ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১

২০২৩ : আফ্রিকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের কঠিন বছর

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা ২০২৩ সালে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। কঙ্গোতে বেসামরিক জনতার সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর পর দেশটির ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তারা। আর এটাই একমাত্র আফ্রিকার দেশ নয় যেখান থেকে তাদের চলে যেতে হয়েছে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা ২০২৩ সালে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে এবং যেসব দেশে তাদের মোতায়েন করা হয়েছে সেসব দেশে স্থিতিশীলতা বয়ে আনতে বেশ বেগ পেয়েছেন। বিশেষ করে আফ্রিকায় তারা তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক কঙ্গো (ডিআরসি), সাউথ সুদান, মালি ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের (সিএআর) মতো দেশগুলোতে জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছেন শান্তিরক্ষীরা।
কিছু বিশ্লেষকের মতে, কঠোর নীতিমালার আওতায় কাজ করা জাতিসংঘের মিশনগুলো এসব দেশের পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে অভিভূত অবস্থার মধ্যে পড়েছে।
সেন্টার ফর হিউম্যান সিকিউরিটি এন্ড পিস বিল্ডিংয়ের পরিচালক আদিব সানি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘এক্ষেত্রে একটি পরিষ্কার উদাহরণ মালির নিরাপত্তা পরিস্থিতি। সেখানের পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি কারণ প্রতিদিনই সহিংসতা বাড়ছে। অবস্থাদৃষ্টে অনেকটাই মনে হচ্ছে যে জাতিসংঘের মিশন অসহায় অবস্থায় পড়েছে।’ সানির মতো বিশ্লেষকদের কাছে আফ্রিকার কিছু অংশ জাতিসংঘ মিশনগুলোর পারফর্মেন্স হতাশাজনক। তারা এসব দেশে সহিংসতা নিরসনে ব্যর্থ হয়েছেন। অথচ মূলত ওটা সামলাতেই তাদের সেসব দেশে পাঠানো হয়েছিল।
ম্যান্ডেট মানতে বাধ্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা : কার্যক্রম পরিচালনারক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ম্যান্ডেট মানতে বাধ্য জাতিসংঘ মিশনগুলো। যেমন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে বলপ্রয়োগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তারা আত্মরক্ষা বা তাদের ওপর আরোপিত ম্যান্ডেট রক্ষা ছাড়া প্রাণঘাতী বল প্রয়োগ করতে পারবেন না। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, শান্তিরক্ষীদের কঠিন পরিস্থিতে পড়ার কারণ হচ্ছে তাদেরকে দেওয়া ‘দুর্বল’ ম্যান্ডেট।
সংঘাত নিরসনে বিশেষজ্ঞ ফিদেল আমাকিয়ে ওউসু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমি বলবো না যে আফ্রিকায় জাতিসংঘের সব মিশন ব্যর্থ হচ্ছে। বরং তাদের ম্যান্ডেটের ধরনের কারণে তারা কাঙ্খিত সাফল্য পাচ্ছেন না।’
মালিতে এ বছর দেশটির সাধারণ মানুষ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। জুনমাসে দেশটির জান্তা সরকার জাতিসংঘ মিশন প্রত্যাহার করে নিতে বলে।
অথচ এক দশক আগে মালির উত্তরাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ইসলামপন্থিদের বিদ্রোহ দমনে শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু দেশটির সামরিক সরকার উল্টো শান্তিরক্ষীরা সেখানকার অস্থিরতা উস্কে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে। ফলে অক্টোবরে জাতিসংঘ ঘোষণা দেয় যে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়েস্ট আফ্রিকার দেশটি থেকে শান্তিরক্ষা মিশন সরিয়ে নেওয়া হবে।
গতমাসে দেশটি থেকে ফিরে এসেছেন শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত জার্মান সৈনিকরা। মালির সামরিক শাসকরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের বদলে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী হিসেবে পরিচিত ভাগনার গ্রুপকে দিয়ে জিহাদি হুমকি মোকাবিলায় উৎসাহ দেখাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ম্যান্ডেটের কারণে যে সীমাবদ্ধতার মধ্যে শান্তিরক্ষীদের কাজ করতে হয়, ভাগনারের মতো প্রাইভেট মিলিটারি বাহিনীর সেই সীমাবদ্ধতা নেই।
তবে মোতায়েনকৃত দেশগুলোর আস্থা অর্জনে শান্তিরক্ষীরা খুব বেশি কিছু করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাদের কেউ কেউ যৌন হয়রানির এবং নির্যাতনে অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। চলতি বছর এধরনের অভিযোগের কারণে তানজানিয়ার ৬০ শান্তিরক্ষীকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে জাতিসংঘ। শান্তিরক্ষা মিশনকে আরো কার্যকর করে তুলতে চাইলে জাতিসংঘের সংস্কার প্রয়োজন বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : ডয়চে ভেলে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশে সংস্কার  ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ