ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলা ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদে টাইম স্কয়ারে বিক্ষোভ
১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলা ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়েছে নিউইয়র্কের প্রাণকেন্দ্র টাইম স্কয়ারে। গত শুক্রবার দুপুরে ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সর্বস্থরের হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে অবিলম্বে ইসরাইল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান। এ ছাড়া বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন অনেক ইহুদী। এসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন দেশের মুসলিম কমিউনিটির সাথে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানীসহ অনেক ইহুদীকেও শ্লোগান দিতে দেখা যায়। তাদের কণ্ঠে ছিলো যুদ্ধ বিরোধী শ্লোগান ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘উই ওয়ান্ট ফ্রিডম, ফ্রিডম’। বিক্ষোভকারীরা প্যালেস্টাইনের পতাকা হাতে নানা শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার, প্লেকার্ড ও পোস্টার বহন করে। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে আমেরিকানরা ইসরাইলকে সহায়তা বন্ধের জন্য জো বাইডেন প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান। বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টাইম স্কয়ারে (ওয়েস্ট ৪১ ও ৪২ স্ট্রীট, ব্রডওয়ে) এই বিক্ষোভ চলে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ইসরাইলের নাগরিকরাও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিয়ে শ্লোগান দেন। তাদের অভিযোগ, ইসরাইলের সাধারণ মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহু সরকার। অবিলম্বে তারা এ যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান। পাশাপাশি ইসরাইলকে অর্থ ও সামরিক সহায়তা বন্ধের দাবি তুলে আমেরিকান নাগরিকরা বলেন, আমেরিকার অর্থ দিয়ে ফিলিস্তিনের নিরীহ জনসাধারণকে হত্যা করতে এদেশের জনগণ বাইডেন সরকারকে লাইসেন্স দেয়নি। বিক্ষোভে অংশ নেয়া মুসলিম নেতৃবৃন্দ মুসলমানদের প্রাচীন ধর্মীয় উপাসনালয় আল আকসাকে দখলদার ইসরাইলের হাত থেকে মুক্ত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন কামনা করেন তারা। এদিকে, একই সময় টাইম স্কয়ারের অপর প্রান্তে ইসরাইলের পক্ষেও কিছু লোককে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
নিউইয়র্কের নিরাপত্তা জোরদার : স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস প্রধান মুসলিম বিশে^ বিক্ষোভের আহ্বান জানানোর পর নিউইয়র্কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে। গত শুক্রবার নিউইয়র্কে ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলের সমর্থনে হাজার হাজার বাসিন্দা বিক্ষোভে জড়ো হয়েছে। গভর্নর ক্যাথি হোকুল ও সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। পুলিশ বিভাগকে সবসময় সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্কুল ও প্রার্থনা কেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ। এছাড়াও বিশেষ কিছু আবাসিক এলাকায়ও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গভর্নর ক্যাথি হোকুল জানায়, স্টেট পুলিশের সাথে এনওয়াইপিডি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একত্রে কাজ করবে। প্রয়োজনে ন্যাশনাল গার্ড, জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স এমপায়ার শিল্ড থেকেও বাহিনী পাঠানো হবে।
অপরদিকে নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসরত সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়ে গত বুধবার রাতে এক সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করেন মেয়র এরিক এডামস। ম্যানহাটনে মেয়রের বাসভবন গ্রেইস ম্যানশনে আয়োজিত এ সমাবেশে ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে নিউইয়র্কে ঘৃণা ও বিদ্ধেষ না ছড়ানোর আহবান জানিয়েছেন মেয়র এরিক এডাম। এসময় মেয়র বলেন, সাম্প্রতিককালে ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে মারমুখি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন দুই দেশের সমর্থকরা। এসব সমাবেশ থেকে ঘৃণা ও বিদ্ধেষ ছড়ানোর মত বক্তব্য ও কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা যাচ্ছে। এতে নিউইয়র্কের শান্তি, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতি নষ্ঠ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মেয়র বলেন, নানা ধর্ম ও বিশ্বাসের বৈচিত্রময় শহর নিউইয়র্ক। সবার ধর্মীয় ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান জানায় নিউইয়র্ক সিটি। ফলে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে কোনো বাধা নেই। কিন্তু এসব কর্মসূচির মাধ্যমে যাতে শহরের আইনশৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রুপের নেতারা ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের ইস্যুতে অনুষ্ঠিতব্য যেকোন কর্মসূচিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার অঙ্গিকার প্রকাশ করেন।
এদিকে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রদর্শন করে গ্রেফতার হয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীন থেকে নির্বাচিত সিটি কাউন্সিল উইম্যান ইনা ভারনিকভ। পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার ব্রুকলীন কলেজ ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করছিলো একদল ছাত্র। এসময় ইনা ভারনিকভ সেখানে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে চিৎকার চেচামেচি শুরু করেন। তিনি ইসরাইলকে সমর্থন করে বক্তব্য দেয়া শুরু করেন। এসময় ইনা ভারনিকভের কোমরে ঝুলছিলো তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল। তিনি সেটি কয়েকবার হাতে নেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কোনো পাবলিক মিটিং প্লেসে অস্ত্র নিয়ে যাওয়া বেআইনী। যেকারণে তাকে তৎক্ষনাত গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়ায় কাউন্সিল উইম্যান পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ইনা ভারনিকভ একজন রিপাবলিকান কাউন্সিলওম্যান। ব্যক্তিগতভাবে তিনি একজন ইহুদি এবং ইসরাইলের পক্ষে সবসময় সরব অ্যাক্টিভিষ্ট।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রেকর্ডের মালা গেঁথে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়
মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর, চীনকে ঠেকাতে কোয়াড কি এখনও প্রাসঙ্গিক?
টেলর সুইফটের পর কমলাকে বিখ্যাত বিজ্ঞান ম্যাগাজিনের সমর্থন নিয়ে বিতর্ক
ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়
কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার
মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল
‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের
সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই
নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি
স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন
গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন
চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ
সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে
নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন