বিএনপি-জামায়াতের সহস্রাধিক নেতা কর্মীর কারাদণ্ড
০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
‘নাশকতা’র মামলায় বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদল নেতা সাইফুল আলম নীরবসহ ৮ বিএনপি নেতাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলার ২টি ধারায় তাদের ৩ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
গতকাল রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এ রায় দেন। দণ্ডিত অন্য আসামিরা হলেন, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেট ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, আবদুল কাদের জুয়েল, শহিদুল ইসলাম, হারুন উর রশিদ, ওবাদুল হক নাসির ও শহিদুল ইসলাম হীরা।
দণ্ডবিধির ১৪৭ ধারায় প্রত্যেককে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো একমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ৪৩৫ ধারায় দেয়া হয়েছে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে একমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর ধানমন্ডি থানার সাতমসজিদ রোডে আসামিরা একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়। ওই ঘটনায় এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ফরাজী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর চার্জশিট দেন এসআই মো: আবু সাঈদ। বিচার চলাকালে মোট ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ৬ জন সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যে ৩ জনই পুলিশ সদস্য।
বিএনপি-জামায়াতের ১০৩৪ জন দণ্ডিত
২০২৩ সালের শেষ সাড়ে ৪ মাসে পুলিশ বাদী মামলায় বিএনপি-জামায়াতের অন্তত: ১ হাজার ৩৪ জন নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং অর্থ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বিএনপি নেতা-কর্মী রয়েছেন ১ হাজারের মতো। গতকাল বছরের শেষ দিনটিও কারাদণ্ড প্রদান থেকে বাদ যায় নি। এ তিন কারাদণ্ড দেয়া হয় বিএনপি-জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৮ জনকে। এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর পৃথক ৪ মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৯ নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। বিদায়ী বছরের শেষদিকটা দেশের বিচারিক আদালতগুলো ব্যস্ত ছিলো বিরোধী রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া পুরনো মামলার বিচার নিয়ে। বলাবাহুল্য, এসব মামলার মধ্যে বেশ কিছু ছিলো গায়েবী মামলা। ঘটনাই ঘটেনি। সেই ঘটনার বিবরণ দিয়ে দায়ের করা হয় মামলাগুলো। গায়েবি মামলায় কারাদণ্ড হয় একাধিক মৃত ব্যক্তির। দীর্ঘ দিন গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিও রেহাই পান নি সাজা থেকে।
বিগত সাড়ে চার মাসে ঢাকার বিভিন্ন আদালতে শতাধিক মামলায় ১ হাজার ৩৪ নেতা-কর্মীর শাস্তি হয়েছে। দণ্ডিতদের বেশিরভাগ বিএনপি এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। কিছু রয়েছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীও। দন্ডিতদের বেশ ক’জন নেতা-কর্মী একাধিক মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বিদায়ী বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শতাধিক মামলার রায় হয়েছে। দণ্ডিতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সাবেক এমপি এবং কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন। উল্লেখযোগ্যরা হলেন, বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক এমপি সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান, কুষ্টিয়া-২ আসনের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আহসান হাবিব ওরফে লিংকন, বিএনপির গ্রাম সরকারবিষয়ক সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ, বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাবিব-উন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম ওরফে রবি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, বিএনপি’র ঢাকা দক্ষিণের নেতা ইসহাক সরকার, জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।
পুলিশের হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের একটি মামলায় রায় ঘোষিত হয় গত ৭ ডিসেম্বর । এ রায়ে বিএনপি’র ৩৬ নেতা-কর্মীকে ৪ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডিত আসামিদের একজন হলেন মরহুম তানভীর আদিল খান বাবু এবং রাজধানীর ৭৩ নং ওয়ার্ড সাবেক বিএনপি নেতা মরহুম সোহরাওয়ার্দী চেয়ারম্যান। নজিরবিহীন এ ঘটনা বিচার বিভাগ এবং প্রসিকিউশনকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ফেলে।
কারাদণ্ডের হাত থেকে রেহাই মেলেনি বিএনপি মতাদর্শের সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবীগণও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং তার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমান ও আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ ৫ জনকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। গত ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর এ রায় দেন। দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা অনুযায়ী এসব মামলার চার্জশিট, বিচার এবং কারাদণ্ড হলের সরকার বলছে ভিন্ন কথা। আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মামলাজট কমাতেই সরকারপক্ষ থেকে পুরোনো মামলা নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখানে বিএনপি কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কোনো লক্ষ্যবস্তু নয়।
তবে বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলন দমন করতেই নির্বাচনের আগে তাদের নেতা-কর্মীদের পুরোনো মামলা নিষ্পত্তি করতে তৎপর সরকারপক্ষ। বিএনপি’র সক্রিয় নেতা-কর্মীদের রাজনীতি থেকে নিবৃত্ত করতেই এই একের পর এক কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীরা আদালতের কাছে ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জকিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু
সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন বহিষ্কার
হোক না সবার সুপারনিউমেরারি পদোন্নতি, কর্মক্ষেত্রে আসুক গতি
জামিনে এসে হত্যা মামলার সাক্ষীসহ ৫ জনকে কুপিয়েছে প্রধান আসামি
সীমান্তে ভারত উত্তেজনা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: ইসলামী আন্দোলন
কলম্বিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৬০
প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তারাই গ্রহণযোগ্য সাংবাদিক হবে
কাঁটাতার পেরিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে কুড়িগ্রামে ভারতীয় গৃহবধূ
জাতির সংকট উত্তরণে সর্বদা মানুষের আস্থা ও ভরসাস্থল জিয়া পরিবার : মীর হেলাল
স্বৈরাচার মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে বিএনপি সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে চায়: আমিনুল হক
গুলি করা পুলিশের শাস্তি নয়, চিকিৎসকের গ্রেফতার ফ্যাসিবাদের উদাহরণ - ডা. রফিকুল
ফেনীতে সিক্সার্স ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে ছাগলনাইয়া উপজেলা দল চ্যাম্পিয়ন
দৌলতপুর সরকারি প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
গোপালগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করণে জেলা প্রশাসকের ব্যতিক্রম আয়োজন
সৈয়দপুরে শহিদ জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালন
বিশ্বনাথের চাউলধনী হাওরে সীমানা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত
স্বভাবী চোরের শাস্তি ইসলামেই নির্ধারিত - পীর সাহেব চরমোনাই
‘সীমান্তে গন্ডগোল শুরু হয়েছে, জীবন বিপন্ন হলেও দেশের সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখবো’
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী: সরকারের নতুন পদক্ষেপে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ সম্ভাবনাময়
আলজেরিয়ায় কুরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ তাওহিদুলের দেশত্যাগ