ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে, কোনো দলের সঙ্গে নয় : দিল্লি
১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৬ এএম
ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে, কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নয়। গতকাল সোমবার এ কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী। দিল্লিতে সফররত বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সেখানে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপত্র অরিন্দম বাগচী।
ভারতের যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) স্মিতা পান্থ বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের সম্পর্ক কীভাবে আরো সহজ করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করছে ভারত।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী, যুগ্মসচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) স্মিতা পান্থ, পরিচালক (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) নবনীতা চক্রবর্তী প্রমুখ।
দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতা ও এই প্রেক্ষাপটে ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, বিশেষ করে বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে সেদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকুক, তা ভারত চায়। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক উচুঁর। উচ্চতার এ সম্পর্ক সব সময়ই আছে, থাকবে। এমন সম্পর্ক অন্যদেশের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। অর্থাৎ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্ক রয়েছে, তার কোনো সীমারেখা নেই। বাংলাদেশ ভালো থাকলে, বাংলাদেশ স্থিতিশীলতা থাকলে ভারতের ভালো লাগে। ভারত সব সময় চায়, বাংলাদেশে গণতন্ত্র বজায় থাকুক। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ভারত সব সময় সম্মান করে। তবে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচন কিভাবে হবে তা একান্তই বাংলাদেশের বিষয়।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশে এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবির প্রসঙ্গে অরিন্দম বাগচী বলেন, ভারতের সংবিধানে এমন কিছু নেই, ভারতে এমন কিছু হয় না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানে যা বলা আছে, হয়তো সেটাই হবে। এরপরই তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোন পদ্ধতির সরকারের অধীনে নির্বাচান হবে সেটার বিষয়ে সেদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক। এ ছাড়া আমাদের সম্পর্ক বাংলাদেশের সঙ্গে, সেদেশের জনগণের সঙ্গে। কোনো নির্দিষ্ট ব্যাক্তি বা দলের সঙ্গে নয়।
অরিন্দম বাগচী বলেন, ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্যপদ না পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের বিরোধিতা ছিল না। ভারত ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্য পদের বিরোধিতা করেছে এসব মিথ্য তথ্য যারা ছড়ায় তারা ব্রিকসের সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া জানে না। তিনি আরো বলেন, ভারত সুযোগ পেলেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায়। তারই অংশ হিসেবে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ভারত।
চীন ইস্যুতে অরিন্দম বাগচী। বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। বাংলাদেশ যদি মনে করে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে তাদের ভালো, তাহলে সেটা তারা করবে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। তারা তাদের সংবিধান অনুযায়ী চলবে।
এর আগে ভারতের যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) স্মিতা পান্থ বলেন, গত সাত-আট বছর দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় এগোচ্ছে। হয়তো কখনো একটু ধীর কখনো দ্রুত গতিতে এগিয়েছে, কিন্তু এগিয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪৬টি প্রকল্প চলমান। এছাড়া ৬৪টিক্ষুদ্র বিনিয়োগও আছে। দুই দেশের যোগাযোগ খাতে ভারত বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ, ত্রিপুরার সঙ্গে রেল ও নদীপথের যোগাযোগ উল্লেখযোগ্য। সবশেষ দুই বছর উন্নয়ন খাতে ভারত অনেক কাজ করেছে। ট্রানজিট ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাণিজ্য ও রপ্তানির সুযোগ দিচ্ছে ভারত। রপ্তানিকারকরা এতে লাভবান হচ্ছেন।
স্মিতা বলেন, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর-পূর্ব ভারত এর উদাহরণ। ওদিকের রাজ্যগুলোতে এখন উন্নয়ন হচ্ছে এবং বাংলাদেশ সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশির ভিসা ইস্যু করেছে। সম্প্রতি ভিসা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সাময়িক। শিগগির এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আপনারা ভ্রমণ করলে ভারতই লাভবান হয়। সুতরাং এ সমস্যা কেটে যাবে। দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক কীভাবে আরো সহজ করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করছে ভারত। ভারতে আসার জন্য এখন ডলার আনার দরকার নেই। টাকা-রুপি কার্ড চালু হয়ে গেলে ভ্রমণকারীরা ক্যাশলেস লেনদেন করতে পারবেন। ইউপে’র মাধ্যমে ভারতে সব ধরনের খরচ করতে পারবে। ভারত এখন নিত্যনতুন উদ্ভাবন, সবুজ জ্বালানি, প্রযুক্তি প্রভৃতি দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান স্মিতা পান্থ। এসময় বাংলাদেশিদের জন্য ভারত আরো বেশি স্কলারশিপ ভবিষ্যতে বাড়াবে বলে জানান তিনি। স্মিতা বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের সীমারেখা আকাশেও নয়। নিরাপত্তা ইস্যুতে, কানেক্টিভিটি এবং উন্নয়ন সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। কোভিড মহামারিকালেও বাংলাদেশে ভারতের উন্নয়ন সহায়তা কার্যক্রম থেমে থাকেনি। তৃতীয় দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারছে।
##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা