নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে সরে দাঁড়ালেন জাপা ৩ প্রার্থী
০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রহসনের ডামি নির্বাচন উল্লেখ করে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। বরিশালের দুটি এবং বরগুনার একটি আসনের ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থী। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বরিশাল-২ ও বিভাগীয় সদর বরিশাল-৫ আসনের দলীয় প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস এবং বরগুনা-১ আসনের প্রার্থী খলিলুর রহমান। তারা বলছেন, কোনোভাবেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
গতকাল রোববার বরিশালের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির এ দুই প্রার্থী। সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধ পরিকর। কিন্তু তাদের আচরণে মনে হচ্ছে তারা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। সরকার কিছু রাজনৈতিক দলকে ঘুষ বরাদ্দ দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে চাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে ৭ই জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই কারণে বরিশালের ২টি আসনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে এবং এ দুটি এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই মঞ্চে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বরগুনা-১ আসনের জাতীয় পার্টির আরেক প্রার্থী খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিলাম। সরকার দলীয় নাটকে আমাদের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করায় নির্বাচন থেকে সরে যেতে হল। আজ থেকে বরগুনা-১ আসনের নির্বাচন থেকে আমি সরে দাঁড়ালাম।
গাজীপুর-১ ও ৫ আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজউদ্দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। নির্বাচনের শুরুতে কিছু পোস্টার সাঁটালেও খুব একটা প্রচার-প্রচারণায় এমএম নিয়াজউদ্দিনকে দেখা যায়নি। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি দুই-এক দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে জানাবেন। এমএম নিয়াজউদ্দিন বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমি জাতীয় পার্টির হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। এবারও আমাকে গাজীপুরের দুটি আসন গাজীপুর-১ ও গাজীপুর-৫ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে এ মুহূর্তে আমার কাছে মনে হয়েছে সরে যাওয়া উচিত। নির্বাচনে আর থাকছি না। এটা বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণেই হচ্ছে না। নির্বাচনের উপযোগী কোনো মাঠ নেই। এছাড়া ব্যক্তিগত কারণও রয়েছে, তাই সরে যাচ্ছি। দুই-এক দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে সরে দাঁড়ানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিব। এমএম নিয়াজউদ্দিন ২০১৫ সালে স্বাস্থ্য সচিব হিসেবে অবসরে যান। পরে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
সুযোগ-সুবিধা এবং আর্থিক সহায়তার দেয়ার কথা বলে জাপাকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ। কিন্তু সহায়তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের মতো (আমাদের) শক্তি, সামর্থ্য ও টাকা নেই। বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি দল ও সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। গত ২০১৮ সালের মতো আরেকটি একপক্ষীয় নির্বাচন করতে যাচ্ছেন ইসি। এসব বিষয়ে অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির (জাপা) বেশ কয়েকজন প্রার্থীরা ভোটের মাঠ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে গাজীপুর-১ ও ৫ দুটি এবং বরিশাল দুই আসনের জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থীরা ভোটের মাঠ থেকে সরে দায়িছেন। আজ সোমবার এবং আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে আরো কয়েকজন প্রার্থী মাঠ থেকে সরে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার ও নির্বাচন ব্যবস্থার কড়া সমালোচক ছিলেন জি এম কাদের। অংশগ্রহণমূলক না হলে নির্বাচন বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ নেতারা জেলায় জেলায় প্রচার চালালেও জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রকাশ্য নীবর। আগামী ৭ জানুয়ারির বিএনপিবিহীন নির্বাচনে কাগজে-কলমে ক্ষমতাসীনদের আবারো প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি। তবে গত ১৫ বছর ধরে সংসদের বিরোধীদলের দায়িত্ব পালন করার কারণে সরকারি দল আওয়ামী লীগকে হারিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি (জাপা)। ২৬ আসনের বাইরে লাঙ্গলের অধিকাংশ ডামি প্রার্থী।নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখাতে তাদের মাঠে রাখা হয়েছে। অধিকাংশ আসনে প্রচার ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেই। ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে ছাড় পাওয়া ২৬ আসনের বাইরে মাত্র ৮-১০টিতে নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে লাঙ্গল। আরও কয়েকটিতে প্রচার চালাচ্ছে। বাকি দুই শতাধিক আসনে জাপার দৌড় প্রার্থী রাখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। রংপুর-৩ আসনে প্রার্থী হওয়া জি এম কাদের নিজ আসনের বাইরে রংপুর-১, রংপুর-৫, রংপুর-৬ এবং গাইবান্ধা-৪ আসনে পথসভা করেছেন। জাপার শীর্ষ নেতারা নিজের আসনের বাইরে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ভোটের প্রচারে নামেননি। ভোটের মাঠে অবস্থান ক্রমাগত দুর্বল হওয়ায় ছাড় না পাওয়া আসনের আট-দশটি বাদে সবগুলোতে লাঙ্গলের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে পারে। এ কারণে দলের কো- চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদসহ অন্তত ১১ প্রার্থী আসন ছাড় না পেয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। প্রার্থিতা বহাল থাকলেও তিনজন ভোট থেকে সরে গেছেন। কয়েকজন জাপার প্রাথী জানান, ভোটে নামিয়ে প্রতিশ্রুতি সহায়তা করছে না জাপা। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার তহবিল শীর্ষ নেতারা পেয়েছেন। জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম জহির বলেছেন, অনেক প্রার্থীই সহযোগিতা চেয়েছেন। এখনও কাউকে আর্থিক ও নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করা যায়নি। সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা রয়েছে।
##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জকিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু
সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন বহিষ্কার
হোক না সবার সুপারনিউমেরারি পদোন্নতি, কর্মক্ষেত্রে আসুক গতি
জামিনে এসে হত্যা মামলার সাক্ষীসহ ৫ জনকে কুপিয়েছে প্রধান আসামি
সীমান্তে ভারত উত্তেজনা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: ইসলামী আন্দোলন
কলম্বিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৬০
প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তারাই গ্রহণযোগ্য সাংবাদিক হবে
কাঁটাতার পেরিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে কুড়িগ্রামে ভারতীয় গৃহবধূ
জাতির সংকট উত্তরণে সর্বদা মানুষের আস্থা ও ভরসাস্থল জিয়া পরিবার : মীর হেলাল
স্বৈরাচার মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে বিএনপি সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে চায়: আমিনুল হক
গুলি করা পুলিশের শাস্তি নয়, চিকিৎসকের গ্রেফতার ফ্যাসিবাদের উদাহরণ - ডা. রফিকুল
ফেনীতে সিক্সার্স ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে ছাগলনাইয়া উপজেলা দল চ্যাম্পিয়ন
দৌলতপুর সরকারি প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
গোপালগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করণে জেলা প্রশাসকের ব্যতিক্রম আয়োজন
সৈয়দপুরে শহিদ জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালন
বিশ্বনাথের চাউলধনী হাওরে সীমানা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত
স্বভাবী চোরের শাস্তি ইসলামেই নির্ধারিত - পীর সাহেব চরমোনাই
‘সীমান্তে গন্ডগোল শুরু হয়েছে, জীবন বিপন্ন হলেও দেশের সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখবো’
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী: সরকারের নতুন পদক্ষেপে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ সম্ভাবনাময়
আলজেরিয়ায় কুরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ তাওহিদুলের দেশত্যাগ