ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
২৮ অক্টোবর ঘিরে টান টান উত্তেজনা বিএনপি নয়াপল্টন ও আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করবে মহাসমাবেশ নিয়ে পুলিশের দেয়া চিঠির জবাব দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে জামায়াত দৃঢ় প্রতিজ্ঞ : পুলিশ মাঠে নামতেই দেবে না বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ ৩৬টি রাজনৈতিক দল একই দিন ঢাকায় সমাবেশ করবে

গণতন্ত্রের টার্নিং পয়েন্ট

Daily Inqilab স্টালিন সরকার

২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৩ এএম

এ যেন রাজনীতির মহারণ। জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের এক মহা যুদ্ধযজ্ঞ। একদিকে জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের দৃঢ় প্রত্যয়; অন্যদিকে সংবিধানের দোহাই দিয়ে পাতানো নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে শক্তির মহড়া। শোষক আর শোষিতের লড়াই। এই লড়াইয়ের আয়োজনের মধ্যে রাজধানীতে টান টান উত্তেজনা এবং সারাদেশে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় কী ঘটে তা নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি ভীতি-আতঙ্ক, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল সতর্ক করেছে এই বলে যে, নির্বাচন ইস্যুতে তারা বাংলাদেশের ওপর কড়া নজর রাখছে। তবুও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পরামর্শ ২৮ অক্টোবর সংঘাত এড়ানো সম্ভব না হলে তা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
দেশি-বিদেশি সবার চোখ ২৮ অক্টোবরের দিকে। কী হবে ওই দিন! মাঠের বিরোধী দল বিএনপি গণতন্ত্র রক্ষা এবং জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করবে। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও পাল্টা সমাবেশ করবে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। আবার জামায়াতও শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এর বাইরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনরত আরো প্রায় ৩০টি দল ঢাকায় সমাবেশ করবে। এক কিলোমিটারের মধ্যেই এতগুলো দলের মহাসমাবেশ ঘিরে উত্তেজনার পারদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে। বিশেষ করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের রাজপথ দখলের প্রস্তুতি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ঘোষণা দিলেও আওয়ামী লীগ লাঠি হাতে মাঠে নামতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অলি-গলিতে প্রহরা বসানো হবে এবং আক্রান্ত হলে পাল্টা আক্রমণ করা হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস ১৭ বছর আগের মতোই ‘লগি-বৈঠা দিয়ে বিএনপিকে মোকাবিলা’র ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো কিছুই ২৮ তারিখের মহাসমাবেশকে ঠেকাতে পারবে না। বিএনপির আরেক নেতা বলেছেন, সারাদেশ থেকে দলে দলে লোকজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঢাকায় আসছে। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ইস্যুতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে ‘রাস্তা বন্ধ করা হবে না এবং পথে পথে বাধা দেয়া হবে না’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামাল। কিন্তু মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং ধরপাকড় শুরু হয়েছে। রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে। বাসে বাসে তল্লাশি করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। গতকালই পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। তবে সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির নয়াপল্টনে সমাবেশ করার দৃঢ় অবস্থানের মতোই আওয়ামী লীগ তাদের পছন্দের স্থান বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তাই পুলিশ ছাড় দেবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি দায়িত্বশীল সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিকে তাদের পছন্দের জায়গাতেই সমাবেশ করতে দেওয়া হবে। দুই দলই পছন্দের জায়গায় অনুমতি পাবে। ঝামেলা করলে সর্বোচ্চ কঠোর হবে পুলিশ। তবে জামায়াতকে কোনোভাবেই শাপলা চত্বরে সমাবেশ দূরের কথা মাঠে নামতে দেবে না। ডিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখনো লিখিতভাবে কোনো দলকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। শুক্রবার সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে থেকে যারা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না, তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, যে পুলিশ ও সরকারি কর্মচারী অতিরিক্ত আওয়ামী লীগ করতে চান, চাকরি ছেড়ে দেন। স্যুট-কোট ছেড়ে দিয়ে মুজিব কোট পরুন। সরকারি চাকরিতে থেকে দল করতে পারবেন না। এটি সংবিধান, আইন এবং চাকরিবিধি অনুমোদন করে না। দয়া করে সম্মান বজায় রাখুন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যারা আছেন তারা বাংলাদেশের সন্তান। আপনাদের বাড়িঘর খুঁজে বের করা এক ঘণ্টার ব্যাপার। ঘটনা ঘটলে সবাইকেই খুঁজে পাওয়া যাবে।

২৮ অক্টোবর তারিখটি দেশের রাজধানী ঢাকার মানুষের কাছে যেন আতঙ্ক-বিভীষিকার দিন হয়ে চোখে ভাসছে। ১৭ বছর আগে ২০০৬ সালের এই দিন ছিল সে সময়ের ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকারের মেয়াদের শেষ দিন। বিএনপিপন্থি একজন সাবেক প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করার প্রক্রিয়া ঠেকাতে ঢাকায় বড় দলগুলোর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল সারাদেশে। বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে লগি- বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরে লাশের উপর পৈশাচিক নৃত্যের দৃশ্য দেখেছে দেশের মানুষ। ২৫ অক্টোবর আওয়ামী লীগের এক বৈঠকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস হুমকি দিয়ে বলেছেন, ২৮ আক্টোবর লগি-বৈঠা নিয়ে মাঠে থাকব। ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর যেমন লগি-বৈঠার ব্যবহার করে গণতন্ত্র রক্ষা করেছিলাম, ঠিক তেমনি ২৮ অক্টোর আমরা লগি-বৈঠা দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করব।

২০০৬ লগি-বৈঠার নৃশংস ব্যবহার এবং দিন দুপুরে হাজার হাজার মানুষের সামনে রক্তাক্ত লাশের ওপর নৃত্য বিভীষিকাময় করে তুলেছিল রাজধানী ঢাকার রাজপথ। রক্তাক্ত রাজপথের সিঁড়ি বেয়েই পরবর্তীতে আলোচিত ১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সৃষ্টি হয়। ক্ষমতা দখল করেন ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও আলোচনায় এসেছে ২৮ অক্টোবর। ওই দিন বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশের আয়োজনের বিপরীতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিয়ে রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে। গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টি নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও সরকারের জুলুম-নির্যাতন সুনামিতে বিধ্বস্ত জামায়াত রাজনীতিতে দীর্ঘসময় ধরে কোণঠাসা হয়ে থাকলেও তারাও বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে। এর বাইরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ৩৪টি রাজনৈতিক দল মাঠে থাকবে। একই দিন ঢাকা শহরে সব দলের কর্মসূচি দেওয়ায় দিনটিকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। কী হবে সেদিন তা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাজ করছে নগরবাসীর মধ্যে। বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছে খোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও এত দিন পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত ছিল। কথার লড়াই চললেও রাজপথ তুলনামূলক ভালো ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরকে ঘিরে যে উত্তপ্ত হয়েছে সেখান থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে সরে আসতে হবে। খোলা মন নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

গতকালও সিনিয়র সাংবাদিক ও সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নেই। সিইসি যখন এই বক্তব্য দিচ্ছেন, তখন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। কথা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালেও এটা করেছেন। এবারও তাই করবেন।

২৮ আক্টোবরের মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২৭ থেকে (২৭ অক্টোবর) চোখে ঘুম থাকবে না। প্রয়োজনে নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। যেখানে আমার অস্তিত্বের প্রশ্ন সেখানে ঘুম দিয়ে কী করব। রাস্তা ছাড়বেন না। আক্রমণ করব না, এ পর্যন্ত করিনি আমরা বিরোধী দলের ওপর। অলি-গলিতে প্রহরা দেয়া হবে। আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণ করব। কোনো ছাড় নয়। অন্যদিকে গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আগামী ২৮ অক্টোবর আওয়ামী সরকারের বিদায় ঘণ্টা শুরু হবে। সরকার যতই বাধা প্রদান করুক, তারা কোনোভাবেই এবার তাদের পতন ঠেকাতে পারবে না। পুরো ঢাকা শহর থাকবে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দখলে। বিএনপির প্রায় ৪০ লাখ নেতা-কর্মীর নামে মামলা দেয়া হয়েছে। মামলাপ্রাপ্ত সকল নেতাকর্মী ঢাকা শহর দখলে রাখবে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপিকে চিঠি দিয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি)। চিঠিতে মহাসমাবেশ করতে আওয়ামী লীগ প্রস্তাবিত বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের বিকল্প আরো দু’টি স্থানের এবং বিএনপিকে নয়াপল্টন্থ দলীয় কার্যালয়ের বিকল্প আরো দু’টি স্থানের নামসহ ৭টি বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয়। চিঠিতে যেসব তথ্য চাওয়া হয় সেগুলো হচ্ছেÑ ১. সমাবেশে লোক সমাগম কখন শুরু হবে এবং সমাবেশ কখন শেষ হবে? ২. সমাবেশে কি পরিমাণ লোক সমাগম হবে? ৩. সমাবেশটি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটের সামনে হতে ঠিক কোন কোন স্থান পর্যন্ত বিস্তৃত হবে? ৪. সমাবেশে বক্তব্য প্রচারের জন্য কোন কোন স্থানে মাইক স্থাপন করা হবে? ৫. সমাবেশে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন কি না? ৬. সমাবেশে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে কি না? হলে, তার সংখ্যা কত? ৭. জননিরাপত্তাজনিত কারণে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অনুমতি দেওয়া সম্ভব না হলে বিকল্প ২টি ভেন্যুর নাম প্রস্তাব করুন।

বিএনপি যা জানালো : বিএনপি আগামী ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই করতে অনড়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পল্টন থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন মিয়াকে দেওয়া চিঠিতে বিএনপির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নয়াপল্টনে সমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং সেখানে সোয়া লাখের মতো লোক সমাগম হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

পল্টন থানার ওসিকে পাঠানো চিঠিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, গত ২৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে আপনার (ওসি) স্বাক্ষরিত একটি পত্র বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গৃহীত হয়। পত্রে ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশ সম্পর্কিত সাতটি তথ্য জানতে চাওয়া হয়। ক্রমানুসারে সাতটি তথ্যের জবাব নিম্নরূপ: ১. সমাবেশ বেলা ২টায় শুরু হবে এবং মাগরিবের আজানের আগে শেষ হবে। ২. সমাবেশে এক লাখ থেকে সোয়া লাখ লোক হতে পারে। ৩. সমাবেশটি পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় ও পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। ৪. সমাবেশ উপলক্ষে পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় এবং পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত কিছু দূর পর পর মাইক লাগানো হবে। ৫. ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেবেন না। ৬. সমাবেশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দলের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন, যার সংখ্যা হবে ৫০০ জন। ৭. ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনেই আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অন্য কোনো ভেন্যুতে যাওয়া সম্ভব হবে না

যা জানালো আওয়ামী লীগ : ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আগামী ২৮ অক্টোবর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করাসহ সাতটি বিষয়ে পুলিশকে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই সমাবেশ চলবে বলে জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ তার সই করা এ সংক্রান্ত চিঠি পল্টন মডেল থানার ওসির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৮ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে পত্রের মাধ্যমে আপনি সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য চেয়েছেন, যা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো- ১. সমাবেশে লোক সমাগম সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে এবং সন্ধ্যা ৭টায় শেষ হবে। ২. সমাবেশে প্রায় ২ লাখ লোক সমাগম হবে। ৩. সমাবেশটি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট থেকে পল্টন মোড়, জিপিও মোড়, শিক্ষা ভবন, গোলাপ শাহ মাজার, নগর ভবন, নবাবপুর সড়ক, মহানগর নাট্যমঞ্চ সড়ক, দৈনিক বাংলা মোড় এবং মতিঝিল সড়ক, স্টেডিয়াম সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। ৪. সমাবেশে বক্তব্য প্রচারের জন্য এসব স্থানে মাইক স্থাপন করা হবে। ৫. সমাবেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহের নেতাকর্মী, সমর্থক, নারী সংগঠন, তরুণ প্রজন্ম ও সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেবে। ৬. সমাবেশে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে। ৭. ২৮ অক্টোবর শাস্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি (মঞ্চ নির্মাণ ও প্রচার-প্রচারণার কার্যক্রম) ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এমতাবস্থায়, স্বল্প সময়ের মধ্যে অন্য কোনো ভেন্যুতে নতুনভাবে সমাবেশের প্রস্তুতি গ্রহণ করা দুরূহ ব্যাপার।

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আগামী ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের অনুষ্ঠানস্থল ও তার সংলগ্ন এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা প্রদানের বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে সমাবেশ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেন। সেদিন থেকে মহাযাত্রা শুরুরও ঘোষণা দেন তিনি। এরপর থেকে আলোচনায় আসে ২৮ অক্টোবর।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা