আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে উৎখাত করতে পারবে না
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম
আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে উৎখাত করা যাবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ এদেশের মাটি মানুষের সংগঠন। এর শেকড় অনেক গভীরে। এভাবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করতে পারবে না। সংগ্রাম করে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচন সংস্কার আমরা করেছি। জনগণের ভোটের অধিকার তাদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। অগ্নিসন্ত্রাস আর খুন করে জনগণের মন পাওয়া যায় না। গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। সারা বিশ্ব এখন সম্মানের চোখে দেখে। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু লোক বোঝে না। বুদ্ধি বেচিয়া জীবিকা নির্বাহ করে যারা তাহারাই বোঝে না। সাধারণ মানুষ বোঝে। তারা আমাদের সাথে আছে। বাংলাদেশের মানুষ বোঝে তাদের কিসে ভালো কিসে মন্দ। আর কোন দল ক্ষমতায় থাকলে তাদের উন্নতি হয়।
জোর করে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে জনরোষের আন্দোলনে ছিয়ানব্বইতে ভোট চুরির অপবাদ নিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলো মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা দেশের জন্য দুর্ভাগ্যের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নাম নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে মানুষকে পুড়িয়ে মেরে আন্দোলন করে তারা। বাসে, গাড়িতে, ট্রেনে লঞ্চে-সব জায়গায় তাদের আগুন। তাদের এই অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার আজকে কতো মানুষ পোড়া শরীর নিয়ে কাতর, অসহায় জীবনযাপন করে। নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিলো, পারেনি। জনগণ সাথে না থাকলে পারা যায় না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলো। সেই সময়ে ওই নির্বাচন কিন্তু কেউ মেনে নেয়নি। জনগণের আন্দোলনের কারনে খালেদা জিয়া ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এটাও সবাইকে মনে রাখতে হবে। ভোট চুরি অপবাদ মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়া বিদায় নেয়।
ভোট কারচুপি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে খুব অবাক লাগে বিএনপি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটের অধিকারের কথা বলে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া, ভোট কারচুপি করা, সিল মারা, হ্যাঁ না ভোট দিয়ে হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরা, এগুলো কে করেছে? এগুলোতো জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে। জিয়াউর রহমান অবৈধ ক্ষমতা দখল করে এসবের শুরু করেছে। ওদের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত দিয়ে। ওদেরকে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করবে কিভাবে?
বিএনপি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে নয়, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এদের চরিত্র কখনো বদলাবে না। জনগণের কল্যাণ মঙ্গলের কথা এরা চিন্তা করে না। নিজেদের কথাটা ভালো বোঝে। যখনই ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোট চুরি করা, অর্থ সম্পদ বানানো, বিদেশে অর্থ পাচার করা, মানি লন্ডারি করা, এমনকি এতিমের অর্থ পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছে। আর তাদের কাছ থেকে বড় বড় কথা শুনতে হয়। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন তারা (বিএনপি) করবে কিভাবে। একটা নমিনেশন দেয় লন্ডন থেকে, একটা আসে পল্টন থেকে আরেকটা আসে গুলশান থেকে। এখন যখন লন্ডনেরটা আসে তখন পল্টনেরটা চলে যায়। যখন পল্টনেরটা আসে তখন গুলশানেরটা যায়। সকালে একটা দেয় তো বিকালে আরেকটা দেয়। এভাবে তাদের নির্বাচন পল্টনও গেলো, লন্ডনও গেলো, গুলশানও গেলো। তাও কয়েকটি আসন পেয়েছিলো। সংসদে তাদের যে সদস্য ছিলো, আমরা কিন্তু তাদেরকে কথা বলার সুযোগ দিতাম। কারন আমরা যখন বিরোধী দলের ছিলাম আমাদের কথা বলতে দিতো না। এমনকি ২১ আগস্ট গ্র্রেনেড হামলার বিষয় নিয়ে একবারও কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়নি। বিরোধী দলীয় নেতা হয়েও আমি কখনো কথা বলার সুযোগ পেতাম না। যে কারনে আমরা গণতন্ত্রের চর্চার করি।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি তিনি বলেন, ওই দলের (বিএনপি) তো মাথা নেই। একটা ধর আছে। সেটাও একটা গুলশান, একটা পল্টন। আর কেউ কেউ কোন অন্ধকার জায়গা থেকে যে কথা বলে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করে দিয়েছি। তার সুযোগ নিয়ে তারা কাজে লাগাচ্ছে। আজ হরতাল অবরোধ ডেকে মানুষকে পুড়িয়ে মারে। রেল লাইন কাটা সরাসরি মানুষ হত্যা করা। কেন মানুষ স্বাধীনভাবে চলতে পারবে না? কেন তাদের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারবে? আমার মনে হয় দেশের মানুষকে এই প্রশ্ন বিএনপির কাছে করা উচিত। তিনি আরো বলেন, রেল লাইন কেটে মৃত্যুর ফাঁদ পেতে তারা মানুষ হত্যা করেছে। জিয়া আর খালেদা জিয়ার মতো লন্ডনে বসে হুকুম দেয়...আমি বুঝি না বিএনপি নেতারা কি করছে। ওখান থেকে হুকুম দেয় আর এখান থেকে আগুন দেয়। এই আগুন নিয়ে খেলা, এই খেলা ভালো না বাংলাদেশের মানুষ এটা মেনে নেবে না।
রেল লাইন কাটা এবং অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তারা হরতাল ডেকে ঘরে চুপ করে থাকে। এতো টাকার উৎস কোথায়? হাওয়া ভবন খুলে অস্ত্র চোরাকারবারি, মানি লন্ডারিং করে টাকা পাচার করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, যারা রেল লাইন কাটতে যাবে এদের ধরিয়ে দিন। এদের ধ্বংসাত্মক কাজ চলতে পারে না। খালেদা জিয়ারে তো বছরের পর বছর অবরোধ চলছে। ওটা এখনও তোলে নাই। বাংলাদেশ যখন কোভিড আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ধাক্কা কাটিয়ে উঠে এগিয়ে যাচ্ছে তখন হরতাল অবেরোধ ডেকে আবারো বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিবিনি খেলছে। এরা মানুষের কল্যাণ চায়না। তারা ভোটে যায় না কারন মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। এজন্য নির্বাচন বানচাল করতে চায়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়
বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি
পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ
শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক
অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল
‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’
হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী
মার্কিনিদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান
সংঘাতের মধ্যে নতুন অস্ত্র সামনে আনলো ইরান
ভারতকে পারমাণবিক সাবমেরিন আন্ডারওয়াটার ড্রোন দেবে ফ্রান্স