ভারতকে সুবিধা দিলেও দেশের স্বার্থ আদায়ে ব্যর্থ শেখ হাসিনা : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
২৬ জুন ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ১২:০১ এএম
ভারতকে সকল প্রকার সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে ভারতের কাছে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ আদায় করতে শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা ম্যান্ডেটবিহীন অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির বর্হিপ্রকাশ। এই সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ভারতের উপর নির্ভরশীল করে ফেলেছে। অভিন্ন নদীর পানির হিৎসা,, সীমান্ত হত্যা, কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত রেল যোগাযোগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগের সমঝোতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষা সহযোগিতা, ঔষধ সংক্রান্ত সমঝোতা, বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ এবং ভারতের ইনস্পেস ও বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা, রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, সমুদ্র বিষয়ক গবেষণায় দুই দেশের সমঝোতাগুলোতে দেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে। চুক্তিগুলো বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় বিএনপি এই চুক্তিগুলো প্রত্যাখান করছে। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, গত ২৪ জুনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তি ও সমঝোতার বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি শেখ হাসিনা ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে ২টি চুক্তি, ৫টি নতুন সমঝোতা ও ৩টি চুক্তি নবায়নসহ ১০টি চুক্তি সমঝোতা স্বাক্ষর হওয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সম্পাদিত চুক্তিগুলোতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি সৃষ্টির হয়েছে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে। বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সব রকম ব্যবস্থা গ্রহন করবে। এ বিষয়ে আমরা ২৮ তারিখে সংবাদ সম্মেলন করব। এরপরে আমরা প্রয়োজন হলে যে কর্মসূচি নেবো সেটা আপনারা জানতে পারবেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হচ্ছে ভারতের কাছ থেকে দাবিগুলো আদায় করে নিয়ে আসতে। আপনি (সরকার) অভিন্ন নদীগুলোর পানির হিৎসা না পেয়ে চুক্তি সই করতে চাচ্ছেন। তিস্তার পানি আমাদের সবচেয়ে আগে দরকার। কিন্তু তিস্তা প্রকল্পের কাজ করতে চায় সরকার। কারণ প্রকল্প হলে অনেক টাকা। সেই টাকাই তাদের (সরকার) আসলে উদ্দেশ্যে।
তিনি বলেন, পরিস্কার করেই মমতা ব্যানার্জি বলে দিয়েছেন যে, পশ্চিম বাংলাকে বাদ দিয়ে এটা করা যাবে না, তারা দেবে না। এজন্য আপনাকে তো অবশ্যই চাপ প্রয়োগ করা দরকার। ফারাক্কা তো একদিনের হয়নি, যতটুকু পাওয়া গেছে সেটা আন্দোলন করেই পাওয়া গেছে। ফারাক্কার ইস্যুটি দেশে-বিদেশে-ইউনাইটেড ন্যাশনসে তোলা হয়েছিলো। এই সরকার এসব বিষয়ে (অভিন্ন নদী-তিস্তার পানির হিৎসা) জাতিসংঘে উত্থাপন করেনি। আমরা অভিন্ন নদীর পানি পাচ্ছি না। এটাতে সমগ্র দেশের মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে, তাদের জীবন-জীবিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তাদের সব কিছু নির্ভর করে এসব নদীর উপরে। কোটি কোটি মানুষ এই পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-তিস্তা এসব নদীর অববাহিকায় বাস করে। তাদের মাছ ধরা, পানি আনা সব কিছু নির্ভর করে এই নদীগুলোর ওপরে। সেখানে এসব নদীর হিৎসার ব্যাপারে কোনো কথাই নেই। এসব চুক্তিতে কোথাও এই হিস্যা নিয়ে একটা কথাও নেই। এটা থেকে বুঝা যায় আসলে এই সরকার দেশপ্রেমিক সরকার নয়, বাংলাদশ বিরোধী একটা সরকার।
এসব চুক্তিতে বাংলাদেশের নয়, ভারতের লাভ হবে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনার চিকেন নেকটাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে করিডোর তৈরি করা এটাতে বাংলাদেশের লাভ কি? কোথায় বলতে পারেন? সম্পূর্ণ লাভ তার (ভারতের)। আমাদের অবস্থানটা ভারতবিরোধী নয়, আমাদের প্রশ্ন আমাদের স্বার্থে। কানেকটিভি আমার স্বার্থে হতে হবে, আমার স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে হবে না। আমার নদীর পানির ন্যায্য হিসাকে বাদ দিয়ে কোনো চুক্তি হবে না।
সরকারের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি অভিন্ন নদীর পানির ব্যাপারে কোনো কিছুই করছেন না। সীমান্তে মানুষ হত্যা করছে, আপনি কিছুই বলছেন না। আপনি কি করেছেন? চুক্তি করছে। এই চুক্তিতে এসব বিষয়ে একটা কথা আছে? নেই। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, একজন দেশপ্রেমিক সে তার দেশের স্বার্থ আগে দেখতে হবে। উনি নিজেই বলেছেন যে, আমি সব কিছু আমি উজাড় করে দিয়ে দিয়েছি। উজাড় করে দিয়ে তো রেজাল্ট পেয়েছেন। এবারও উজাড় করে দিয়ে এসেছেনৃ আবার রেজাল্ট পাবেন।
বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন থেকে আমরা সরে যাইনি জানিয়ে দলটির অন্যতম এই নীতিনির্ধারক বলেন,
আমরা কোনো আন্দোলন থেকে সরে যাইনি। বিএনপি গত ১৫-১৬ বছরে যে আন্দোলন করেছে, এই আন্দোলনগুলোকে খাটো করে দেখার কোনো কারণ নেই। আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে কয়েক‘শ মানুষ প্রাণ দিয়েছে, এই আন্দোলনে ২২-২৩ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, ২৭ হাজার লোককে দুইদিনে গ্রেফতার করা হয়েছে, এই ভয়াবহ সরকারের যে নিবর্তনমূলক, নির্যাতনমূলক দমননীতি এটার কারণেই হয়তবা সাফল্য আসেনি এখন পর্যন্ত। কিন্তু কোনো দিনই ন্যায়ের পথে আন্দোলন ব্যর্থ হয় না, আমাদের এটাতেও অবশ্যই সাফল্য আসবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
যশোরে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শাহীন চাকলাদারের ৪ বছরের কারাদণ্ড
যশোরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩
ইট বৃষ্টির মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে দৌঁড়ালেন শ্যামনগরের ইউএনও রনী খাতুন
মানিকগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক গ্রেফতার
ঘরের মাঠে আর্সেনালের সহজ জয়
মাহমুদুল্লাহ-রিশাদ নৈপুণ্যে জিতে প্লে অফের বরিশালের এক পা
ভারতকে ছেড়ে কেন চীনের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে শ্রীলঙ্কা?
রাজনৈতিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে জাপান
প্রবাসী উপদেষ্টার আশ্বাসে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছুদের আন্দোলন স্থগিত
মহার্ঘভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা
পুরো বইমেলা মনিটরিং হবে ড্রোনে-ডিএমপি কমিশনার
যানবাহন চালক-পথচারীদের জন্য ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা
মাস্ক বা অন্য কেউ টিকটক কিনলে বিনিয়োগ করবে প্রিন্স তালালের কোম্পানি
মৃত বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পাওনাদার নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে?
খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকশিত হয় -ডিসি তৌফিকুর রহমান
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবি বিএসএফ বৈঠক
জিয়াউল হক মাইজভা-ারী ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান
অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে সিলেটজুড়ে স্বস্তি
৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি আবু রেজা নদভী
মাদারীপুরে জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবপাচারের আন্তঃসম্পর্কবিষয়ক কর্মশালা