আন্দোলনে ইন্ধন দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার

০৯ জুলাই ২০২৪, ১২:১৪ এএম | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪, ১২:১৪ এএম

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে বিএনপি ইন্ধন দিচ্ছে বলে ক্ষমতাসীনদের দেয়া অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সরকারি দলের মন্ত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কখনই এই ধরনের আন্দোলনে ইন্ধন দেয়ার প্রশ্নই উঠে না।
এই সব আন্দোলন তাদের নিজস্ব, তাদের প্রফেসাল জায়গা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা করছেন, ছাত্ররা করছে, ছাত্রীরা করছেন। আমরা এখানে ইন্ধন দিতে যাবো কেনো? প্রশ্নই উঠে না। এইসব আন্দোলনেকে বিএনপি ‘যৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তবে যেটা সত্যি সেটা সত্যি বলব, যেটা যৌক্তিক সেটা যৌক্তিক বলব, এটা আমরা সব সময় বলছি। চলমান দুই আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটাকে আমরা দুইভাবে দেখি। একটা হচ্ছে, দেশে বিপুল সমস্যা আছে সেটাকে ডায়ভার্ট করার জন্যে আন্দোলন তৈরি করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, কোটা বিরোধী ছাত্রদের এই দাবিকে আমরা সমর্থন করি কারণ এটা যৌক্তিক দাবি। এটাকে আমরা অযৌক্তিক বলার কোনো কারণ দেখি না। ৫০ বছর পরেও ৫৬ শতাংশ আপনি কোটা দিয়ে রাখবেন, এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এখানে যেটা হচ্ছে মেধার বিকাশ হচ্ছে না, মেধাবীদের এডমিনিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন জায়গাগুলোতে নিতে পারছেন না। একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।

শিক্ষকদের আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষকদের দাবি যৌক্তিক। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এর আগে এক রকম কথা বলেছেন, এখন করছেন আরেক রকম। আপনি বলেছেন যে, যারা পেনশন পায় তাদের কোনো দরকার নেই। যারা পেনশনের বাইরে তাদেরকে নিয়ে আসতে পারে, ঐচ্ছিক বিষয়কে এখন কম্পলসারি করে দিয়েছেন। কারণ হচ্ছে সরকারের আর্থিকখাতে যে দুরবস্থা, তাদের টাকা-পয়সা সব শেষ হয়ে গেছে। এখন তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা নিয়ে আসছে, বিভিন্ন অটোনোমাস বডি আছে এদের মধ্যে অনেকগুলো বডি আছে যাদের কাছে বহু সারপ্লাস টাকা ছিলো সেগুলো নিয়ে নিয়েছে। কোথাও কিছু বাকি রাখছে না, সব নিয়ে ফেলছে।

সরকার ঋণের ফাঁদে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা বাস্তব কথা। আমরা বার বার বলছি, এই সরকারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, সবাই দুর্নীতিবাজ। এমনকি আপনার যারা প্ল্যানিং করছে, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করছে, বাজেট তৈরি করছে সবক্ষেত্রে দেখবেন দুর্নীতির ব্যাপারটা প্রধান। এতো বেশি দুর্নীতি করেছে যে এখন ডেড ট্র্যাপে পড়ে যাচ্ছে আরকি, ঋণের যে ট্র্যাপ সেই ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে। সেই ফাঁদে পড়ে যাওয়ার কারণে এখন তারা চতুর্দিক থেকে একটা ঋণ নিয়ে আরেকটা ঋণ শোধ করা, আরেকটা ঋণ নিয়ে আরেকটা ঋণ শোধ করা, এভাবে চলছে। একটা ঋণ নিয়ে আরেক ঋণ শোখ করা এটা কারা করে? দেখবেন যারা সব জায়গাতে ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে, ঠিক মতো চালাতে পারছে না তাদেরকে কিন্তু এই কাজটা করতে হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার মারাত্মক ভুল তথ্য দিচ্ছে। রপ্তানি আয় ৬৪ বিলিয়ন বেশি দেখিয়েছে। ইট ইজ নট ট্রু। ওদের হিসাবেই এসব ভুল বেরুচ্ছে।
এদিকে দুপুরে গুলশানের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিবের সাথে সাক্ষাৎ করেন মহানগর উত্তরের বিএনপির আহ্বায়ক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নবগঠিত মহানগর কমিটি দেশনেত্রীর চলমান আন্দোলনসহ সব আন্দোলনে অত্যন্ত ভালো ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি। কারণ যে নেতৃত্বটা এসেছে আমি মনে করি একটি ঢাকা মহানগরীর বিএনপি জন্য যে ভালো নেতৃত্ব এসেছে। গত রোববার বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিনসহ বরিশাল, চট্টগ্রাম মহানগরের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেয়।###

বিভাগ : জাতীয়