚খÐে প্রবেশকারী হামাস বাহিনীকে সরিয়ে দিচ্ছে।

একই সময়ে এটি গাজায় হামাস এবং আরেকটি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের সাথে যুক্ত লক্ষ্যবস্তুতে বোমা হামলা করছে। ইসরাইলের এই পদক্ষেপ বাপক প্রাণহানি ঘটাতে পারে এবং দেশটিকে কেবল গাজা-ভিত্তিক গোষ্ঠীগুলিই বিরুদ্ধেই নয়, লেবানন-ভিত্তিক গোষ্ঠি হিজবুল্লাহ, ইরান এবং সিরিয়ার সাথে বৃহত্তর সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের নীতির ব্যর্থতা ইসরাইল এই ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে পরিচালিত করেছে। আইডিএফ তার বাহিনী প্রত্যাহার করার দুই বছর পর হামাস যখন ২০০৭ সালে গাজা উপত্যকা দখল করে, তখন ইসরায়েলি সরকার দুটি কার্যকর রাজনৈতিক এবং সামরিক কৌশলের মধ্যে একটি গ্রহন করার সুযোগ পেয়েছিল। তা হল ফিলিস্তিনের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল হামাস অথবা ফাতাহ এর যেকোনও একটির বাস্তবতার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া।

কিন্তু ২০০৯ সালে ইসরাইলে এহুদ ওলমার্তের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে, কোনও ইসরায়েলি প্রশাসন ফিলিস্তিনের সাথে সংঘাত সামধানের কোনো পথই বেছে নেয়নি। ওলমার্ত কিছু সময়ের জন্য ফতাহ্ এ সাথে কৌশলী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তুকোনো লক্ষ্য অর্জনের আগেই তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে নেতানিয়াহু তৃতীয় একটি কৌশল গ্রহণ করেন, যা অনিবার্যভাবে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

২০০৯ সালে নেতানিয়াহু বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি বেশ কয়েকটি শর্ত সহ ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু, নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনিদের সাথে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পরিত্যাগ করে অবশেষে এটি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধি। তিনি রাজনৈতিক সমঝোতার প্রক্রিয়াটিকে ‹বিভক্ত-এবং-জয়›-এর কৌশল দিয়ে প্রতিস্থাপন করেন, যার লক্ষ্য ছিল পশ্চিম তীরে রামাল্লায় ফিলিস্তিনি সরকারকে দুর্বল করা এবং গাজা উপত্যকায় হামাসের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করা।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী তার বর্তমান সরকার গড়ার ক্ষেত্রে তার এই ফিলিস্তিন নীতিটিকে একটি নতুন স্তরে নিয়ে যান এবং চরম ধর্মীয়, চরম-জাতীয়তাবাদী দলগুলির সাথে একটি জোট গঠন করেন, যা বেশ খোলাখুলিভাবে বলেছিল যে, ইসরায়েল কখনই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে না, একক রাষ্ট্রের অধীনে ফিলিস্তিনিদের সমান অধিকার দেবে না। এই নীতির ফলে গাজা উপত্যকার আশে-পাশের সীমান্ত রক্ষার খরচে পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষার জন্য বেশিরভাগ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল।

ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের বর্তমান সংকট নেতানিয়াহুর এই কৌশলের সম্প‚র্ণ ব্যর্থতা প্রদর্শন করে। এটা আশা করা অযৌক্তিক যে, ইসরায়েল তার সামরিক শক্তি এবং নিরাপত্তা পরিষেবা দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে অবরুদ্ধ করে রাখতে করতে পারে, যারা স্বাধিকার এবং একটি মুক্ত, স্বাভাবিক জীবনযাপনের দাবি করে। অবশেষে নির্যাতিতরা তাদের অত্যাচারীর বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবেই। নিপীড়নে ভোগা, এবং স্বাধীনতার জন্য একটি দৃঢ় আকাক্সক্ষা শক্তি বাড়ায়। অবশেষে, ইসরায়েলকে দুই-রাষ্ট্র সমাধান অথবা একটি একক রাষ্ট্রের মধ্যে একটি পছন্দ করতে হবে, যার সমস্ত বাসিন্দাদের জন্য সমান অধিকার রয়েছে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা