ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

সরগরম শীতবস্ত্রের বাজার

Daily Inqilab চট্টগ্রাম ও রাজশাহী ব্যুরো

১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম

বাড়ছে শীতের কামড়। প্রচণ্ড শীতের সাথে কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া। কাবু সব বয়সের মানুষ। উষ্ণতা পেতে গরম কাপড়ের মার্কেটে ছুটছে মানুষ। শীতের প্রকোপ বাড়তেই সরগরম হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামে শীতবস্ত্রের কেনাকাটা। মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী জহুর হকার্স মার্কেট থেকে শুরু করে মার্কেট, বিপণিকেন্দ্র, অভিজাত শপিং মল থেকে ফুটপাত সর্বত্রই ক্রেতার ভিড়। ব্যবসায়ীরাও ক্রেতা আকর্ষণে হাল ফ্যাশনের সব গরম কাপড় সাজিয়ে রেখেছেন থরে থরে। হকার্স মার্কেটে পুরাতন কাপড়ের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি শীতবস্ত্রও মিলছে সর্বত্র।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার শীতের প্রকোপ বেশি হওয়ায় বেচাকেনাও বেশ জমে উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। সকালে এবং সন্ধ্যায় শীতের তীব্রতা অসহনীয় হয়ে পড়েছে। সামনের দিনগুলোতে শীত অব্যাহত থাকতে পারে। এ কারণে বেড়ে গেছে গরম কাপড়ের চাহিদা। শীত থেকে রক্ষা পেতে সবাই কিনছেন গরম কাপড়। পাইকারি এবং খুচরা বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে। ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে মার্কেট, বিপনী কেন্দ্রে।
শীতবস্ত্রের জন্য চট্টগ্রামের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে অতি পরিচিত জহুর হকার্স মার্কেটে এখন পা ফেলার জো নেই। ক্রেতার ভিড় লেগে আছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। বেচাকেনাও বেশ জমজমাট। শীত আসার আগেই এ মার্কেটে গরম কাপড়ের মজুদ গড়ে তোলেন ব্যবসায়ীরা। বিদেশ থেকে আসে পুরাতন কাপড়। দেশে তৈরি কাপড়ও বিক্রি হয় এ মার্কেটে। এ মার্কেট থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে গরম কাপড় কিনে নিয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার শীতের প্রকোপ বেশি হওয়ায় পাইকারি এবং খুচরা দুটোই বিক্রি হচ্ছে। শীতবস্ত্রের জন্য নির্ধারিত দোকানের পাশাপাশি হকার্স মার্কেটের প্রায় প্রতিটি দোকানে এখন গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে।
জহুর হকার্স মার্কেটে ৮০০ এর বেশি দোকান রয়েছে। সব দোকানেই এখন চলছে জমজমাট কেনাবেচা। সোয়েটার, জ্যাকেট, কোট, ব্লেজার, মাফলার, টুপি থেকে শুরু করে শাল, কম্বলও বিক্রি হচ্ছে এ মার্কেটে। সব বয়সী মানুষের পোশাক মিলছে এখানে। অন্যবারের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, মানভেদে ২০০ থেকে ৮০০ টাকায় সোয়েটার, জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে। শিশুদের পোশাক মিলছে ৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। হকার্স মার্কেটের আশপাশের ফুটপাতগুলোতেও জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বেচাকেনা।
নিউমার্কেট, রেয়াজুদ্দিন বাজার, তিনপোলের মাথা থেকে শুরু করে স্টেশন রোড এলাকায়ও বিক্রি হচ্ছে শীতবস্ত্র। নগরীর আগ্রাবাদ-বাদামতল, ইপিজেড, স্টিল মিল, জিইসি মোড়, চকবাজার এলাকার ফুটপাতেও শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। অভিজাত মার্কেট, বিপনীকেন্দ্রে পাশাপাশি রেয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেইনসহ বিভিন্ন পুরাতন মার্কেটেও মিলছে শীতবস্ত্র। উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন মার্কেট, বিপনী কেন্দ্র থেকে শীতবস্ত্র কিনছেন। নিম্নবিত্ত এবং হতদরিদ্ররাও ছুটছেন হকার্স মার্কেট ও ফুটপাতে।
ফুটপাতগুলোতে স্বল্পমূল্যে পুরাতন শীতবস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে। সোয়েটার, জ্যাকেটের পাশাপাশি কম্বলও বিক্রি হচ্ছে নগরীর ফুটপাতগুলোতে। শীতের প্রকোপ বাড়ায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শীতবস্ত্র বিলি-বণ্টন করছেন। এসব শীতবস্ত্র কেনা হচ্ছে মহানগরীর বিভিন্ন মার্কেট থেকে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যবারের তুলনায় এবার বেচাকেনা ভালো। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। বাজারে শীতবস্ত্রের সরবরাহও ভালো।
অন্যদিকে, রাজশাহীতে শীতের তীব্রতায় এরই মধ্যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এমন পরিস্থিতিতে সবথেকে কষ্টে দিন গুনছেন শ্রমিক, অটো রিকশাচালক, দিন মজুরসহ সমাজের স্বল্প আয়ের মানুষ। কনকনে ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে ছিন্নমূল এসব মানুষের একমাত্র এখন ভরসা ফুটপাতের শীতবস্ত্রের দোকান। গতকাল সোমবার সকাল থেকে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় ফুটপাতে বসা নতুন-পুরাতন শীত কাপড়ের দোকানগুলোতে উল্লেখ সংখ্যক মানুষের ভিড় চোখে পড়ে। শুধুমাত্র নিম্নআয়ের নয়, মধ্যবিত্ত ক্রেতারাও ঝুঁকছেন ফুটপাতে বসা এইসব দোকানে। বেশির ভাগ ক্রেতা কাপড় কিনতে ফুটপাতমুখী হওয়ায় শহরের প্রায় সব এলাকায় শীতবস্ত্রের বিক্রি বেড়েছে। রাজশাহী রেলস্টেশন, রেলগেট, নিউমার্কেট, গণকপাড়া, লক্ষীপুর মোড়, কোর্ট চত্বর, কোর্ট স্টেশন, নওদাপাড়া বাজারসহ বিপনী বিতানগুলোর সামনে হকাররা বিভিন্ন ধরনের শীতের কাপড় সাজিয়ে বসেছেন।
এইসব দোকানে বেশি পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে-ছোট বাচ্চা ও বয়ষ্কদের কাপড়। এছাড়াও সব বয়সের মানুষের জন্য সোয়েটার, মোটা কাপড়ের ফুলহাতা গেঞ্জি, হাতমোজা, মাথার টুপি, পায়ের মোজা, ও মাফলার কম্বলের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট এলাকার ফুটপাতে শীতবস্ত্র কিনতে এসেছিলেন সোহেল নামের একজন। তিনি বলেন, বড় মাকের্ট থেকে উন্নত গরম কাপড় কেনার মতো আর্থিক অবস্থা নেই। দিন আনি, দিন খাই। কিন্তু শীত তো সেটি বোঝে না। তাই ফুটপাতের দোকান থেকে ছেলে ও মেয়ের জন্য শীতের কাপড় কিনলাম। ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতবস্ত্রের দাম নাগালের মধ্যে থাকলে আমাদের জন্য ভালো।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা