চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে রাস্তায় মুসল্লিরা
২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০২ এএম
নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় মাদক, সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে রাস্তায় নেমেছেন স্থানীয়রা। গতকাল বাদ জুমা পাহাড়তলী থানাধীন ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের আবদুর পাড়া আদর্শ সমাজ ও শাপলা শাপলা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির ডাকে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় মুসল্লিরা। আশেপাশের কয়েকটি মসজিদের হাজারো মুসল্লি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে মাদক সন্ত্রাস বন্ধ ও এলাকা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এ-ব্লক বাস স্ট্যান্ড মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এলাকার বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য রাখেন। স্থানীয়রা জানান, এলাকায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় ইয়াবা, গাঁজা, মদ বিয়ার, হেরোইন। বিভিন্ন এলাকা থেকে বহিরাগতরা এসে এই মাদক কিনে নিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যেই। এসব দেখছে এলাকার শিশু-কিশোর-তরুণ-যুবকেরা। দিনের পর দিন এসব চলছে। অসংখ্যবার এই বিষয়ে থানাসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। কোনোভাবেই বন্ধ হয় না মাদকের এই প্রকাশ্য বেচাকেনা। ফলে এলাকার কিশোর-তরুণরা এমনকি শিশুরাও আসক্ত হচ্ছে মাদকে। জড়িত হচ্ছে মাদক বহন ও বিক্রিতে। এতে করে অসংখ্য পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক রীতিনীতি। শুধু তাই নয়, এলাকায় রাজনীতির নামে উঠতি কিশোর-তরুণদের জোর করে বিপথগামী করছে কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। শিশু ও কিশোরদের নিয়ে তারা কিশোর গ্যাং করে রাতে দিতে এলাকার অলিতে-গলিতে আড্ডায় মশগুল হচ্ছে। এলাকায় চুরি-ছিনতাই করানো হচ্ছে তাদের দিয়ে। এসব বিপথগামী তরুণ কিশোরেরা দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত হচ্ছে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। সমাবেশ থেকে মাদক-সন্ত্রাস-অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধ ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পরে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় বাসিন্দারা একটি গণমিছিল নিয়ে এলাকার বিভিন্ন অলি-গলি প্রদক্ষিণ করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর পাড়া আদর্শ সমাজ এবং শাপলা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সদস্য, সচেতন নাগরিকসহ সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ।
স্থানীয় আবদুরপাড়া সমাজের মুরুব্বি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসলাম হোসেন সওদাগর বলেন, মাদক বিক্রেতা এবং কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ জনগণ। অসংখ্যবার জানানোর পরেও যারা এটা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে তাদের সহযোগিতা পাচ্ছি না। এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে তাই রাস্তায় নেমেছে।
আবদুর পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রতি শুক্রবার মসজিদের খুৎবায়, এলাকার মিটিংয়ে মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা কথা বলছি।
কিন্তু কিশোর গ্যাং এখন মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অত্যাচারে এবং এসব অপকর্মে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে চলতে পারছে না। উঠতি কিশোর-তরুণদের বাধ্য করে কিশোর গ্যাংয়ে যুক্ত হতে। রাজনৈতিক সংগঠনের নামেও এখানে কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কিছু হচ্ছে না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা মাদকাসক্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। বিপথে যাচ্ছে। তাই এলাকাবাসী আজ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে। পাহাড়তলী থানার কর্মকর্তারা আমাদের সমাজের সাথে বসবেন। উনাদেরও আমরা আমাদের এলাকার বিষয়গুলো বলবো। কিছুদিন আগে আকবরশাহ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধকান্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক চিকিৎসককে জীবন দিতে হয়েছে। আমরা চাই না এই ধরণের ঘটনা আর ঘটুক। যারাই এসবের সাথে জড়িত, তারা যত বড় প্রভাবশালীই হোক এদের আইনের আওতায় আনা ও যেভাবেই সম্ভব তাদের অপরাধ থেকে সরিয়ে আনতে প্রশাসনকেই মূখ্যভূমিকা রাখতে হবে।
দক্ষিণ কাট্টলীর স্পৃহা ব্লাড ডোনেশন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা মো. জমির আলম বলেন, এখানকার যুব সমাজ প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করছে না বলে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সবাই যদি সম্মিলিতভাবে এই প্রতিবাদের মনোভাব সব সময় রাখেন তাহলে অচিরেই মাদক সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাংয়ের কর্মকান্ড বন্ধ হবে।
মানববন্ধনে শাপলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও যুব সমাজ প্রতিনিধি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সমাজের সবাই একতাবদ্ধ থাকলে এসব অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা মুরুব্বিদের এবং এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের যদি নিরপেক্ষভাবে পাশে পাই, তাহলে আমরাই এসব বন্ধ করতে পারবো। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এলাকায় কারা মাদক ব্যবসা করছে, কিশোর গ্যাং করছে, কারা তাদের পৃষ্ঠপোষক, সহায়তাকারী- তাদের তালিকাভুক্ত করে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। মুসল্লী সরোয়ার জাহান মুকুল বলেন, আমরা পুলিশকে তথ্য দেই। কিন্তু অপরাধীরা তথ্যদাতার তথ্য জেনে যায়। এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়। কয়েকদিন আগে বাইরে থেকে কিশোরদের এনে আমাদের এলাকার এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে গেছে। এভাবেতো চলতে পারে না। ৯৯৯ নম্বরে কল করলেও অপরাধীরা কলদাতার তথ্য পেয়ে যায়। আকবরশাহ এলাকায় ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার কারণে সন্তান ও পিতার উপর হামলা হয়েছে। পিতা মারা গেছেক। অথচ চিহ্নিতরা, অভিযুক্তরা এখনো গ্রেফতার হয়নি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
অতিক্তি লোক ভিড় করায় মাওলানা মামুনুল হক মুক্তি পাননি
দুটি মার্কিন ডেস্ট্রয়ারসহ চার জাহাজে হামলা হুতিদের
দক্ষিণাঞ্চলীয় বাহিনীর সদর দফতরে হামলা রাশিয়ার
আমাকে উৎখাতের পর ক্ষমতায় কে?
ফজরের নামাযের দশটি ফযীলত-১
সম্রাট হুমায়ুন : উদারনীতির উদ্যান-১
উচ্চতাপ বজ্র-ঝড় কালবৈশাখী ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা এ মাসেই
অবশেষে গ্রেফতার সেই ভয়ঙ্কর প্রতারক মিল্টন সমাদ্দার
ধরা পড়েনি কিলিং মিশনের ১২ খুনি, অভিযোগ ভুক্তভোগীদের
ওসির শেল্টারেই চেয়ারম্যান তপনের নানা অপকর্ম
জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ আজ
৭ জানুয়ারির নির্বাচন ’৭৫ সালের পর দেশে অনুষ্ঠিত সুষ্ঠু নির্বাচন -ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশ ও ভারতের দুই সচিবের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
কাউকে ছাড় দেবে না বিএনপি
ওমরা পালনে সস্ত্রীক সউদী আরব গেছেন মির্জা ফখরুল
শনিবার মাধ্যমিকে রোববার থেকে প্রাথমিকে পাঠদান চলবে
এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি কমেছে ৪ কোটি ডলার
ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা কলম্বিয়ার
রাশিয়ার উপগ্রহ-বিরোধী পারমাণবিক অস্ত্র ভয়ঙ্কর হতে পারে : পেন্টাগন
শিক্ষা ক্যাম্পাসজুড়ে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ, চলছে গ্রেফতার-উচ্ছেদ