খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল
২৬ জুন ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ১২:০১ এএম

হৃদপিণ্ডে ‘পেস মেকার’ বসার পরে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’। তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা এবং কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
গতকাল গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা জানান। তিনি বলেন, সকাল পর্যন্ত (গতকাল) আমি যতটুকু জানি, সোমবার তাকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে, তা করার কথা না। তিনি সিসিইউতে ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা এডজাস্ট করতে পারেন না যেকারণে সিসিইউ‘র ফ্যাসিলিটিজগুলো কেবিনে নিয়ে তাকে শিফট করা হয়েছে। সেখানে তিনি এখন পর্যন্ত স্ট্যাবেল আছেন ।
রোববার এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার জন্য প্রফেসর ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তার হৃদপি-ে ‘পেস মেকার’ বসানো হয়। খালেদা জিয়ার হৃদরোগের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। হার্টে তিনটি ব্লক থাকায় আগে একটা রিং পরানো হয়েছিল। পরে বিদেশি চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে পেস মেকার বসানো হয়। গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই প্রাথমিকভাবে গণতন্ত্র মুক্ত মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা কখনো ওই আন্দোলন থেকে সরে যাইনি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন গণতন্ত্রের প্রতীক। তাকে মুক্তি করার অর্থ প্রাথমিকভাবে গণতন্ত্র মুক্ত করার মতোই। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন থেকে সরে যাইনি, দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন থেকে আমরা সরে যাইনি। সি ইজ সিম্বল অব ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট, দুই আন্দোলনকে আলাদা করে দেখা যাবে না।
খালেদা জিয়ার প্রতি সরকার নির্মম আচরণ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই সরকারের মূল লক্ষ্যটা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়া। যদিও তার কোন সম্পৃক্ততা নেই, তারপরও তাকে একেবারে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে, তাকে সাজা দিয়ে এবং পরবর্তিকালে হাইকোর্টে আরও বেশি সাজার মেয়াদ বাড়িয়ে তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে। দুই বছর একটা পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে ছিলেন। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বার বার চেষ্টা করার পরেও সেখানে ভালো চিকিৎসক পাঠানো হয়নি। বহু চেষ্টার পর যখন তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো সেখানেও তিনি সুষ্ঠু চিকিৎসা পাননি। এরপর যখন তাকে বাসা (গুলসানের ফিরোজা) নিয়ে আসা হলো সেটাও আবার শর্ত সাপেক্ষে যে, তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না, দেশেই চিকিৎসা নিতে হবে। তখনই তার ধরা পড়লো লিভার সিরোসিস। এটা ছোটখাটো রোগ নয়, সিরোসিস, ইটস এ মেজর ডিজিজ। তখন ডাক্তাররা আমাদেরকে বলেছিলেন যে, লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন ছাড়া তার কোনো পথ নেই। এটা বাংলাদেশে সম্ভব নয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কম চেষ্টা করিনি। সরকারের এখানে কোনো কৃতিত্ব নেই। আমরা এখন পর্যন্ত যেটুকু করেছি সেটুকু হচ্ছে তার পরিবার এবং দলের চেষ্টাতেই সেটা হয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জন হোপকিংস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা ডাক্তারদের নিয়ে এসেছি। তারা যে প্রসিজিউর করেছেন সেই প্রসিজিউরে তিনি এখন পর্যন্ত টিকে আছেন। এটা কোনো সমাধান নয়। একমাত্র সমাধান হচ্ছে তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা। তার যে অনেকগুলো অসুখ আছে সেই অসুখের জন্য তাকে এমন চিকিৎসা সেন্টারে পাঠাতে হবে সেখানে তার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে অন্যান্য অসুখগুলো কনট্রোল করে, এটাই আমরা বার বার করে বলছি।
প্রধানমন্ত্রীর কারণে খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অভিজ্ঞতার থেকে বলছি, তাকে (খালেদা জিয়া) বাইরে পাঠানোর জন্য সব ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিলো প্রায় তার পরিবারেরা আবেদন করে। ফাইনালি যখন এটা (আবেদন) প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেছে প্রধানমন্ত্রী এটা রিজেক্ট করেছেন। শুধু এটা নয়, আমরা বিভিন্ন মিশনগুলোর কাছেও চিঠি দিয়েছিলাম। তার চেষ্টা করেছেন, তারা বার বার চেষ্টা করেছেন, ফেরত এসেছেন। তারা বলেছেন যে, সরি ভাই, উনি শুনলেন না। সি ইজ ভেরি ভিনডেক্টিভ, এই উচ্চারণটা করেছেন।
এর উদ্দেশ্যটা কি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, উদ্দেশ্যটা হচ্ছে, রাজনীতি থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রাখা। দেখেন ২০১৮ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে আগে তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হলো এবং তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হলো। তারপর থেকে তিনি যাতে কোনো মতেই মুক্তি না পায় তা চলছে এখন পর্যন্ত। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও সংবিধান বিরোধী। অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে দেশনেত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে।
বিএনপি মহাসচিব জানান, দলের স্থায়ী কমিটির সভায় অনতিবিলম্বে দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়, একই সঙ্গে তার মুক্তির আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

পি কে হালদারের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

রমজানে পুরান ঢাকায় ইফতারির পাশাপাশি ভিড় থাকে স্থাপত্য দর্শনেও

নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডিবি পরিচয়ে কোটি টাকা ছিনতাই

ধর্ষণ ও নির্যাতন রোধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করুন: টিআইবি

এসএসসি-দাখিল পরীক্ষায় বসছে ১৯ লাখ শিক্ষার্থী

স্ত্রী-সন্তানসহ পাপন ও হানিফের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মেঘনা ব্যাংকের নতুন চেয়ারপারসন উজমা চৌধুরী

হাসিনার আস্থাভাজন সচিব ও আমলাদের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ

জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত ৮৫০ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন

জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশের শঙ্কা উত্তরণে ফ্যাসিস্টদের অপতৎপরতা রুখতে হবে

কৃষি বিপ্লব ঘটিয়ে দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে বিএনপি -কৃষকদলের আলোচনা সভায় বক্তারা

বেপরোয়া গাড়ি চাপায় নারীর মৃত্যু

অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে প্রিন্স

কলাপাড়ায় স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

রাজবাড়ীতে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ

মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক জুনায়েদের নেতৃত্বে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল

দখলে-দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে কুমার নদ

ধামরাইয়ে বেপরোয়া মাটি ব্যবসায়ীরা

চিলমারী-রৌমারী রুটে ৯০ দিন ফেরি বন্ধ