ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ইসলামশূন্য নতুন শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে মেধাশূন্য করার পায়তাঁরা করছে। দেশের অভিভাবকগণ এই কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে মাঠে নেমেছে। অভিভাবকগণ তাদের আদরের সন্তানকে নিয়ে চরমভাবে উদ্বিগ্ন। এমতাবস্থায় দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনা অনুযায়ী নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নের দাবি জানান তিনি। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জাতিসত্তাবিরোধী শিক্ষা কারিকুলামের বিরুদ্ধে সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বকীয়তা রক্ষা ও দখলদার ইসরাইলি বর্বতার প্রতিবাদে মুসলিম উম্মাহর করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় ওলামা সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।

জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান পীর সাহেব দেওনা, বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুর রহমান, দেশের বাহির থেকেও বিভিন্নভাবে যুক্ত হয়েছেন কয়েকজন সম্মানিত অতিথি। গুগল মিটে লাইভ বক্তব্য রাখেন ফিলিস্তিন ওলামা পরিষদ প্রধান ড. নওয়াফ তাকরুরি, অডিও বার্তা প্রেরণ করেন ভারত দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মাওলানা আবুল কাসেম নোমানী, পাকিস্তানের মাওলানা ইলিয়াস গুম্মান, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, পটিয়ার মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, মাওলানা জোনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আল মোবারক, মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদি, শায়খ আহমাদুল্লাহ, মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা ড. বেলাল নূর আজীজি, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা মোহাম্মদ আলী কাসেমী, মুফতি লুৎফর রহমান ফরায়েজী, আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা হানযালাহ, আতিকুর রহমান মুজাহিদ ও ছাত্র নেতা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষকে আর্থিক সহায়তা করা ও মুজাহিদ বাহিনী পাঠানোর ব্যবস্থাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা উচিত। তিনি বলেন, ইঙ্গ-মার্কিনের সহযোগিতায় জারজরাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনে ইতিহাসের জঘন্য বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে। মুসলিম বিশ্বকে সম্মিলিতভাবে ইসরাইলকে রুখে দিতে হবে।

ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। সেমিনার সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করীম আবরার, মুফতি শামসুদ্দোহা আশ্রাফি। পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রতিটি মুসলমান বায়তুল মুকাদ্দসকে হৃদয়ে ধারণ করেন। কাজেই মানবতার দুশমন ইসরাইল মুসলমানের হৃদয় থেকে মসজিদুল আকসার ভালোবাসা মুছে দিতে পারবে না।

বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক ইসরাইলের পণ্য সর্বতোভাবে বর্জনের লক্ষে ক্যাম্পেইন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইসরাইলের মুসলিম জাতিসত্তাবিরোধী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড রুখে দিতে হবে। জাতীয় সেমিনারের ৭ দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসার হেফাজত এবং সন্ত্রাসী দখলদার ইহুদিবাদী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের কবল থেকে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি উদ্ধারের জন্য বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, মুসলমানদের পবিত্র স্থাপনা এবং পবিত্র ভূমিসমূহ সুরক্ষার জন্য বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সমন্বয়ে সম্মিলিত সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।