ঢাকা   সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৮ আশ্বিন ১৪৩১

বিক্রি বেড়েছে শীতের পোশাকের

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম

শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে বিক্রিও বেড়েছে শীতের পোশাকের। ফলে গত কয়েকদিনে মার্কেটগুলো ক্রেতায় জমজমাট। বিক্রেতাদের আশা এভাবে বিক্রি চলতে থাকলে লাভের মুখ দেখবেন তারা। পৌষের আগেই রাজধানীতে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। এতে নাকাল রাজধানীবাসী। শীত শুরুর অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও, এত দিন শীতের কাপড় কেনার আগ্রহ দেখায়নি নগরবাসী। তবে গত এক সপ্তাহে নড়েচড়ে বসেছে সবাই। শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাথ সব জায়গায় শীতের কাপড় কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে বিভিন্ন শপিংমলের তুলনায় ফুটপাথেই হিড়িক পড়েছে বেশি।
রাজধানীর নিউমার্কেটে দেখা যায়, ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রে জ্যাকেট, ডেনিমের সোয়েটার, লম্বা হাতার মোটা গেঞ্জির চাহিদা বেশি। এসব পোশাক ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নারীদের ক্ষেত্রে সোয়েটার, উলের গেঞ্জি, জ্যাকেট ও হুডি বেশি বিক্রি হচ্ছে। এসব পোশাকও ৫০০ থেকে শুরু করে দেড়-দুই হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া নিউমার্কেটের গ্লোব সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেটেও দেখা গেছে ভিড়। মার্কেটের সঙ্গে সঙ্গে ফুটপাতও জমজমাট। মার্কেটের তুলনায় ফুটপাথের দোকানে কম দামে কাপড় মিলছে।
নিউমার্কেটের এক কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে মার্কেটে ক্রেতা একটু বেশি। বিক্রি ভালোই। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা ভালো হবে। বিক্রি ভালো হচ্ছে। দিনে ১৫-২০ হাজার টাকার বিক্রি করছি। আমাদের দোকানে সব ছেলেদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। মার্কেটে বেশি তরুণ কাস্টমার।
সরেজমিনে পুরান ঢাকার সদরঘাট ও লক্ষ্মীবাজারের ফুটপাথে দেখা গেছে, স্বল্প মূল্যে প্রয়োজনীয় ও পছন্দনীয় পোশাক কিনছেন ক্রেতারা। ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে যেকোনও বয়সী মানুষের শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে ফুটপাথে। ভিড় করে দাঁড়িয়ে বেছে বেছে পরিবারের সদস্যদের জন্য শীতের কাপড় কিনছে মানুষ। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব এলাকার ফুটপাথগুলোয় নিম্নবিত্তের চেয়ে মধ্যবিত্ত মানুষের সংখ্যাই বেশি।
লক্ষ্মীবাজার এলাকা থেকে ছেলেমেয়েদের জন্য শীতের কাপড় কিনতে এসেছেন গৃহিণী শাকিলা। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সবারই আগেরবারের শীতের কাপড় ছিল। সেটাই পরতে শুরু করেছি। আমার ছেলে কলেজে পড়ে, মেয়ে হাইস্কুলে পড়ে। তারা জেদ ধরেছে শীতের নতুন পোশাকের জন্য। তাই বিকালে বের হয়েছি ওদের পছন্দের জ্যাকেট হুডি কিনতে। ফুটপাথে কাপড়ের মান ওত বেশি খারাপ না। তা ছাড়া ফুটপাথে পছন্দনীয় জামাকাপড় পাওয়া যায়। দোকান থেকে এখানে অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে কিনতে পাওয়া যায়। এখানে আসার আগে আমি প্রথম গ্রেট ওয়াল মার্কেটে গিয়েছি। সেখানে একটা হাই নেক গেঞ্জির দাম চেয়েছে ৫০০ টাকা। দোকানদার ৪০০ টাকার কমে দিতে রাজি হননি। সেই হাই নেক গেঞ্জি এখান থেকে কিয়েছি ২০০ টাকা দিয়ে। ফুটপাথ বলে এটাকে অন্যভাবে দেখার কিছু নেই। ফুটপাথে যে আমরা শীতের কাপড় পাচ্ছি, এটাই আমাদের জন্য অনেক।
পুরান ঢাকার আরেক বাসিন্দা আলমগীর বলেন, যেকোনও জিনিস কিনতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের প্রথম পছন্দ ফুটপাথ। কারণ প্রয়োজনীয় ও পছন্দনীয় সব জিনিস স্বল্প মূল্যে পাওয়া যায় ফুটপাথে। দীর্ঘ সময় ধরে বাছাই করে কাপড় কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, কম দামের পোশাকে একটু-আধটু সমস্যা থাকে। তাই দেখেশুনে কিনলাম, যেন কাপড়ে কোনও সমস্যা না থাকে।
রিকশা থামিয়ে ফুটপাথ থেকে শীতের কাপড় কিনতে দেখা যায় বেশ কয়েকজন চালককে। নিজের জন্য শীতের কাপড় কেনার লক্ষ্যে রিকশা থামিয়ে পোশাক দেখছিলেন এক রিকশাচালক। তিনি বলেন, শীতের রাইতে গরম কাপড় ছাড়া রিকশা চালানো যায় না। অনেক ঠান্ডা লাগে। বাতাসের মধ্যে দিয়া রিকশা চালানো মেলা কষ্টের কাম। তাই বড় দেইখা গরম একটা সোয়েটার কিনলাম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় শীতের কাপড় বিক্রেতা বলেন, এক মাস হলো শীতের পোশাক বিক্রি শুরু করেছি। এত দিন তেমন বেচাকেনা ছিল না। কারণ তেমন শীত ছিল না। অপেক্ষায় ছিলাম কবে শীত বাড়বে। এখন শীত পড়তে শুরু করেছে, তাই বেচাকেনাও বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগেও দিনে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা বিক্রি করতে কষ্ট হয়ে যেতো। চাঁদা ও নিজের খরচের পর পকেট খালি থাকতো। এখন দৈনিক পাঁচ-সাত হাজার টাকা বেচাকেনা হয়। আশা করি আগামী এক সপ্তাহ এমন বেচাকেনা হলে চালান উঠে আসবে।
লক্ষ্মীবাজার এলাকার আরেক শীতের কাপড় বিক্রেতা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার শীত কম, তাই বেচাকেনাও তেমন সুবিধার না। তবে এই এলাকায় যে কয়জন বিক্রেতা আছে, সবার কমবেশি ভালো বিক্রি হয়। এখান থেকে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে ভালো ও মানসম্মত শীতের কাপড় কেনা যায়। যেটা শপিং মলে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এ জন্য এখানে সবাই আসে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার

বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার

কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?

কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?

এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী

এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে

রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি

রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি

নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা

নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা

ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে

ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে

দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী

দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী

ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়

ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়

বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি

বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি

পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ

পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ

শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক

শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক

অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল

অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল

‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’

‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’

হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী

হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী

মার্কিনিদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান

মার্কিনিদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান

সংঘাতের মধ্যে নতুন অস্ত্র সামনে আনলো ইরান

সংঘাতের মধ্যে নতুন অস্ত্র সামনে আনলো ইরান

ভারতকে পারমাণবিক সাবমেরিন আন্ডারওয়াটার ড্রোন দেবে ফ্রান্স

ভারতকে পারমাণবিক সাবমেরিন আন্ডারওয়াটার ড্রোন দেবে ফ্রান্স