কৌশলগত সুবিধায় জে. ইব্রাহীম, শক্ত অবস্থানে জাফর
০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম
এগিয়ে আসছে ৭ জানুয়ারীর একতরফা নির্বাচন। সময় যতই এগিয়ে আসছে নির্বাচনী হাঙ্গামা বাড়ছে কক্সবাজারের ৪টি আসনে। কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের পরিস্থিতি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এখানে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছিলেন সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি। কিন্তু তার মনোনয়ন আইনী জটিলতায় আটকে যায়। আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা জাফর আলম এবার দলের মনোনয়ন পাননি। সরকারের করোনায় এ আসনে হাত ঘড়ি নিয়ে ভোট প্রার্থী হয়েছেন কল্যাণ পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান জে. ইব্রাহীম। তাই জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কোমর বেঁধে জে. ইব্রাহীমের পক্ষে মাঠে নেমেছেন।
চকরিয়া-পেকুয়ার মাঠজরিপ থেকে জানা গেছে, এমপি জাফর তার সম্রাজ্যে ইব্রাহীমকে মেনে নিতে নারাজ। তাই সর্ব শক্তি দিয়ে তিনি মাঠ ধরে রাখতে চান। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের পাশ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে তার আপন জনেরা। এক সপ্তাহ আগেও তার নিজস্ব কার্যালয়ে শতশত নেতাকর্মী জড়ো হতেন। তারা এখন খবর রাখছেন না জাফর আলমের। জানা গেছে, ভোটের মাঠে স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা ছাড়া তেমন কাউকে পাশে পাচ্ছেন না তিনি।
এদিকে নৌকাহীন ভোটের মাঠে হাতঘড়ি প্রতীক নিয়ে ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি ইব্রাহীমের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। তারা বলছেন, গত পাঁচ বছর চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষ ভয়ভীতির মধ্যে ছিলেন। নিরাপদে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হলে দখলবাজ ও চাঁদাবাজ চক্র থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে হাতঘড়ি মার্কায় ভোট দেওয়ার বিকল্প নেই।
শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে সালাহ উদ্দিন নামতে না পারায় পাল্টে যায় চিত্র। অভিযোগ আছে গত পাঁচ বছর জাফর আলমের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী। সরকার কৌশলগত কারণে এ আসনটি পরবর্তীতে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিকে ছেড়ে দেয়। জে. ইব্রাহীম বর্তমানে এই আসনে কৌশলগত সুবিধায় থাকলেও ভোটের মাঠে এখনো শক্ত অবস্থানে রয়েছেন ট্রাক প্রতিকের এমপি জাফর আলম।
জে. ইব্রাহীম ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছে। গত ২৭ ডিসেম্বর সালাহ উদ্দিন আহমদ হাত ঘড়ি প্রতীককে বিজয়ী করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। দলের বেশিরভাগ ইউনিয়ন, একটি পৌরসভাসহ ও সাংগঠনিক ইউনিটগুলো ঘড়ি প্রতীকের জন্য কাজ করতে শুরু করেছে।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত ৫ বছরে এমপি জাফর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বাদ দিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরী করে চকরিয়া-পেকুয়ায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী করে সাধারণ মানুষকে জীম্মি করেছেন। এবার সাধারণ মানুষ এর জবাব দেবে।
অভিযোগ আছে, জাফর আলম গত পাঁচ বছর ত্যাগী নেতাকর্মীর মূল্যায়ন না করে একতরফা দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এছাড়া পেকুয়ায় একটি নির্বাচনী সভায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সমালোচনা করায় দলীয় পদ হারান তিনি। এরপর কর্মীরা সরে পড়তে শুরু করে। ভোটের মাঠে গণসংযোগ করছেন জাফর আলমের স্ত্রী শাহেদ বেগম, কন্যা ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তানিয়া আফরিন এবং পুত্র তানভির সিদ্দিকী তুহিন। কিছু নেতাকর্মী ছাড়া কাউকে তেমন দেখা যাচ্ছে না তার পাশে।
জাফর আলম অভিযোগ করেন, গত কয়েক দিনে তার সমর্থক অনেক নেতাকে আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে অনেকে গা ডাকা দিয়েছেন। ভোটের মাঠে এর প্রভাব পড়তে পারে।
অন্যদিকে মোহাম্মদ ইব্রাহিম অভিযোগ করেন, এমপির ক্যাডাররা হাতঘড়ির কর্মীদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। পোস্টার এবং ব্যানার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এই আসনে অপর চার প্রার্থী হলেন ওয়ার্কার্স পার্টির বশিরুল আলম (হাতুড়ি), ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন (মোমবাতি), স্বতন্ত্র প্রার্থী কমর উদ্দিন আরমান (কলার ছড়ি) ও তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী (ঈগল)।
উল্ল্যখ্য, স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দু’বার, জাতীয় পার্টি তিনবার, বিএনপি পাঁচবার ও জামায়াতে ইসলামী একবার জয়লাভ করে। এদিকে বিএনপি-জামায়াতের ভোট একটি বড় ফ্যাক্টর এখানে। জাতীয়ভাবে দল দু’টি নির্বাচন বর্জন করলেও এই ভোটারগুলো ভোটকেন্দ্রে গেলে ফলাফল নির্ধারণে ফ্যাক্টর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জকিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু
সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন বহিষ্কার
হোক না সবার সুপারনিউমেরারি পদোন্নতি, কর্মক্ষেত্রে আসুক গতি
জামিনে এসে হত্যা মামলার সাক্ষীসহ ৫ জনকে কুপিয়েছে প্রধান আসামি
সীমান্তে ভারত উত্তেজনা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: ইসলামী আন্দোলন
কলম্বিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৬০
প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তারাই গ্রহণযোগ্য সাংবাদিক হবে
কাঁটাতার পেরিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে কুড়িগ্রামে ভারতীয় গৃহবধূ
জাতির সংকট উত্তরণে সর্বদা মানুষের আস্থা ও ভরসাস্থল জিয়া পরিবার : মীর হেলাল
স্বৈরাচার মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে বিএনপি সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে চায়: আমিনুল হক
গুলি করা পুলিশের শাস্তি নয়, চিকিৎসকের গ্রেফতার ফ্যাসিবাদের উদাহরণ - ডা. রফিকুল
ফেনীতে সিক্সার্স ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে ছাগলনাইয়া উপজেলা দল চ্যাম্পিয়ন
দৌলতপুর সরকারি প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
গোপালগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করণে জেলা প্রশাসকের ব্যতিক্রম আয়োজন
সৈয়দপুরে শহিদ জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালন
বিশ্বনাথের চাউলধনী হাওরে সীমানা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত
স্বভাবী চোরের শাস্তি ইসলামেই নির্ধারিত - পীর সাহেব চরমোনাই
‘সীমান্তে গন্ডগোল শুরু হয়েছে, জীবন বিপন্ন হলেও দেশের সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখবো’
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী: সরকারের নতুন পদক্ষেপে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ সম্ভাবনাময়
আলজেরিয়ায় কুরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ তাওহিদুলের দেশত্যাগ