বিএনপি আন্দোলনের নামে অবরোধ করলে বিএনপিই অবরোধ হয়ে যাবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, শাপলা চত্বরের চেয়ে করুণ পরিণতি হবে বিএনপির। বিএনপির সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আগামীকালের সমাবেশের দিনে দলীয় নেতা-কর্মীদেরও জমায়েত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে দুপুর থেকে যুবলীগের যুব সমাবেশ উপলক্ষে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, যুবলীগের পতাকা হাতে নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন নেতা-কর্মীরা। ধীরে ধীরে ভরে যায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আশপাশের সড়কগুলো।

সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, হাওয়া থেকে পাওয়া, ফখরুল বলে পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন আন্দোলনে নাকি বিএনপিকে সাহস যোগাচ্ছে? আমরা এটা জানি না, এ খবর হাছা? না মিছা? মিথ্যা কথা আর কত বলবা? ফখরুল?

তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের যারা বাংলাদেশে এসেছে, যারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে, যারা বিদেশে কথা বলেছে, তারা বলেছে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। এ কথা আমেরিকাও বলেছে, এ কথা ইউরোপও বলেছে। ফখরুল কোথা থেকে মিছা, আজগুবি খবর নিয়ে আসল।

বিএনপিকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খেলা হবে, ছাড় দিব না, ফখরুল। ডিসেম্বরের চেয়েও কড়া খেলা হবে। আওয়ামী লীগের অ্যাকশন, যুবলীগের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন।

তিনি বলেন, ১৮ তারিখে (আগামীকাল) আমরা দক্ষিণ গেইটে সব জমায়েত হব। চুরি করে এসে ঢাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাসায় অতিরিক্ত কাপড় আনতে বলেছে ফখরুল। তখন আমরা কি ললিপপ খাব?

নিজ দলের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরাও প্রস্তুত আছি, অবরোধ করলে বিএনপি অবরোধ হয়ে যাবে, বিএনপিকে অবরোধ করা হবে। লুকিয়ে, চুরি করে ডুকছ? এর পরে পালাবার পথ পাবে না, শাপলা চত্বর থেকে কি হলো শেষ রাতে, কি হলো? পালিয়ে গেলো না? আমি বলতে চাই না, আরও করুণ পরিণতি হবে বিএনপির। শেখ হাসিনা মাথা নত করে না, আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহস পাচ্ছে বিদেশ থেকে। আমরা পাচ্ছি, বিদেশি সমীক্ষা এসে পড়েছে, বাংলাদেশের ৭০ ভাগ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। সাহস পাচ্ছি, আমরা বাংলাদেশের জনগণের সমর্থে আমরা সাহস পাচ্ছি, আমরা কাউকে ভয় পাই না, যতক্ষণ জনগণ সঙ্গে আছে ততক্ষণ ভয় নেই।
সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৮ তারিখের সমাবেশ উপলক্ষে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছে। ঢাকার হোটেলগুলোতে কোনো সিট খালি নেই। সেই ডিসেম্বরের মতো সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছেন মির্জা ফখরুল। তাদের এক দফা, ৩২ দল, আন্দোলন সবই ভুয়া; বিএনপি নিজেই ভুয়া।

বিএনপির আগামীকাল বুধবারের সমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাতক বলেন, ঢাকা শহরে লোক জমায়েত, অবরোধ করবে। সচিবালয় থেকে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অবরোধ করবে। তারা সেই ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, এখন চলে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা। আগামী মাসে সেমি ফাইনাল আর জানুয়ারি মাসে হবে ফাইনাল খেলা। খেলা হবে ভোট চোরদের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, লুটপাট ও অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বিএনপির উদ্দেশ্যে এ সময় বলেন, যুব সমাজ পরিষ্কার জানাতে এসেছে, রাজপথেই আপনাদের কবর রচনা করবে। বাংলাদেশে যেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি যেন কোনো যড়যন্ত্র করতে না পেরে সে দিকে নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে ডা. জাহিদ ও পুত্রবধূ ডা. জোবায়দার তত্বাবধানে চিকিৎসা করা হচ্ছে। আমরা ভয়ে আছি বিএনপিতে থাকা আম্মা গ্রুপ আর ভাইয়া গ্রুপের কোনো অন্তর্ঘাত কি-না।

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান নিখিল। যুব সমাবেশের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী।