ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবীরা
২০ জুন ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২০ জুন ২০২৪, ১২:০৩ এএম

ঈদের ছুটি কাটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষেরা। গত বুধবার থেকে ধাপে ধাপে ঈদুল আজহার ছুটিতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছিলেন এই মানুষেরা। এখন ফেরার পালা। ছুটি ও কাজের ব্যস্ততার ওপর ভিত্তি করে ফিরছেন তারা। যাদের বাড়তি ছুটি নেই, কাজে যোগ দেওয়ার তাড়া, মঙ্গলবার থেকেই ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন তারা। মূলত গতকাল যাদের অফিস খোলা ছিল, তারা গতকালই পৌঁছেছেন ঢাকায়। আর যাদের অফিস আরও পরে খুলবে, তারা বুধবার ফিরে আসছেন। এভাবেই ধাপে ধাপে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে ফিরবেন কর্মজীবী মানুষ। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই কর্মব্যস্ত মানুষের উপস্থিতিতে চিরচেনা রূপে ফিরবে রাজধানী ঢাকা।
কেবল কর্মজীবী মানুষেরাই ঢাকায় ফিরছেন এমনটা না। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও ফিরছেন ঢাকায়। তাদেরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সময় হয়ে এসেছে।
গত মঙ্গলবার থেকেই ফিরতি ট্রেনে যাত্রা শুরু হয়েছে। এর আগে গত ১০ জুন সকাল ৮টা থেকে রেলওয়ের ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি করা হয়। চলে ১৪ জুন পর্যন্ত। ১০ জুন দেওয়া হয় ২০ জুনের টিকিট, ২১ জুনের আসন বিক্রি হয় ১১ জুন; ২২ জুনের আসন বিক্রি হয় ১২ জুন; ২৩ জুনের আসন বিক্রি হয় ১৩ জুন এবং ২৪ জুনের আসন বিক্রি হয় ১৪ জুন। এদিকে, টানা কয়েক দিনের ছুটি শেষে বুধবার খুলছে ব্যাংক-বীমা, অফিস-আদালত ও শেয়ারবাজার। যারা ঢাকার বাইরে ঈদ করতে গেছেন তাদের অনেকে দু-একদিন ছুটি নিয়েছেন। ফলে অফিস কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হতে এই সপ্তাহ লেগে যাবে। তখনই রাজধানী ফিরবে আগের রূপে।
গতকাল কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায় রাজধানীতে ফিরে আসা মানুষের চিত্র। সকাল থেকেই স্টেশনে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। একে একে স্টেশনে আসতে থাকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন। এ সময় কথা হয়, ফিরে আসা কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে। মূলত কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতেই তড়িঘড়ি করে ঢাকায় ফিরেছেন তারা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও ফিরছেন নিজেদের প্রয়োজনে।
আবদুল কাদের বনলতা এক্সপ্রেসে ঢাকা এসেছেন রাজশাহী থেকে। তিনি বলেন, স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। বৃহস্পতিবার থেকে আমার অফিস শুরু হবে, তাই ফিরে এসেছি। সময় মতো ট্রেন ছাড়া এবং সময় মতো পৌঁছানোর প্রশংসা করে তিনি বলেন, রাজশাহী থেকে ট্রেন ছাড়তে কোনও লেট করেনি। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। আমরা সময় মতোই ঢাকায় এসেছি। খুবই ভালো লেগেছে।
পঞ্চগড় থেকে ঢাকা ফিরেছেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আমার নিজের ব্যবসা। তাই দেরিতে ফিরলেও সমস্যা হতো না। কিন্তু আসতে হয়েছে বাচ্চাদের স্কুলের জন্য। ওদের স্কুল খুলে যাবে তাই চলে এসেছি। লম্বা জার্নি করলে বাচ্চারা টায়ার্ড হয়ে যায়, তাই আগেভাগেই চলে এসেছি। স্কুল খোলার আগে ওরা কিছুটা রেস্ট নিতে পরেবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আল আমিন। ঈদের ছুটিতে গিয়েছিলেন বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে। তিনি বলেন, আমার ভার্সিটি খুলবে রোববার, ছুটি আছে আরও তিন দিন। আজকে না আসলেও হতো। কিন্তু বন্ধের আগে বেশ কয়েকটা অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে দিয়েছে। তাই আগে চলে এসেছি সেগুলো কমপ্লিট করতে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম স্টেশন মাস্টার বলেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কমিউটার ও আন্তঃনগর মিলিয়ে মোট ১১টির মতো ট্রেন ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। এগুলোর মধ্যে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশিতা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস, পর্যটক এক্সপ্রেস, ঢাকা মেইল, নীলসাগর এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো এসেছে। একইসঙ্গে সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উদ্দেশে এখনও পর্যন্ত ২৪টি কমিউটার ও আন্তঃনগর ট্রেন ছেড়ে গেছে। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঈদ শেষে মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে। গতকালের চেয়ে আজকে ফিরে আসা যাত্রীর সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। আগামীকাল থেকে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
কেউ ছুটিতে যাচ্ছেন ঈদের পর, কেউবা ফিরছেন ছুটি কাটিয়ে। তবে সেই আসা-যাওয়ার চাপ কম রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে। সংশ্লিষ্টদের মতে, ফিরতি যাত্রীদের চাপ বাড়বে আরও একদিন পর। গতকাল বুধবার গাবতলী বাস টার্মিনাল ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তেমন যাত্রীর চাপ নেই ঢাকামুখী যানাবাহনে। কিছু সময় পর পর বিভিন্ন পরিবহন প্রতিষ্ঠানের বাস টার্মিনালে আসছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এসব বাসে যাত্রীর সংখ্যা অনেকটা কম।
গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, সকালেই অধিকাংশ মানুষ গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছেন। পরপর বাস টার্মিনাল এসে থামছে। এখান থেকেই কেউ কেউ সরাসরি কর্মস্থলে যোগ দিতে অন্য বাস খুঁজছেন। কেউ আবার পরিবার নিয়ে সিএনজিতে বাসায় ফিরছেন। বেলা ১০টার পর যাত্রী আসা কিছুটা কমে। তবে ধারাবাহিকভাবে ঢাকার বাহির থেকে বাস টার্মিনালে এসেছে। এদিকে ঈদে নানান কারণে ছুটি না পাওয়া এবং কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা মানুষজন গ্রামে ফিরছেন। সেই সংখ্যাও কম নয়। পরিচিত কোম্পানির বাসগুলো যাত্রী পূর্ণ করেই ঢাকা ছাড়ছে।
কথা হয় যশোর থেকে ঢাকায় ফেরা যাত্রী অলির সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের দুই দিন আগে বাড়িতে গিয়েছি। আজ ফিরলাম। ঈদ ভালো কেটেছে। যাতায়াতেও তেমন ভোগান্তি ছিল না।
চুয়াডাঙ্গাগামী যাত্রী দোকান কর্মী বলেন, ঈদে ব্যবসা ছিল। ঈদের দিন পর্যন্ত বেচাবিক্রি হয়েছে। তাই ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। একদিন রেস্ট নিয়ে যাচ্ছি।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার মাস্টার বলেন, আসার যাত্রী আছে। সকালে যেসব বাস আসছে, সেগুলো সিট খালি ছিলো না। ঢাকা থেকে এখন আমরা যেসব বাস ছাড়ছি, তার বেশির ভাগই সিট খালি অবস্থাতেই ছাড়ছি।
উত্তরবঙ্গমুখী শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের কাউন্টার মাস্টার জানান, বুধবার সকাল থেকে অনেক বাসই ঢাকায় পৌঁছেছে। এসব বাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী ছিলো। উত্তরের যাত্রী আছে। অনেক যাত্রী যাচ্ছে। তবে পুরো বাস ফিলাপ হচ্ছে না। আসার যাত্রীও আছে। যাওয়ার সময় চাপ পরে। কিন্তু আসার সময় মানুষ ধাপে ধাপে আসে। তাই আসার চাপটা ওইভাবে দেখা যায় না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

সঙ্গে থাকা বাচ্চা মেরে কুকুরটি কামড়ালো বৃদ্ধ, শিশুসহ ছয়জনকে

তাহাজ্জুদ নামাজের পর বেতের পড়তে গিয়ে তাহাজ্জুদ বেতের দু’টোই মিস হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে।

গুলিস্তানে মার্কেট দখল করতে গিয়ে গ্রেফতার

জামানত ছাড়াই ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা

ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘনিয়ে আসছে রাশিয়ার কুর্স্ক আক্রমণে ভরাডুবি কিয়েভের

ঢাকায় মার্কিন সিনেটর চার্লস পিটার্স

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের স্থায়িত্ব নির্ভর করে বিচার বিভাগের ওপর

ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ আজ?

ড. ইউনূস এর মতো সরকার প্রধান পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার :জামায়াত নেতা ড. ইকবাল

ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের কমিটি কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না

কৃষি জমির মাটি কেটে নেওয়ার অপরাধে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ টাকা জরিমানা

প্রেষনে বিমান বাহিনী থেকে লোকবল নিয়োগ বাতিল সহ ৪ দফা দাবীতে সিলেটে বেবিচক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিক্ষোভ

নিষিদ্ধ সময়ে মেঘনায় অবাধে মাছ শিকার, নিয়ন্ত্রণে কমলনগরের দুই নেতা!

ছাগলনাইয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু-পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন আহত, পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে চারটি মোটরসাইকেল

বিএনপিকে আবার মিডিয়া ট্রায়ালে ফেলা হচ্ছে: তারেক রহমান

পাঠদান পদ্ধতির আধুনিকায়ন জরুরি

পিলখানা ম্যাসাকার তদন্ত কমিশন : রিপোর্টের জন্য জনগণের রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা

অর্থনীতি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গতিশীল করতে হবে

শান্তিরক্ষীই যুদ্ধ

পূর্ণ শক্তি